মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ বাড়ির ভেতরে বসেই হোমিও চিকিৎসার আড়ালে জঙ্গী তৎপরতা চালাত রাজশাহীর তানোর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের ইসরাফিল আলম। তার হাত ধরেই মূলত পরিবারের সবাই জঙ্গী সম্পৃক্ততায় জড়িয়ে পড়ে। কম্পিউটারের মাধ্যমে সব রোগের চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে মানুষকে আকৃষ্ট করত। তার রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। ইসরাফিল বাড়ির মধ্যে হোমিও চিকিৎসা দিত- এটিও গ্রামের অনেকেই জানত না।
অভিযান শেষে মঙ্গলবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ইসরাফিলের ঘরের দরজায় সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা ‘কনভালেস হোমিও ক্লিনিক’। তার নামের আগে যুক্ত করা হয়েছে ড. ইসরাফিল আলম। নিজে কওমী মাদ্রাসায় পড়ালেখা করলেও ‘ড’ উপাধি ব্যবহার করতেন। এলাকার অনেকেই এটা জানতেন না। মঙ্গলবার তার ঘরের দরজায় লাগানো সাইনবোর্ড দেখে এলাকাবাসীও অবাক হয়ে যান। স্থানীয়রা জানান, প্রায় জনবিচ্ছিন্ন এ পরিবারটি স্বাভাবিকভাবে মানুষের সঙ্গে মিশত না। তাদের বাড়িতে স্থানীয় তেমন কেউ না গেলেও মাঝেমধ্যে অপরিচিত লোকজন আসা-যাওয়া করত আর নারীরা বেশি সে বাড়িতে যাওয়া-আসা করত। এলাকাবাসীর ধারণা, ইসরাফিলই এখানে জঙ্গীর হোতা। বাড়িতে হোমিও চিকিৎসার ক্লিনিক খুলে তার আড়ালে মানুষকে নিজেদের আদর্শে (জঙ্গীবাদ) সম্পৃক্ত করত। এদিকে, সোমবার রাতেই ওই বাড়িতে তিন-তিনটি শক্তিশালী বোমা নিষ্ক্রিয় করার পর মঙ্গলবার সকালে বাড়িটি দেখতে মানুষের ভিড় জমে। বাড়ির দরজা মাড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করেই ইসরাফিলের নামাঙ্কিত ‘কনভালেস হোমিও ক্লিনিক’ সাইনবোর্ড দেখে বিস্মিত হন অনেকে। এলাকাবাসী জানান, তারা কখনই জানতেন না ইসরাফিল হোমিও চিকিৎসক। তাছাড়া তার নামের আগে ড. লেখা দেখেও তারা অবাক হন। আবদুর রাজ্জাক নামের এক প্রতিবেশী জানান, ইসরাফিল কওমী মাদ্রাসার ছাত্র হয়ে কিভাবে ড. হলেন এ নিয়ে সবার মধ্যে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসরাফিল আলম চাঁপাইনববাবগঞ্জে বিয়ে করার পর নিজেকে পাল্টে ফেলে। তার এক ভায়রার মাধ্যমে সে জঙ্গী সম্পৃক্ততায় যুক্ত হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। এদিকে, দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ডাঙ্গাপাড়ার জনজীবন। সোমবার রাতে ওই বাড়িতে উদ্ধার হওয়া বোমা নিষ্ক্রিয় করার মধ্য দিয়ে পুলিশ এ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: