ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে ওঠায় গর্বিত সরফরাজ

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৬ জুন ২০১৭

ফাইনালে ওঠায় গর্বিত সরফরাজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কেউ পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে বড় ধরনের চিন্তাই করেনি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের অষ্টম স্থানে থেকে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে তারা। র‌্যাঙ্কিংয়ে পেছাতে পেছাতে একেবারে নাজুক এক পরিস্থিতিতে পড়ে গেছে তারা। সেই দলটির শুরুটাও হয়েছিল যেমনটা ভাবা হয়েছিল সেভাবেই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও অন্যতম ফেবারিট ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় পাকরা। কিন্তু সেই দলটিই টানা তিন ম্যাচ জিতে এখন সবার আগে ফাইনালে। একেবারেই সুযোগ নেই গ্রুপপর্ব থেকে ওঠার এমনটা যারা ভেবেছিলেন সেই পাকরা এখন শিরোপা লড়াইয়ের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। এ কারণে অধিনায়ক সরফরাজ দারুণ গর্ববোধ করছেন তার দল নিয়ে। কারণ প্রথমবারের মতো মর্যাদার এ টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠতে পেরেছে পাকরা। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অন্যতম ফেবারিট ছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বিশ্বের ক্রিকেট বিশ্লেষকরা নিশ্চিতভাবেই ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইংল্যান্ডের ঘরেই উঠে যাবে শিরোপা সেটা দেখতে পাচ্ছিলেন। সেই ইংলিশদের একেবারে নাস্তানাবুদ করেছে পাকরা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে কোন পাত্তাই দেয়নি সরফরাজের দল, জিতেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। কার্ডিফে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করেছে পাকরা। অথচ এই টুর্নামেন্টের একমাত্র অপরাজিত দল ছিল ইংলিশরাই। গ্রুপপর্বে তিনটা ম্যাচই দাপটের সঙ্গে জিতে সেমিতে উঠেছিল তারা। আর পাকিস্তান অনেক সংগ্রাম করেছে শেষ চারে ওঠার জন্য। শেষ গ্রুপ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩ উইকেটের ঘাম ঝরানো জয় পেয়ে কোনক্রমে উঠতে সক্ষম হয়। তাদের কাছে উজ্জীবিত ইংলিশদের এমন ভরাডুবি অভাবনীয় একটি ব্যাপার ছিল ক্রিকেট বিশ্বের কাছে। অথচ চিরশত্রু ভারতের কাছে ১০ দিন আগেই ১২৪ রানের শোচনীয় পরাজয় দিয়ে শুরু হয়েছিল তাদের যাত্রা। কিন্তু এর তিনদিন পরই বিশ্বের এক নম্বর ওয়ানডে দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে নিজেদের ফিরে পায় পাকিস্তান দল। এখন পাকদের দারুণ সুযোগ শিরোপা জেতার। দ্বিতীয় সেমিতে বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারত যদি ফাইনালে উঠতে পারে তাহলে মোক্ষম প্রতিশোধ নেয়ারও সুযোগ আছে। এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠে তাদের লক্ষ্য এখন শিরোপা জয়। নিজেদের এ সাফল্য নিয়ে সরফরাজ বলেন, ‘এটা খুবই গর্ব ও সুখের ব্যাপার আমার ও পুরো জাতির জন্য। এটা সেই দল যাদের কোন সুযোগ আছে বলেননি কেউ। এখানেও কেউ বলেনি, আমাদের দেশেরও কেউ বলেনি।’ ৩০ বছর বয়সী সরফরাজ ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলের জয় পাওয়াটাকে সহজ করেন। এছাড়া ওপেনার আজহার আলী ৭৬ ও তরুণ ব্যাটসম্যান ফখর জামান ৫৭ রান করেন। অথচ খোদ পাকিস্তান কোচ মিকি আর্থারও ভাবেননি পাকিস্তান ফাইনালে উঠবে। সেমির আগে তিনি ক্রিকেটারদের বলেছিলেন ইংল্যান্ডকে চাপের মুখে রাখতে পারলেই সেটা সেরা ম্যাচ হবে পাকদের জন্য। সরফরাজ বলেন, ‘কেউ ভাবেনি আমরা ফাইনালে উঠব। আমরা সেটা করতে পেরে এখন সত্যিই গর্ববোধ করছি। প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারের পর আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টকে কৃতিত্বটা দিতেই হবে। তারা আমাদের খুব ভালভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা সবাই সবাইকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছি। পরস্পরকে বলেছি যে আমাদের আরও দুটা ম্যাচ আছে, যদি খুব ভাল ক্রিকেট খেলতে পারি সবাই মিলে তাহলে অবশ্যই ভাল কিছু ধরা দেবে।’
×