ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুকের বলি সন্তান

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৫ জুন ২০১৭

যৌতুকের বলি সন্তান

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ১৪ জুন ॥ কাঞ্চন পৌরসভার নরাবো এলাকায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে ও পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া-ঝাটিকে কেন্দ্র করে বাবার বিরুদ্ধে আড়াই মাস বয়সের শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে ঘটে এ ঘটনা। নিহত শিশু জুনায়েত হোসেন নরাবো এলাকার আবু বক্করের ছেলে। এ ঘটনায় আবু বক্কর ও দাদি মনোয়ারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নরাবো এলাকার পুকুরে জুনায়েতের মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। শিশু জুনায়েতের গলায় জখম দেখা গেছে। নিহত শিশুর মা মৌসুমী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, যৌতুকের টাকা না পেয়ে ও পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদকে কেন্দ্র করে তার স্বামী আবু বক্কর ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম মিলে জুনায়েতকে শ^াসরোধের পর পানিতে ফেলে হত্যা করে। মৌসুমী বেগম জানান, তিনি নরাবো এলাকার বাউল শিল্পী আর হকের মেয়ে। একই এলাকার আবু বক্করের সঙ্গে তার প্রেম ছিল। প্রেমের সূত্র ধরেই ২ বছর আগে আবু বক্করের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম দিকে ভালই চলছিল তার সংসার। কিন্তু এতে বাদসাধে শাশুড়ি। শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম তাকে পছন্দ করতেন না। তাই বিয়ের কিছু দিন গড়াতে না গড়াতেই স্বামী আবু বক্কর নানা অজুহাতে মৌসুমী বেগমকে মারধর করত। এ নিয়ে বেশ কয়েকবারই অভিমান করে তাকে বাপের বাড়ি চলে আসতে হয়। বিয়ের দুই বছরের মাথায় আবু বক্কর ও মৌসুমীর ঘরে জুনায়েতের জন্ম হয়। জুনায়েতের জন্মের পর থেকেই শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম ও স্বামী আবু বক্কর যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা এনে দিতে না পারলেই নির্যাতন করা হতো। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়রা বেশ কয়েক বার সামাজিকভাবে ঝগড়া-বিবাদ মিটিয়ে দেয়। ১৩ জুন মঙ্গলবার রাতেও আবু বক্করসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মৌসুমীকে নির্যাতন করে। রাত ৯টার দিকে জুনায়েত ও মৌসুমী ঘরে শুয়েছিলেন, পাশের রুমেই জুনায়েতের বাবা আবু বক্কর ও দাদি মনোয়ারা বেগমও ঘুমিয়েছিলেন। রাতে মৌসুমী তার বিছানায় জুনায়েতকে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে জুনায়েতকে খুঁজতে থাকে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জুনায়েতকে বাড়ির পাশের পুকুরে ভাসতে দেখা যায়।
×