ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাল খেলার প্রত্যয় নিয়ে জাপান যাচ্ছে কৃষ্ণারা

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১৬ জুন ২০১৭

ভাল খেলার প্রত্যয় নিয়ে জাপান যাচ্ছে কৃষ্ণারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী ১৮-২৪ জুন পর্যন্ত জাপানের ওসাকায় জে-গ্রিন সাকাই ন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ এবং কিছু প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ মহিলা জাতীয় ফুটবল দল। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ দল শুক্রবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমানযোগে জাপানের ওসাকার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে। সেখানে কৃষ্ণাবাহিনী খেলবে ৫টি ম্যাচ। আগামী সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব। এ আসরের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ অ-১৬ মহিলা দল আগে কিছুদিন আগেই জাপান ও সিঙ্গাপুর গিয়ে অনুশীলন করেছে এবং প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে এসেছে। থাইল্যান্ডের অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার আগে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা আরও তিনটি দেশে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ১৭ জুন জাপান যাবে কৃষ্ণাবাহিনী। জাপানের পর বাংলাদেশের মেয়েরা এরপর যাবে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনামে। আপাতত জাপানের সফর চূড়ান্ত হলেও অন্য দুইদেশের সিডিউল হয়নি। ফলে জাপান সফর করে মেয়েরা ফিরে আসবে। এরপর তাদের পাঠানো হবে দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং ভিয়েতনামে। ভিয়েতনাম থেকেই মেয়েরা ঢাকায় না ফিরে ওখান থেকেই সরাসরি থাইল্যান্ড চলে যাবে এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব খেলতে। বর্তমানে ক্যাম্পে আছে ২৮ ফুটবলার। তবে জাপানে সবাইকে পাঠাচ্ছে না বাফুফে। ২০ জন খেলোয়াড় যাবে (কোচ ও অফিসিয়ালসহ)। যদি সফরে গিয়ে কোন ফুটবলার ইনজুরিতে পড়েন তাহলে বাকি আটজন থেকে সেই চোটগ্রস্ত ফুটবলারের অভাব পূরণ করা হবে। দলের নতুন মুখ গোলরক্ষক রুমকি। সিরাজগঞ্জের এ মেয়েটি উঠে এসেছে ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম থেকে। দলের সঙ্গে মহিলা কোচ হিসেবে যাচ্ছেন সাবিনা খাতুন। জাতীয় সিনিয়র মহিলা ফুটবল দলের এই ফরোয়ার্ড-অধিনায়ক এই ভূমিকায় কেন? বাফুফের ব্যাখ্যাÑ সাবিনা সিনিয়র খেলোয়াড়। অ-১৬ দলে খেলতে পারবে না। তাছাড়া আগে থেকেই কোচিং কোর্স করেছে এবং এএফসির নিয়ম অনুযায়ী মহিলা দলে একজন মহিলা কোচ রাখা বাধ্যতামূলক। সে কারণেই সাবিনার ওখানে কোচ হিসেবে যাওয়া। যদিও এই পদে আগে দায়িত্বরত ছিলেন অনন্যা। তিনি সন্তানের মা হওয়াতে আপাতত ছুটিতে আছেন। ফলে ওই ফাঁকা পদেই সাবিনাকে অস্থায়ীভাবে নেয়া হচ্ছে। জাপান যাওয়ার আগে বাংলাদেশ মহিলা দল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাফুফে মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, মহিলা দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু, অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী সরকার, সহ-অধিনায়ক মারিয়া মান্দা, বাফুফের টেকনিক্যাল এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি এবং মহিলা ফুটবল কমিটির সদস্য শাকিল মাহমুদ চৌধুরী। কোচ ছোটন বলেন, ‘এএফসি অ-১৬ বাছাইপর্বে কোয়ালিফাই করার পরই আমরা জানতে পারি কারা আমাদের প্রতিপক্ষ। তখনই বাফুফে সভাপতিকে বলেছিলাম মেয়েদের উন্নত প্রশিক্ষণ এবং প্রচুর ম্যাচ খেলার ব্যাপারে। সেই ব্যবস্থা তিনি করেছেন। মেয়েরা অনেকদিন ধরেই কঠোর পরিশ্রম করছে। তারা প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। তারা নিজেদের সেরাটাই দেয়ার চেষ্টা করছে। চূড়ান্ত পর্বের খেলা শুরু হতে এখনও মাস তিনেক বাকি। জাপানে আমরা আগেও গিয়ে খেলে এসেছি। ওখানে গিয়ে আমরা প্রশিক্ষণ এবং ম্যাচ খেলার পাশাপাশি এডুকেশন ক্লাসও করব। যা দলের ফুটবলারদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। যেসব সুযোগ-সুবিধা পাব তা সবাই মিলে কাজে লাগাতে চেষ্টা করব।’ দলের অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণীর জন্মদিন ছিল বুধবার। সংবাদ সম্মেলনে তার ভাষ্য, ‘আমাদের অনুশীলন ভাল হচ্ছে। আশাকরি ওখানে গিয়ে ভাল খেলব। স্যাররা আমাদের যেভাবে শেখাচ্ছেন তা কাজে লাগাতে চাই। আগেও জাপানে গিয়ে খেলেছি। তখন আমরা যেসব ভুল করেছিলাম, আশাকরি এবার সেগুলো হবে না। সর্বোপরি থাইল্যান্ডে গিয়ে এর সুফল পাব বলে আশা করি।’ স্মলি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে আমাদের অগ্নিপরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার তার জন্যই জাপান ও অন্যান্য দেশে যাচ্ছে মেয়েরা। আমার দৃষ্টিতে মেয়েরা প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে।’ কিরণ বলেন, ‘কয়েকমাস আগে মেয়েরা জাপান, চায়না ও সিঙ্গাপুরে গিয়ে খেলে এসেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়েরা আরও তিনটি দেশে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এএফসির মূলপর্বে আমাদের প্রতিপক্ষ সাত দলই অনেক শক্তিশালী। তাদের সঙ্গে টক্কর দেয়ার জন্য আমাদের ভাল প্রস্তুতি দরকার। তারই ধারাবাহিকায় মেয়েদের আবারও জাপান পাঠানো হচ্ছে। এরপর তারা দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনামেও যাবে। থাইল্যান্ডের আবহাওয়া ভিয়েতনামের মতোই। এজন্য আমার পরিকল্পনা আছে মেয়েদের ভিয়েতনাম থেকেই থাইল্যান্ডে পাঠিয়ে দেয়ার। মোটকথা চূড়ান্ত পর্বের আগে আমরা মেয়েদের ফিজিক্যালি, টেকনিক্যালি এবং ট্যাকটিক্যালি ভালভাবে তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, এর আগে ছোটনের শিষ্যারা জাপানে গিয়ে ৭টি (৪ জয়, ২ ড্র, ১ হার), সিঙ্গাপুরে গিয়ে ২টি (২ হার) এবং চায়না গিয়ে ৫ ম্যাচ (৩ জয়, ১ ড্র, ১ হার) ম্যাচ খেলে এসেছিল।
×