ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুঠিয়ায় জলিল হত্যা মামলা

হুমকিতে তটস্থ বাদীর পরিবার ॥ কলেজে যেতে পারছে না ছাত্রী

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৪ জুন ২০১৭

হুমকিতে তটস্থ বাদীর পরিবার ॥ কলেজে যেতে পারছে না ছাত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জামিনে বেরিয়ে এসে হত্যা মামলার আসামির হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পুঠিয়া উপজেলার বানেশ^র এলাকার রঘুরামপুর এলাকার এক পরিবার। সম্প্রতি চার্জশীটভুক্ত আসামি জামিন পেয়েই ওই পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি-ধামকি শুরু করেছে। ফলে ভয়ে বাদীর পরিবার এখন ঠিকমতো বাইরে বের হতে পারছেন না। পরিবারের এক ছাত্রী কলেজেও যেতে পারছে না। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন পুঠিয়ার রঘুরামপুরের চাঞ্চল্যকর আবদুল জলিল হত্যা মামলার বাদী সাবিয়া বেগম ও পরিবারের সদস্যরা। বাদী অভিযোগ করেন, তার স্বামী আবদুল জলিলকে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে খুন করে মেয়ের তালাকপ্রাপ্ত জামাই আনোয়ার পারভেজ ও সহযোগীরা। এ ঘটনার পরের দিন এ বিষয়ে পুঠিয়া থানায় আনোয়ার পারভেজকে প্রধান করে ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শেষে একজনকে বাদ দিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চাজশীট) দাখিল করে। শুরুর দিকে আসামিরা সবাই পলাতক থাকলেও পরবর্তিতে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন। সর্বশেষ গত ১ জুন প্রধান আসামি আনোয়ার পারভেজ জামিনে বেরিয়ে এসে হুমকি-ধামকি শুরু করেছে। মামলা প্রত্যাহার কিংবা আপোস করা না হলে তাদেরও হত্যার হুমকি দিয়েছে। প্রেক্ষিতে মেয়েদের নিয়ে বাদী চরম শঙ্কার মধ্য দিন কাটাচ্ছেন। একেক সময় একেক মোবাইল নম্বর থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে বাদী সাবিয়া বলেন, আসামিদের হুমকির কারণে তার নাতনি কলেজে যেতে পারছেন না। এ বিষয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিলেও আসামিদের ভয়ে থানা পর্যন্ত যেতে পারছেন না। মামলার বাদী জানান, ১৯৯৮ সালে তার মেয়ে জুলেখা খাতুন নিলার সঙ্গে বিয়ে হয় একই গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার ছেলে আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে। তখন আনোয়ার নৌবাহিনীতে চাকরি করত। পরে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে গ্রামে ফিরে এসে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় যৌতুকের জন্য নানা ধরনের নির্যাতন। এরই মধ্যে তাদের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। মেয়েটি বর্তমানে কলেজে পড়ছে। দিনে দিনে যৌতুকের কারণে স্ত্রী নিলার ওপর অমানসিক নির্যাতন শুরু করে।এতে বাধ্য হয়ে ২০১৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায় নিলা। এতে আনোয়ার আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এরই জের ধরে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে নিলার বাবা আব্দুল জলিলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় জলিলসহ তার ভাগ্নে রিপন, ভাস্তে মিঠুন, দুলাভাই আব্দুর রশিদ, বোন তসলিমাকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর পলাতক থাকলেও পরে পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে। তবে সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসে বাদীর পরিবারের ওপর নির্যাতন ও হুমকি-ধামকি শুরু করেছে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পুরো পরিবার।
×