ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে প্রথম

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৪ জুন ২০১৭

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে প্রথম

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যা কখনই ঘটেনি। এবার তাই ঘটল। উপমহাদেশের তিন দল সেমিফাইনালে খেলছে। এরমধ্যে একদল আছে ইউরোপের, স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আর উপমহাদেশের তিন দল হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। একদিন পর বৃহস্পতিবার বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচই বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হবে। এরআগে সাতবার হয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে হওয়া প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (তখনকার নাম আইসিসি নকআউট ট্রফি) উপমহাদেশের দুই দল ভারত ও শ্রীলঙ্কা খেলে। সঙ্গে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু উপমহাদেশের একটি দলও ফাইনালে উঠতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০০ সালেও আইসিসি নকআউট ট্রফি নামেই টুর্নামেন্টটি হয়। তখনও সেমিফাইনালে উপমহাদেশের দুইদল খেলে ভারত ও পাকিস্তান। এবারও দক্ষিণ আফ্রিকা সেমিফাইনালে ওঠে। সঙ্গে থাকে নিউজিল্যান্ড। ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় নিউজিল্যান্ড। ২০০২ সাল থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নামে হচ্ছে টুর্নামেন্টটি। এবারও উপমহাদেশের দুই দল ভারত ও শ্রীলঙ্কা সেমিফাইনালে ওঠে। সঙ্গে থাকে এবারও দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া। ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৪ সালে উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে শুধু পাকিস্তান সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা দেখায়। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিরোপা ঘরে তুলে। ২০০৬ সালে উপমহাদেশের দলগুলোর করুণ অবস্থা হয়। এবার উপমহাদেশের কোন দলই সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা দেখাতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনালে খেলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জিতে। ২০০৯ সালেও অবস্থা খারাপই যায়। শুধু পাকিস্তান খেলে সেমিফাইনাল। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড থাকে শেষ চারে অপর তিনদল। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আবার উপমহাদেশের দলগুলো দাপট দেখায়। এবার ভারত ও শ্রীলঙ্কা শেষ চারে খেলে। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাও থাকে। এবার অষ্টমবারের মতো হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। নিশ্চিতভাবেই উপমহাদেশের একটি দল ফাইনালেও খেলবে এবার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া টানা দুইবার, ভারত দুইবার, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়। এবার কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে? সেই আলোচনা এখনই শুরু হয়ে গেছে। নতুন এক দল চ্যাম্পিয়ন হোক, সেই চাওয়ায় যেন সবার। তবে তার আগে সেমিফাইনালে জিততে হবে। সেই সেমিফাইনালের ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেল এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নতুন ইতিহাস হয়েছে। উপমহাদেশের তিনটি দল সেমিফাইনালে খেলছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ একটি দল। যে দলটির নাম এখন সবার মুখে মুখে। সবার প্রশংসা কুড়াচ্ছে দলটি। আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেই এখন পর্যন্ত এমন ইতিহাস বিরলই। মাত্র একবার ঘটতে দেখা গেছে। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সেমিফাইনালে খেলেছে। তা এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ঘটেছে। আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বলতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও টি২০ বিশ্বকাপ আছে। এ তিন টুর্নামেন্টের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যে এমন ঘটনা আর ঘটেনি তা জানাই গেল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে একবার ঘটেছে। টি২০ বিশ্বকাপে ঘটেইনি। এ পর্যন্ত ১১বার হয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপে কোন উপমহাদেশের দল সেমিফাইনালেই খেলতে পারেনি। ১৯৭৯ সালে শুধু পাকিস্তান খেলতে পেরেছে। ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে ভারত, পাকিস্তান খেলেছে। ১৯৯২ সালে আবার শুধু পাকিস্তান খেলেছে সেমিফাইনালে। ১৯৯৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা খেলেছে। ১৯৯৯ সালে আবার শুধু পাকিস্তান খেলেছে। ২০০৩ সালে ভারত ও পাকিস্তান খেলেছে। ২০০৭ সালে শুধু শ্রীলঙ্কা খেলেছে। ২০১১ সালে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা খেলেছে। ২০১৫ সালে শুধু ভারত খেলেছে। টি২০ বিশ্বকাপ এখন পর্যন্ত হয়েছে ষষ্ঠবার। ২০০৭ সালে প্রথমবার হওয়া টি২০ বিশ্বকাপে উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল। ২০০৯ সালে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা খেলেছে। ২০১০ সালে দুই দল সেমিফাইনালে খেলে। ২০১২ সালেও একই অবস্থা হয়। ২০১৪ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা খেলে। ২০১৬ সালে শুধু ভারত খেলতে পারে। উপমহাদেশের তিনদল সেমিফাইনালে, ওয়ানডে বিশ্বকাপে একবার এ ঘটনা ঘটলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এতদিন ঘটেনি। এবার বাংলাদেশ শেষ চারে চলে যাওয়ায় উপমহাদেশের তিন দল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলছে।
×