ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১৭ জুন ২০১৭

ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় শুক্রবার সকাল থেকে স্থানীয় প্রশাসস ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ রাশেদুল ইসলাম ও পৌর মেয়র মোঃ রফিকুল আলম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেছেন। খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের টানা বর্ষণে জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিনের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জেলা শহরের শহরের রয়েছে, কলাবাগান, নেন্সিবাজার, শালবন, হরিনাথ পাড়া গ্যাপ, আঠার পরিবার এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে শুরু করে। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন জানান, বর্ষণ শুরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। যাতে জানমালে ক্ষতি না হয় তার জন্য লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। শালবনের জেলা প্রশাসনের একটি ডরমেটরিকে আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে আশ্রিতদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে দুপুরের খাবারসহ জনপ্রতি ৫শ’ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের লিডার জসিম উদ্দীন জানান, ঝুঁকি জেনেও অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। তারপরও বুঝিয়ে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৩০টি পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা আলী অভিযোগ করেন, কিছু অসাদু ব্যক্তি অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করার কারণে ঝুঁকি আরও বেড়েছে। এদিকে বর্তমানে জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ১ লক্ষাধিক পরিবার পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এ নিয়ে গত ১০ বছরে জেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৫০ জনের মতো। এর মধ্যে শুধু রামগড় উপজেলা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ২৮ জনের মতো। বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য আবু দাউদ অভিযোগ করেন, শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে পাহাড় কেটে বা পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ বেড়েই চললেও পাহাড় কেটে বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। পাহাড় কাটা বন্ধে ২০১১ সালে বেলা প্রশাসনকে নৌটিস দিলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে জেলা প্রশাসক মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপনের বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। খাগড়াছড়িতে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে পাহাড়ের পাদদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়িঘর। বাড়িঘর নির্মাণে মানা হচ্ছে না বিল্ডিং কোড। ফলে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। পাহাড় কাটা বন্ধ ও পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপন বন্ধের উদ্যোগ না নিলে নিয়ে যে কোন সময় প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
×