ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেন স্টোকস না শোয়েব মালিক?

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১৪ জুন ২০১৭

বেন স্টোকস না শোয়েব মালিক?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। স্বাগতিকরা যেখানে পরিষ্কার ফেবারিট। গ্রুপপর্বের একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত থেকে সেমিতে উঠে এসেছে ইংলিশরা। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে আলো ছড়াচ্ছেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান, জো রুট, এ্যালেক্স হেলস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদরা। দলটিতে তারকার অভাব নেই, তবে বেন স্টোকসের দিকে বিশেষ দৃষ্টি থাকবে। সেই আইপিএল হয়ে ঘরের মটিতে আট জাতির ওয়ানডে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দারুণ ছন্দে রয়েছেন তুখোড় এই অলরাউন্ডার। অন্যদিকে সত্যিকার অর্থে পাকিস্তান দলে এখন তারকার খরা যাচ্ছে, অভাব নির্ভরযোগ্য পারফর্মারের, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। মরণ-বাঁচন লড়াইয়ে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শেষ চারে সরফরাজ আহমেদের দল। মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান ও হাসান আলিদের নিয়ে বোলিংই পাকিদের মূল শক্তি। আছেন হালের আলোচিত ব্যাটসম্যান বাবর আযম ও আসরের চমক হার্ড-হিটার ফকর জামান। কিন্তু এদের কেউই অভিজ্ঞ নন। বড় ম্যাচে বড় কিছু করতে হলে সরফরাজ, মোহাম্মদ হাফিজ আর শোয়েব মালিকের মতো অভিজ্ঞদেরই জ্বলে উঠতে হবে। যেখানে মালিকের কথা আলাদা করে বলতে হবে। অনেক আশা নিয়ে তাকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাড়ি জমিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু গ্রুপপর্বে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তিন ম্যাচে উইকেট নেই, ব্যাট হাতে রান মাত্র ৪২, সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৬। হয়ত অভিজ্ঞতার ভারে আজও একাদশে জায়গা করে নেবেন। ৩৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের জন্য সেমিটা হতে পারে প্রতিদান দেয়ার সেরা মঞ্চ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এটি অষ্টম আসর, যার মধ্যে এ নিয়ে রেকর্ড ৬টিতেই খেলেছেন মালিক। ইংল্যান্ডে পা রাখার আগে ঘরোয়া আন্তর্জাতিক মিলিয়ে শেষ সাত ইনিংসে তার রান ৫৩, ৯, ১০১, ৭২, ৮০, ৪১ ও ৭২। সুতরাং আজ ছন্দটা ফিরে পেলে মালিকই হতে পারেন বড় ‘ফ্যাক্টর’। মালিকের জন্য যেখানে অভিজ্ঞতা প্রমাণের পরীক্ষা, সেখানে দুর্দান্ত ফর্মে পেস বোলিং-অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। আইপিএলে পুনে সুপারজায়ান্টের হয়ে শেষ সাত ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তিন ম্যাচের শেষ দুটিতে ৪৮ ও অপাাজিত ১০২। বল হাতে প্রতি ম্যাচে উইকেট। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ২৭৭ রানের জবাবে ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে জিতিয়েছেন স্টোকস। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। তুখোড় এই অলরাউন্ডারের পারফর্মেন্সে মুগ্ধ অধিনায়ক মরগান বলেন, ‘সে এমন একজন অলরাউন্ডার প্রয়োজনে কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিতে পারে। এটা দলের জন্য ইতিবাচক।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘অনেকেই আছে যারা যখন সময় পক্ষে থাকে না তখন চেপে যায়। কিন্তু বেন এ রকম নয়। আইপিএল নিলাম প্রমাণ করেছে সবদলই তাকে চায়। সে সবসময় খেলায় প্রভাব রাখতে ভালবাসেÑ ব্যাট হাতে, বল হাতে, এমনকি ফিল্ডিংয়েও। স্টোকস সবসময় খেলার মাঝে থাকতে চায়। তার ব্যাটিং অসাধারণ। ক্রিজে শান্ত, কিন্তু প্রাণবন্ত।’ ইংল্যান্ড কোচ ট্রেভর বেলিস বলেন, ‘বেন অসাধারণ একজন অলরাউন্ডার। দলের প্রয়োজনে সেরাটা দিতে ওর জুড়ি নেই। মাঠ ও মাঠের বাইরে স্টোকসের আক্রমণাত্মক মনোভাব পুরো দলের ওপর প্রভাব ফেলে। কারণ আমরা এখন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। এমন ক্রিকেটার গোটা দলের জন্য টনিক হিসেবে কাজ করে। ও দারুণ ছন্দে রয়েছে। আশা করছি সেমিতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারবে। ওর ওপর বাড়তি কোন চাপ নেই। কেবল নিজের খেলাটা খেললেই হলো।’ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জন্ম নেয়া ২৬ বছর বয়সী স্টোকস ইংল্যান্ডের হয়ে ৩২ টেস্ট, ৫৮ ওয়ানডে ও ২১টি টি২০ খেলেছেন। ওয়ানডেতে ৩ সেঞ্চুরি ও ৯ হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে করেছেন ১৫২০ রান। পেস বোলিংয়ে উইকেট নিয়েছেন ৫০টি। দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই বেশি খুশি ক্রেজি এই অলরাউন্ডার, ‘কখনও সেঞ্চুরি বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে ভাবি না। ব্যাটিং বা বোলিংয়ে যেভাবে হোক, দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই বেশি ভাল লাগে।’ শক্তিধর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচজয়ী সেঞ্চুরির পর বলেন স্টোকস।
×