ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান প্রথম সেমিফাইনাল আজ

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১৪ জুন ২০১৭

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান প্রথম সেমিফাইনাল আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ জমে উঠেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ পর্যায়ের দ্বৈরথ। আট দলের চারটি বিদায় নিয়েছে। শিরোপা থেকে মাত্র দুই ম্যাচের দূরত্বে শীর্ষ চার দলÑ ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত আর বাংলাদেশ। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে আজ প্রথম সেমিতে স্বাগতিক ইংলিশদের মোকাবিলা করবে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান। বি গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শেষ চারে উঠে আসে সরফরাজ আহমেদের দল। অন্যদিকে গ্রুপ এ থেকে টানা তিন সাফল্যে অপরাজেয় ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড। ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের চতুর্থ স্থানে থাকলেও শীর্ষ তিন দলের সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান সামান্যই, যেটি সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশদের পাওয়ার ক্রিকেটের সাফল্যের উদাহরণ। অন্যদিকে র‌্যাঙ্কিংয়ের আটে থাকা পাকিস্তান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ও লঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে শেষ দল হিসেবে সেমিতে উঠে আসে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা আট দলের শ্রেষ্ঠতের লড়াই। অনেকে এটিকে বিশ্বকাপের চেয়েও কঠিন বলে মনে করেন। কিন্তু প্রতিটি ম্যাচে ইংলিশরা প্রতিপক্ষকে এমনভাবে গুঁড়িয়ে দিয়েছে যে, দলগুলোর শক্তির ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের ৩০৫ রান টপকে মরগানরা জিতেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে ১৬ বল হাতে রেখে। অপরাজিত ১৩৩ রানে দুরন্ত ইনিংস উপহার দিয়ে সেদিন ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ব্যাটিংয়ের বড় নাম জো রুট। মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি হয়নি ওপেনার এ্যালেক্স হেলসের। ৬১ বলে ৭৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক মরগান। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১০ রান করে স্বাগতিকরা জেতে ৮৭ রানে। মাত্র ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন পেসার জ্যাক বল। গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ড। বার্মিংহামে ২৭৭ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ। এক পর্যায়ে ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরও ৪০.২ ওভারে ৪ উইকেটে ইংল্যান্ড ২৪০ রান করলে বৃষ্টি আসে। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে মরগানদের জয় ৪০ রানে। ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে নায়ক তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। অধিনায়ক নিজে খেলেন ৮৭ রানের চমৎকার এক ইনিংস। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং প্রতিটি বিভাগে দারুণ করছে ইংলিশরা। আছেন মরগান, জো রুট, স্টোকস, জস বাটলারের মতো ব্যাটসম্যান, জ্যাক বল, মার্ক উড, লিয়াম প্লাঙ্কেটের মতো পেসার এবং আদিল রশিদ ও মঈন আলির মতো স্পিনার। আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক মরগান বলেন, ‘টুর্নামেন্টে নিজেদের খেলা নিয়ে সন্তুষ্ট আমরা। অনেকে বৃষ্টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করছেন। কিন্তু প্রকৃতির ওপর কারও হাত নেই। পাকিস্তান শক্তিশালী দল, তবে আমরা যে কোন পরিস্থিতি জয় করার জন্য প্রস্তুত।’ অন্যদিকে সেমিতে উঠে আসার পথে পাকিস্তানের গল্পটা সেই চিরায়ত ‘আনপ্রেডিক্টেবলে’র মতোই। বহুল আলোচিত ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের ৩১৯ রানের বিশাল চ্যালেঞ্জ টপকাতে গিয়ে মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট পাকিদের হার ১২৪ রানে (বৃষ্টি আইনে)। সেই তারাই আবার র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৯ রানের জয়ে (বৃষ্টি আইনে) দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। প্রোটিয়াদের ২১৯ রানের জবাবে ২৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান করে পাকিস্তান। সর্বশেষ ‘ডু অর ডাই’ হয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা পাকিদের জন্য স্মরণীয়। মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, হাসান আলি আর অভিষিক্ত ফাহিম আশরাফের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে ২৩৬ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৩৭ রানে ৬, ১৬২ রানে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তানের হারটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার, তখনই ব্যাট হাতে সরফরাজ-আমিরের চমক। সরফরাজ অপরাজিত ৬১ ও টেলএন্ডার আমির অপরাজিত ২৮ রান করে দলকে ৩ উইকেটের নাটকীয় জয় এনে দেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেমিতে উঠে আসে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর অধিনায়ক সরফরাজ বলেন, ‘এটা আসলেই স্মরণীয় জয়। সকল কৃতিত্ব বোলারদের। হ্যাঁ আমাদের ব্যাটিং নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। ইংল্যান্ড শক্তিশালী দল। সেমিতে তাই ব্যাটসম্যানদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আমি আশাবাদী।’ ভেরিয়েশন ও কার্যকারিতার বিচারে বোলিংই দলটির বড় শক্তি। ফাইনালের টিকেট পেতে আজ তাই লড়াইটা হতে পারে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ‘বনাম’ পাকিস্তানের বোলিংয়ের মধ্যে। এমন ম্যাচে উতরাতে গেলে ব্যাটিংয়েও সরফরাজদের ভাল করতে হবে, সেক্ষেত্রে মোহাম্মদ হাফিজ, আজহার আলি, শোয়েব মালিকের মতো সিনিয়রদেরই দায়িত্বটা নিতে হবে।
×