ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিষয় ॥ বিজ্ঞান;###;মোঃ মনোয়ারুল হক

জেএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৪ জুন ২০১৭

জেএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

বি.এস.এস,বি-এড সিনিয়র শিক্ষক কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় সেনবাগ, নোয়াখালী। পরীক্ষকঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা। মোবাইলঃ ০১৭১৮৮৬৩০৪৫ চতুর্থ অধ্যায় ॥ উদ্ভিদের বংশ বৃদ্ধি (সৃজনশীল প্রশ্ন) সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। সায়মা তার মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে সরিষা ক্ষেত দেখে মামাকে জিজ্ঞাসা করল এগুলো কি ফুল? মামা বলল, সরিষা ফুল। সায়মা ফুলগুলোতে নানা রকম কীটপতঙ্গের ঘুরে বেড়ানো দেখে মামার নিকট কীটপতঙ্গের ঘুরে বেড়ানোর কারণ জানতে চাইলো। মামা বলল মধু খেতে ও সুন্দর রঙের আকর্ষণে কীটপতঙ্গ ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। ক. পরাগায়ন কাকে বলে? খ. ফুলে বৃতির প্রয়োজন কেন? গ. সায়মার দেখা ফুলের অভিযোজন ব্যাখ্যা কর। ঘ. ফল ও বীজ উৎপাদনে সায়মার দেখা প্রক্রিয়াটির গুরুত্ত্ব তুলে ধর। ক. ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণু একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্ভমুন্ডে স্থানান্তরিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে। খ. ফুলের সর্ববাহিরের স্তরকে বৃতি বলে। বৃতি ফুলের অন্য অংশগুলোকে বিশেষত কুড়ি অবস্থায় রোদ, বৃষ্টি ও সকল প্রকারের পোকামাকড় থেকে রক্ষা করে। এ জন্যই ফুলে বৃতি একান্তভাবে প্রয়োজন। গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত সায়মা তার মামার বাড়ীতে সরিষা ফুল দেখে। অতএব সরিষা ফুলের অভিযোজন নীচে ব্যাখ্যা করা হলো- পরাগায়ন মাধ্যমগুলোর সাহায্য পেতে ফুলের গঠনে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। একে ফুলের অভিযোজন বলা হয়। সায়মার দেখা সরিষা ফুল মূলত পতঙপরাগী ফুল। সরিষা ফুল রঙিন, মধু গ্রন্থি যুক্ত। পরাগরেণু ও গর্ভমুন্ড আঠালো ও সুগন্ধ যুক্ত। মধু খেতে বা সুন্দর রঙের আকর্ষণে কীটপতঙ্গ ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। আর সরিষা ফুলের এই অভিযোজনিক বৈশিষ্ট্য পরাগায়নে অত্যন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত সায়মার দেখা পক্রিয়াটি হলো পরাগায়ন পক্রিয়া। ফল ও ফুল উৎপাদনে পরাগায়ন প্রক্রিয়াটির গুরুত্ব নিম্নে উল্লেখ করা হল- পরাগায়ন ফল ও ফুল উৎপাদন প্রক্রিয়ার পূর্বশর্ত। আমরা আগেই জেনেছি যে, ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণু একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্ভমুন্ডে স্থানান্তরিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে। পরাগায়নের ফলে পরাগরেনু গর্ভমুন্ডে স্থানান্তরিত হয়। এখান থেকে নিঃসৃত রস শুষে নিয়ে এটি ফুলে উঠে এবং এ আবরণ ভেদ করে একটি নালি বের হয়ে আসে। এটিকে গলনালি বলে। পরাগনালি গর্ভদন্ড ভেদ করে গর্ভাশয়ে ডিম্বকের কাছে গিয়ে পৌঁছে। ইতোমধ্যে এ পরাগনালিতে দুটি পুং গ্যামেট সৃষ্টি হয়। ডিম্বকের ভেতরে পৌঁছে এ নালিকা ফেটে যায় এবং পুং গ্যামেট দুটি মুক্ত হয়। ডিম্বকের ভেতর ভ্রূণথলি থাকে । এর মধ্যে স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়। পুং গ্যামেটের একটি স্ত্রী গ্যামেটের সঙ্গে মিলিত হয়। এভাবে নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়। নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া গর্ভাশয়ে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে তার কারণে ধীরে ধীরে গর্ভাশয়টি ফলে পরিণত হয়। এ ডিম্বকগুলো বীজে রুপান্তরিত হয়। নিষিক্তকরণের পর গর্ভাশয় এককভাবে অথবা ফুলের অন্যান্য অংশহসহ পরিপুষ্ট হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে তাকে ফল বলে। উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এ কথা বলা যায় যে, ফল ও বীজ উৎপাদনে পরাগায়ন প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
×