মহাসমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ছে প্লাস্টিকের দূষণ

পরিবেশে প্লাস্টিকের দূষণ ক্রমশই বাড়ছে। এই দূষণের বিষয়ে আমরা যখন কথা বলি তার বেশিরভাগই থাকে আমাদের চারপাশের দূষণের কথা। কিন্তু এই দূষণ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে সাগর মহাসাগরেও। এখনই থামানো না গেলে জলজ প্রাণী এমনকি পৃথিবীর মানুষের জন্যও এটি বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই দূষণের ওপরেই একটি ছবি তৈরি করেছে প্লাস্টিক ওশান্স নামের একটি দাতব্য সংস্থা। প্লাস্টিকের কবল থেকে মহাসমুদ্রকে বাঁচাতে প্রচারণা চালাচ্ছে এই সংস্থাটি। তাদের মতে, প্রত্যেক বছর বিশ্বে ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক তৈরি করা হয় যার অর্ধেকই হয় শুধু একবার ব্যবহারের জন্য। এবং প্রত্যেক বছর ৮০ লাখ প্লাস্টিক গিয়ে পড়ে সমুদ্রে। তবে মহাসমুদ্রে এই প্লাস্টিক দূষণকারী কয়েকটি দেশ এসব পরিষ্কার করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাতিসংঘের এক সম্মেলনে চীন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপিন্স বলেছে, মহাসমুদ্রকে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে মুক্ত রাখার ব্যাপারে তারা কাজ শুরু করবে। তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেগুলো যথেষ্ট নয়। তবে চারটি দেশের এই অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। একটি দ্বীপে ছড়িয়ে পড়া প্লাস্টিকের জঞ্জাল সমুদ্রে প্লাস্টিকের একটা বড় অংশ চলে যায় মাছ ও পাখির পেটে। এছাড়াও সাগরের তলদেশে আরও যেসব প্রাণী আছে সেগুলোর পেটেও পাওয়া গেছে প্লাস্টিকের টুকরো। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশিরভাগ প্লাস্টিকেরই উৎস সাগর থেকে বহু দূরে। বিশেষ করে যেসব দেশে ভোক্তা অর্থনীতি গড়ে উঠেছে কিন্তু তারা এখনও ঠিকমতো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে পারেনি। জার্মানির একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান- হেল্মহোলৎস সেন্টার বলছে, মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণের ৭৫ শতাংশই আসে মাত্র দশটি নদী দিয়ে এবং এসবের বেশিরভাগই মূলত এশিয়ার। বলা হচ্ছে, এসব নদীতে প্লাস্টিকের দূষণ যদি অর্ধেক কমানো যায়, তাহলে সারা বিশ্বে এই দূষণের হার ৩৭ শতাংশ কমানো সম্ভব। প্লাস্টিক আর প্লাস্টিক। ছড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুত থাইল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে প্রায় ৩০ লাখ টন বর্জ্য সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে যার ১২ শতাংশই ছিল প্লাস্টিক। এই সমস্যা সমাধানে তারা আগামী ২০ বছরের একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার স্কুলগুলোতে এ বিষয়ে চালু করা হয়েছে শিক্ষামূলক কর্মসূচী। আর ফিলিপিন্সে প্রণীত হচ্ছে নতুন নতুন আইন কানুন। সূত্র : বিবিসি