ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাপানে বিতর্কিত সন্ত্রাস দমন আইন পাস

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৬ জুন ২০১৭

জাপানে বিতর্কিত সন্ত্রাস দমন আইন পাস

জাপানের পার্লামেন্টে বৃহস্পতিবার একটি বিতর্কিত সন্ত্রাসবিরোধী আইন পাস হয়েছে। এ আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সমালোচকরা সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, আইনটির কারণে নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকার পদদলিত হবে এবং পুলিশের ব্যাপক নজরদারির সূচনা হবে। খবর এএফপির। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে নিদ্রালু সদস্যদের রাতভর বিতর্ক এবং বিলটি আটকাতে জাপানের দুর্বল বিরোধী দলের অসফল উদ্যোগের পর খুব ভোরে এ অশুভ পরিকল্পিত বিলটি পাস হয়। এরপরই হাজার হাজার লোক পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে। বিলটিতে গুরুতর অপরাধ পরিকল্পনা অপরাধ বা অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকার আইনটির পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, জাপানের রাজধানীতে ২০২০ সালে অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে সন্ত্রাস প্রতিরোধ জরুরী। কিন্তু মানবাধিকার গ্রুপগুলো, জাপানের জাতীয় বার সমিতি ও অনেক বিজ্ঞজন বিলটির বিরোধিতা করে বলেছেন, বিলটি এতটা বিস্তৃত যে, এটি নিরপরাধ নাগরিকদের টেলিফোনে আড়িপাতার অনুমতিকে অপব্যবহার করা হতে পারে এবং শাসনতন্ত্রে স্বীকৃত নাগরিকদের ব্যক্তি জীবন ও বাক স্বাধীনতার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্যের নজরদারি এ্যাডয়ার্ড স্নোডেন ও একান্ত গোপন অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক জোসেফ ক্যানাটেসিÑ দুজনেই আইনটির মালোচনা করেছেন। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, জনগণ এ বিষয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিলটি পাসে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মন্ত্রিপরিষদের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাব অতিক্রম করেছে। টোকিও জোর দিয়ে বলছে, বিলটি আন্তঃদেশীয় সংঘটিত অপরাধ বিরোধী জাতিসংঘের চুক্তি বাস্তবায়নের একটি পূর্বশর্ত। চুক্তিতে জাপান স্বাক্ষর করেছে ২০০০ সালে। আইনটিতে পরিকল্পিত গুরুতর অপরাধের জন্য ৫ বছর মেয়াদের কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার পর আবে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জনগণের জীবন রক্ষায় যথাযথ ও ফলপ্রসূভাবে আইনটি সমুন্নত রাখব। তিনি বলেন, সন্ত্রাস রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় প্রত্যাশা রাখি আমরা। বিলটি কয়েক বছরে কয়েকবার সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমান বিলে অপরাধ সংখ্যা ২৭০-য়ে নামিয়ে আনা হয়েছে এবং সন্ত্রাসী ও অপরাধ সংগঠনের সংজ্ঞা সীমিত করা হয়েছে। আইনটির আগের ভার্সনে ৬শ’ বেশি অপরাধ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছিল যেসব অপরাধ সন্ত্রাস ও ক্রাইম সিন্ডিকেট-সংশ্লিষ্ট নয়। তারপরও সমালোচকদের যুক্তি, বর্তমান আইনটি পুলিশ ও তদন্তকারীদের অত্যন্ত বেশি স্বেচ্ছাচারী করে তুলবে। তারা সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, টেলিফোনে আড়ি পেতে ও অনলাইন সংলাপে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হতে পারে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল জাপানিজ কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান কাজু শী বলেন, এ আইন শাসনতন্ত্রের মারাত্মক লঙ্ঘন।
×