ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট যত বড়ই হোক বাস্তবায়ন না হলে জনগণ আস্থা হারাবে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৫ জুন ২০১৭

বাজেট যত বড়ই হোক বাস্তবায়ন না হলে জনগণ আস্থা হারাবে

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বাজেটে যেসব অসঙ্গতি কিংবা সরাসরি জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে সেসব শুল্ক বা কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যমান ত্রুটি-বিচ্যুতিও পরিমার্জন করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, তারুণ্যের স্ফুলিংয়ের জন্য এবারের বাজেটে তরুণদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে বাজেট যত বড়ই হোক তা যদি বাস্তবায়ন করা না যায় তাহলে জনগণ আস্থা হারাবে। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সরকারী দলের বিএম মোজাম্মেল হক, শফিকুল ইসলাম শিমুল, অধ্যাপক ডাঃ হাবিব-এ-মিল্লাত, তানভীর ইমাম, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, মিজানুর রহমান, এ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার, শেখ হাফিজুর রহমান, রেজাউল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন ও ইয়াহইয়া চৌধুরী। বাজেট ছাড়াও আলোচকরা পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে বিপুল মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হবে। ক্রীড়াক্ষেত্রসহ সবদিক দিয়ে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রীড়া শুধু একটি জাতির জন্য শারীরিক বিষয় নয়। একটি জাতির ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ক্রীড়ার অবদান বেশি। ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন আর অজানা আর অচেনা নয়। এ অবস্থানে আসার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর অবদান সবচেয়ে বেশি। কারণ তিনি একজন ক্রীড়ামোদী মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ পারে এবং সেটা আমরা করে দেখিয়েছি। ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অবদান রয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাজেট দেখলে বোঝা যায় বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। তারুণ্যের স্ফুলিংয়ের জন্য বাজেটে তরুণদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্ব ও পরামর্শে ডিজিটাল দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমরা হব জয়ী, দুর্বার ডিজিটাল হবে আমাদের হাতিয়ার। তিনি বলেন, আমাদের হাজার হাজার কোটি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করার জন্য আমরা দাবি করেছিলাম ১ শ’টি কাঁচামাল পণ্যে যদি রিয়াতি প্রদান করা হয় তাহলে আমাদের দেশী শিল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অর্থমন্ত্রী আমাদের আইসিটি পরিবারের সেই দাবি গ্রহণ করেছেন। তিনি ৯৪টি পণ্যে শুল্ক কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিনিয়োগ বান্ধব যে প্রতিশ্রুতি, তার যে নীতিমালা এবং অর্থমন্ত্রীর যুগোপযোগী বাজেট উপস্থাপনার কারণে সারাবিশ্বের যতগুলো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি রয়েছে, তারা একের পর এক বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ছুটে আসছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশেকে আইসিটির অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে তৈরি করার জন্য ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আইটি ও আইটি সেক্টরের সব ধরনের ট্যাক্সকে উনি অবমুক্ত করেছেন। পৃথিবীর আর কোন দেশ এই মুহূর্তে এত বিনিয়োগ বান্ধব নয়। জাতীয় পার্টির অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় জাতীয় পার্টি এখন ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী দল। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে বলা হচ্ছে এজন্য অবদান রয়েছে জাতীয় পার্টির। বাজেট যত বড়ই হোক তা যদি বাস্তবায়ন করা না যায় তাহলে জনগণ আস্থা হারাবে। ঘাটতি বাজেট বাস্তবায়ন করা তো আরও কঠিন। অর্থমন্ত্রী দেশের সকল নাগরিকের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। আজ যে শিশুটি জন্ম নিলো তার মাথায়ও ঋণের বোঝা রয়েছে। এই বাজেটে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ খুশি হতে পারেনি বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় এসেছে। আবগারি শুল্কের কারণে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। অনেক কিছু করার পরও ভ্যাট আর আবগারি শুল্কের কারণে জনমনে বিরক্তি তৈরি হয়েছে।
×