ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটে দেশীয় কোম্পানি সুরক্ষার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৪ জুন ২০১৭

বাজেটে দেশীয় কোম্পানি সুরক্ষার উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার সবক্ষেত্রেই দেশীয় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক সুরক্ষার স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানমুখী শিল্পকারখানা স্থাপনে দেশীয় উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানই প্রাধান্য পেয়েছে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়। পাশাপাশি যথাযথ আইন করা হয়েছে, যাতে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে দেশীয় কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে না যায়। দেশীয় তামাক কোম্পানিকে সুরক্ষা দিতে নতুন বাজেটে নিম্ন সø্যাবের (মূল্যস্তর) সিগারেটে বিদেশী ব্র্যান্ডের জন্য বেশি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের সিগারেটের মূল্য বাড়াননি অর্থমন্ত্রী। তবে নিম্নœমূল্য স্তরের দেশীয় ব্র্যান্ডে সিগারেট প্রতি দশ শলাকার মূল্য ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭ টাকাও সম্পূরক শুল্কহার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫২ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর নিম্ন মূল্যস্তরের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সিগারেটের ক্ষেত্রে পৃথক মূল্যস্তর সৃষ্টি করে প্রতি ১০ শলাকার মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণ ও সম্পূরক শুল্কহার ৫৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশীয় তামাক কোম্পানিকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য নতুন জাতীয় বাজেটে সিগারেটের নিম্ন স্তরকে দেশী ব্র্যান্ড ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড নামে দুটি নতুন স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। দেশীয় কোম্পানিগুলো ক্রমান্বয়ে তাদের বাজার হারাতে থাকায় এটা করা হয়েছে। জানা গেছে, বাজেট ঘোষণার পর থেকেই একটি মহল এ নিয়ে চাপে রেখেছে এনবিআরকে। তারা দেশী-বিদেশী ব্র্যান্ডের সিগারেটের মূল্য সমান রাখতে চায়। যদিও উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটে কোন কর বাড়ানো হয়নি। নতুন বাজেটে ৪৫ টাকা বা তদুর্ধ মূল্যে বিদ্যমান মধ্যম ও উচ্চ মূল্যস্তরের সিগারেটের ব্র্যান্ডগুলোর মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি উৎপাদকের ইচ্ছাধীন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে একটি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি। যাদের উৎপাদিত ১৫ ব্র্যান্ডের সিগারেটের মধ্যে ১০টিই উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের এবং ৫টি ব্র্যান্ড নিম্ন মূল্যস্তরের। প্রিমিয়াম ও উচ্চমানের সিগারেট এবং মধ্যমানের সিগারেটের দাম বিগত দুটি বাজেটে বাড়ানো হয়নি। বড় লোকের ভোগ্যপণ্য এসব সিগারেটের দাম না বাড়লেও নিম্ন আয়ের লোকের সিগারেট ও বিড়ির দাম বিগত ৫ বছরে বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৩০০%। দেশীয় কোম্পানিগুলোকে সিগারেট ব্যবসা থেকে বিতারিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রিমিয়াম ও উচ্চমানের সিগারেটের দাম বাজেটে বাড়তে দেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিড়ির ওপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করে নিম্নস্তরের সিগারেট বাজরের তাদের সুযোগ দিতে চায় সরকার। নিম্নœ সø্যাবে বহুজাতিক কোম্পানির সিগারেটের মূল্য বাড়ানো হলে বিড়ি উৎপাদন থেকে বের হয়ে আসা স্থানীয় শিল্পমালিকরা সুরক্ষা পাবেন বলে জানান এনবিআর কর্মকর্তারা ।
×