ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেনফেল অগ্নিকাকা-ের কারণ এখনও জানা যায়নি

বিপুল অর্থব্যয়ে টাওয়ারটি সংস্কার করা হয়েছিল

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৬ জুন ২০১৭

বিপুল অর্থব্যয়ে টাওয়ারটি সংস্কার করা হয়েছিল

যখন গ্রেনফেল টাওয়ারের নিদারুণ ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন জানা গেছে ভবনটি সম্প্রতি সংস্কার ও মেরামত করা হয়েছে। নতুন একটি উষ্ণায়ন ব্যবস্থা (হিটিং সিস্টেম) স্থাপনের সময় ওই জায়গাটি মেরামতে শুধু গতবছর ৮৭ লাখ পাউন্ড ব্যয় করা হয়েছিল। টাওয়ারের নিচের দিকের বেশকিছু ঘর মেরামত করার পাশাপাশি ভবনের বাইরে আস্তরণ বসানো হয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীদের একটি সংগঠন জানায়, গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষভাবে অতিরিক্ত আবর্জনা, জরুরী প্রবেশের অভাব ও বৈদ্যুতিক সংযোগের ত্রুটিসহ নানা সমস্যা কর্তৃপক্ষ আমলেই নেয়নি। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইনের। দেখা যাচ্ছে, ভবনে এলুমিনিয়ামের নতুন আস্তরণ লাগানো হয়েছে। তাপবাহী এই বস্তু কখনও অগ্নিকা-ের বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করবে না। ইউরোপসহ পৃথিবীজুড়ে ভবনগুলোতে এখন এরকম আস্তরণ ব্যাপকভাবে বসানো হচ্ছে। তাপ, শব্দ ও বিদ্যুত প্রবেশ নিবারণ করতেই এলুমিনিয়ামের মতো বস্তু দিয়ে ভবনের বাইরের আস্তরণ দেয়া হয়। দুবাইয়ের ভবনগুলোতে কয়েকদিন পর পর অগ্নিকা-ের ঘটায় কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে। ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলের রুবা শহরে একটি আবাসিক এলাকায় মার্মোজ টাওয়ারও এভাবে এলুমিনিয়ামের আস্তরণ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। তখন সেখানের অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ মেরামতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু তাদের এ উদ্বেগের বিষয়টি কোথাও স্বীকৃতি পায়নি। কিছুদিন পরই ভবনটিতে আগুন লেগে তা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। লন্ডনের গ্রেনফিল টাওয়ারে আমরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখলাম। গ্রেনফিলের কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানিয়েছে, অগ্নিকা-ের কারণ ও কোন বস্তু অগ্নিকা- ঘটাতে সহায়তা করছে কিনা; তা আমাদের পক্ষে এখনও জানা সম্ভব হয়নি। এই বিয়োগান্তক ঘটনার কারণ নির্ণয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহায়তা দেব। স্থানীয় কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেন, আমরা অগ্নিকা-ের কারণ সম্পর্কে বেশকিছু তত্ত্ব শুনেছি। এখন সবগুলোর ওপর তদন্ত করা হচ্ছে। যে নির্মাণ কোম্পানি গ্রেনফিল টাওয়ারের সংস্কার কাজ করেছে, তারা জানিয়েছে, আমরা তদন্ত কাজে পুরোপুরি সহায়তা দিয়ে যাব। ভবনের নিয়ন্ত্রণ, অগ্নিনির্বাপণ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা মান সংক্রান্ত সব তথ্যই সরবরাহ করা হবে। এদিকে লন্ডনের মতো কয়েক হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু গেল দুই বছর ধরে এসব ভবনের সংস্কারে কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। ২০১৪ সালে ল্যাকরোসি টাওয়ারে অগ্নিকা-ের জন্য দায়ী করা হয়, চীন থেকে আমদানি করে আনা অবৈধ ও নিম্নমানের আস্তরণ উপাদানকে। দেশটির সিনেটর নিক জেনোফোন বলেন, লন্ডনের ঘটনায় ১২জন নিহতের পর অস্ট্রেলিয়ার উচুঁতলার ভবনগুলোর সংস্কারে ব্যবহৃত আস্তরণ পরীক্ষা ও পরিদর্শন করা হবে।
×