ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৭ জুন ২০১৭

সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিন্ন সমৃদ্ধি ও দুই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদার হতে সুইডেনের বাণিজ্য ও শিল্প নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দুই দেশের সমৃদ্ধি ও মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বিনিয়োগ, ব্যবসা ও উদ্ভাবনী বাণিজ্যে আমাদের অংশীদার হতে সুইডেনের ব্যবসায়ী ও শিল্প নেতৃবৃন্দকে জোরালোভাবে উৎসাহিত করছি। প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার সকালে সুইডিস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের রোজেনব্যাড সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ-সুইডেন বিনিয়োগ ফোরামের বাণিজ্য সংলাপে ভাষণকালে এ আমন্ত্রণ জানান। খবর বাসসের। শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বিনিয়োগ নীতি খুবই উদার। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। আমরা ইইউ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, জাপান ও নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে এবং এ ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল জিটুজি ভিত্তিতে বিশেষভাবে চীন, ভারত ও জাপানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা অনেক হাইটেক পার্কও গড়ে তুলছি আমি আমাদের উন্নয়ন প্রয়াসে অংশীদার হতে সুইডেনের কোম্পানিগুলোকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জেনে আনন্দিত যে সুইডেন ও বাংলাদেশে অবস্থিত উভয় দেশের বাণিজ্য পরিষদের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি এ পদক্ষেপ দুই দেশের বাণিজ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় থেকে বাংলাদেশ সুইডেন সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী উলফ পার্মের নেতৃত্বাধীন সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংহতি প্রকাশ করে এবং ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ইউরোপের প্রথম সমর্থনকারী দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। সে সময় থেকে এ সম্পর্ক জোরদার থেকে জোরদার হয়ে বর্তমানে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে তা গভীর ও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, আজকের এ আয়োজন দুই দেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগের লক্ষ্যসমূহ অর্জনে আরও উৎসাহ যোগাবে। আমি বিশ্বাস করি দুই দেশের বিজনেস কমিউনিটি মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় ও তথ্য ব্যবহারে এ সুযোগ কাজে লাগাবে। শেখ হাসিনা বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ একটি সফল দেশ এবং এ দেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রফতানিকারী দেশ। তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যান্য খাতেরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৮৩টি দেশে রফতানি হয়। শেখ হাসিনা বলেন, মেধা শিল্প, আইসিটি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাতও দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। জাহাজ নির্মাণ শিল্পও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখন সমুদ্রগামী হালকা ও মাঝারি আকারের জাহাজ বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্যবিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মতো ক্ষেত্রগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে দ্রুত একটি অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছে। দেশে এখন প্রক্রিয়াভিত্তিক, বহুমুখিকরণ এবং মূল্য সংযোজন অর্থনীতি রূপান্তরিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনক্লুসিভ উন্নয়নের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাইস অথারহাউস কফারের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে আগামী তিন দশকের মধ্যে দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অগ্রসরমান তিনটি দেশের মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অথনীতি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তিনি বলেন, এ বছর আমরা ৭.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। জনসংখ্যার তুলনায় ভূমি কম হলেও বাংলাদেশ খাদ্যে স্বাবলম্বিতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বৃক্ষায়ন, মৎস্য চাষ, চাল এবং আলু উৎপাদনে বিশ্বে দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এই সফলতার মূল চাবিকাঠি হচ্ছেÑ সরকারী সহায়তায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কৃষিকার্যে অবদান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে দেশ ডিজিটালাইজড এবং মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই নি¤œমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সুইডেনের এন্টারপ্রাইজ ও ইনোভেশনমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন। এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলামও পৃথক বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম এবং শ্রম সচিব মাইকেল শিফার প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সুইডেনের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুইডেন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল, স্টকহোম এবং নরডিক চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সুইডেনের এন্টারপ্রাইজ ও ইনোভেশনমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দুই সুইডিশ কোম্পানির বিনিয়োগে আগ্রহ শীর্ষ স্থানীয় দুটি সুইডিশ কোম্পানি দি ইনভেস্টর এবি এবং এবিবি সুইডেন বাংলাদেশের বিদ্যুত ও তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। ইনভেস্টর প্রেসিডেন্ট জ্যাকব ওয়ালেনবার্গ, ইনভেস্টর ভাইস প্রেসিডেন্ট মারকাস ওয়ালেনবার্গ এবং এবিবি সুইডেনের জন সোডারস্টর্মের সঙ্গে শুক্রবার সকালে গ্র্যান্ড হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পৃথক সাক্ষাতকালে তারা এ আগ্রহের কথা জানান। সুইডেনে তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে শেখ হাসিনা স্টকহোমে রয়েছেন। খবর বাসস’র। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ইনভেস্টর এবি এবং এবিবি সুইডেন’র শীর্ষ নির্বাহীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশের সমৃদ্ধি এবং ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন। শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপারে তাদের অবহিত করেন। পরে এইচ এ্যান্ড এম’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও কার্ল যোহান পার্সন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেল কক্ষে সাক্ষাত করেন। বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য বায়ারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রকৃতপক্ষে এতে শ্রমিকরাই লাভবান হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক, সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার এবং বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত যোহান ফ্রিসেল, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ধ্বংসের রাজনীতি পরিহার করে নির্বাচনে অংশ নিন ॥ খালেদাকে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, হত্যা, লুটপাট ও দুর্নীতির রাজনীতি বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নিন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকুক। আমরা চাই তারা (বিএনপি) পুনরায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার মতো ভুল না করুক। বরং আমরা চাই তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং জনগণ বিচার করবে কারা ক্ষমতায় আসবে।’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর সিটি কনফারেন্স সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। খবর বাসস’র। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া দেশের কোন উন্নয়নে স্বস্তিবোধ করেন না এবং তিনি সর্বদা দেশের ধ্বংস দেখতে চান, উন্নয়ন নয়। বাংলাদেশ খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার এই মন্তব্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না বরং যারা এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, ও যারা মামলার মুখোমুখি হতে ভয় পায় এবং দেড় শ’ বার রিট দাখিল সত্ত্বেও উচ্চ আদালতে মামলায় হেরেছে তাদেরই দুর্দিন যাচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন ভাল থাকেন বিএনপি নেতা তখন স্বস্তি অনুভব করেন না। তারা স্বস্তি অনুভব করেন যখন তারা লোকদের হত্যা করেন এবং দেশের সম্পদ ধ্বংস করেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন হাওয়া ভবন খুলে জনসাধারণের অর্থ লুট করেছে এবং অবাধে দুর্নীতি করেছে। খালেদা জিয়া শুধু লুট ও কমিশন নেয়া জানে এবং তারা কেবল জানে কিভাবে সম্পদ ধ্বংস করতে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকা-ের সঙ্গে পুনরায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি নেতারা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানের সঙ্গে যুক্ত। ‘তারা আমার জীবন নাশের কয়েকবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমি রাজনীতি, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে এই ঘটনাগুলো ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রী ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বিএনপি হত্যা ছাড়া অন্য কিছুই বুঝে না এবং ধ্বংসের বাইরে কোন কিছুই জানে না। দেশবাসীর ওপর বিএনপি যে নির্যাতন চালিয়েছে, জনগণ তা ভুলবে না।’ শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের সামনে বিএনপির সন্ত্রাসী কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জনগণকে অবহিত করতে হবে যে বিএনপি একটি জঙ্গী ও সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। জনগণের সামনে তাদের চরিত্রকে উন্মোচিত করতে হবে।’ জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরোধী সরকারের প্রচার কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদীরা দেশের কোথাও স্থান পাবে না। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এই ধর্ম কখনও নিরীহ মানুষ হত্যার সমর্থন দেয় না। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে আমরা ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জঙ্গীবাদ বিরোধী অভিযানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অভিযানে যখন কোন জঙ্গী নিহত হয় বিএনপি চেয়ারপার্সন মায়া কান্না করেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের তহবিল বন্ধে ভূমিকা রাখা এবং গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ হারানোর পরে ফোন করে হিলারি ক্লিনটনকে প্ররোচিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে তিনবার হুমকি দেয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি তীব্র নিন্দা জানান শেখ হাসিনা। গত আট বছরে দেশের অসামান্য উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ এখন সাধারণ মানুষের হাতে হাতে এবং তারা দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত শাসনকালে বিদ্যুত উৎপাদন ছিল কম। তারা জনগণকে বিদ্যুতের খাম্বা দিয়েছে। বিদ্যুত দিতে পারেনি’। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত সাহায্য তহবিল লুট করেছে, তারা জনগণকে দরিদ্র রাখতে চেয়েছে এবং তারা দেশকে দুর্দশাগ্রস্ত ও মানুষের মৃতদেহ দেখিয়ে আরও বিদেশী সাহায্য নিয়ে আসতে চেয়েছে। তিনি বলেন, অপরদিকে আওয়ামী লীগের নীতি হলো দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো, অন্যের কাছ থেকে ভিক্ষা গ্রহণ নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা মর্যাদার সঙ্গে বাস করব।’ প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি সুইডিশ রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সফল হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। ঢাকার উদ্দেশে স্টকহোম ত্যাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইডেনে তিনদিনের সরকারী সফর শেষে শুক্রবার লন্ডন হয়ে ঢাকার উদ্দেশে স্টকহোম ত্যাগ করেছেন। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর একটা ৩০ মিনিটে লন্ডনের উদ্দেশে সুইডেনের অরল্যান্ড বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ গোলাম সারোয়ার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। খবর বাসসর।
×