ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

নেত্রকোনার চার রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার আদেশের দিন পেছাল

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৫ জুন ২০১৭

নেত্রকোনার চার রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার আদেশের দিন পেছাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার মোঃ খলিলুর রহমানসহ চার রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার বিষয়ে আদেশের দিন পিছিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। নতুন করে আগামী ১২ জুলাই আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নড়াইলের আব্দুল ওয়াহাবসহ ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ১৮ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জের দুই রাজাকার লাখাই থানা রাজাকার কমান্ডার মোঃ লিয়াকত আলী ও আলবদর কমান্ডার আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলীর বিরুদ্ধে সপ্তম সাক্ষী আবু তাহের ওরফে আসুর জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য ১৬ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছে। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা, রানাদাশ গুপ্ত,আবুল কালাম, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান, মাসুদ রানা,গাজী এইচ এম তামিম। নেত্রকোনার ৪ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেছে ১২ জুলাই । এর আগে গত ৩ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার এই চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক (ফর্মাল চার্জ) অভিযোগ দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর। মামলার আসামিরা হলেন- নেত্রকোনার দুর্গাপুর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মৃত নবী হোসেনের ছেলে মোঃ খলিলুর রহমান (৭২), তার ভাই মোঃ আজিজুর রহমান (৬৫), একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আশক আলী (৮২) এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মৃত কদর আলীর ছেলে মোঃ শাহনেওয়াজ (৮৮)। খলিলুর রহমান ছাড়া বাকিরা গ্রেফতার রয়েছেন। গত ৩০ জানুয়ারি এই চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ৩০ জানুয়ারি শেষ হয়। নড়াইলের ৬ রাজাকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নড়াইলের আব্দুল ওয়াহাবসহ ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩০ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬ আসামির মধ্যে আব্দুল ওয়াহাব, ওমর আলী, বদরুদ্দোজা, দাউদ শেখ, গুলজার হোসেন কারাগারে আটক আছেন। অন্যদিকে খন্দকার শওকত আলী বাবুল পলাতক রয়েছেন। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নড়াইল শহরের পুরাতন লঞ্চঘাটে রাজাকাররা ক্যাম্প স্থাপন করে। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কুখ্যাত রাজাকার সোলায়মানের নির্দেশে জল্লাদ ওহাব ও ওমর অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষকে জবাই করে লাশ চিত্রা নদীতে ফেলে দেয়। হবিগঞ্জের দুই রাজাকার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জের দুই রাজাকার লাখাই থানা রাজাকার কমান্ডার মোঃ লিয়াকত আলী ও আলবদর কমান্ডার আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলীর বিরুদ্ধে সপ্তম সাক্ষী আবু তাহের ওরফে আসুর জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দীর জন্য ১৬ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। হবিগঞ্জের লিয়াকত আলী একাত্তরে ছিলেন মুসলিম লীগের কর্মী। আর আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী ওই সময়ে ছাত্রসংঘের সদস্য ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটের মতো ৭টি অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানী সেনা সদস্য ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে লাখাই থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে গণহত্যা, লুটপাট। ওইদিন কৃষ্ণপুর গ্রামে নৃপেণ রায়ের বাড়িতে রাধিকা মোহন রায় ও সুনীল শর্মাসহ ৪৩ হিন্দুকে গুলি করে হত্যা। হবিগঞ্জের লাখাই থানার চ-িপুর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট। লাখাই থানার গদাইনগর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট। অষ্টগ্রাম থানার সদানগর গ্রামে শ্মশানঘাটে হত্যা। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক গ্রামের বাচ্চু মিয়াকে অপহরণ এবং রঙ্গু মিয়াকে অপহরণ ও হত্যা। অষ্টগ্রাম থানার সাবিয়ানগর গ্রামে চৌধুরী বাড়িতে হামলা চালিয়ে হত্যা ও সাবিয়ানগর গ্রামে খাঁ বাড়িতে হত্যাকাণ্ড।
×