ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইরাকের শরণার্থী শিবিরে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ আট শ’ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৫ জুন ২০১৭

ইরাকের শরণার্থী শিবিরে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ আট শ’ শিশুর মৃত্যু

ইরাকের মসুল শহরের কাছে এক শরণার্থী শিবিরে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় শত শত লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। লোকজন জানান, ইফতারির পর তারা বমি করতে থাকে এবং অনেকের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। খবর বিবিসির। মসুল ও ইরবিল শহরের মধ্যে অবস্থিত দ্য হাসানশাম ইউটু শরণার্থী শিবিরে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে ইরাকী সেনাদের চলামান লড়াইয়ে বাস্তুচ্যুত লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। শহরটির পশ্চিমে আইএস জঙ্গীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় প্রায় আট শ’ লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যাদের মধ্যে দু’শ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ এক নারী সংস্থাটিকে জানান, খাবার খাওয়ার পর আমরা পেটে ব্যাথা অনুভব করতে থাকি। আমরা নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। তারপর আমরা দেখি আমাদের প্রতিবেশীরাও একই সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম রুদাও এক প্রতিবেদনে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় এক শিশু মারা যাওয়ার কথা জানিয়েছে। শিশুটি মারাত্মক অসুস্থ, অচেতন ও তার হৃদস্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না। ইউএনএইচসিআর শিবিরে সংঘটিত ঘটনাটিকে একটি চরম দুর্ভোগ বলে জানিয়েছে। বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর আরও জানায়, অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একযোগে কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। যাতে অসুস্থ হয়ে পড়া লোকদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ও গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা যায়। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম রুদা আরও জানায়, সরবরাহকৃত খাবারের মধ্যে ছিল শিম, মুরগি ও দই। যা ইরবিলের এক রেস্তরাঁয় তৈরি করা হয়েছিল এবং কাতারি এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খাবারগুলো শরণার্থী শিবিরে সরবরাহ করেছিল। স্থানীয় এলাকার তিনটি হাসপাতালে অসুস্থদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রেস্তরাঁর মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মসুল এলাকায় ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠিত ১৩টি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে একটি। যেখানে লড়াই অব্যাহত থাকায় শহরটি ও পার্শবর্তী এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে সেখানে ছয় হাজার ২৩৫ জন লোক বসবাস করছে। গত অক্টোবর থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর সমর্থনে ইরাকী বাহিনী মসুল পুনরুদ্ধারে আইএসের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে আসছে। তারা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পশ্চিমাঞ্চলে হামলা জোরদার করেছে। প্রাচীন নগরটিতে ও উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় এক হাজারের বেশি জঙ্গী অবরুদ্ধ হয়ে আছে। যাদের সঙ্গে এক লাখ বেসামরিক লোক আটকা পড়েছে। মসুল এলাকাটিতে আট লাখেরও বেশি লোক বসবাস করত। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লোকজন এলাকাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করে। অক্টোবর পর্যন্ত শহরটির পশ্চিমাঞ্চলে ছয় লাখ ৩৩ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
×