ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবিশ্বাস্য জয়ে সেমিতে পাকিস্তান, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ১৩ জুন ২০১৭

অবিশ্বাস্য জয়ে সেমিতে পাকিস্তান, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড

গোলাম মোস্তফা ॥ এই না হলে পাকিস্তান! সহজ ম্যাচকে কঠিন করে জিতল তারা। সোমবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাঁচা-মরার ম্যাচে সরফরাজ আহমেদের দল ৩ উইকেটে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। সেইসঙ্গে শেষ দল হিসেবে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় পাকিস্তান। সোমবার কার্ডিফে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.২ ওভারে ২৩৬ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৪. ৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়েই ২৩৭ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। এর ফলে ৩ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন সরফরাজের দল। বুধবার টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা। জিতলেই সেমিফাইনাল আর হারলেই বিদায়। এমন সমীকরণ নিয়েই ‘বি’ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় এশিয়ার দুই শক্তিশালী দল শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান। এমন ম্যাচে দারুণ শুরু করে লঙ্কানরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। আর শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেয়া ২৩৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন পাকিস্তানের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আজহার আলী এবং ফখর জামান। প্রথম উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়েন তারা। দলীয় ৭৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫০ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে যান ফখর জামান। ৩৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান আজহার আলীও। ব্যাট হাতে এদিন সুবিধা করতে পারেননি বাবর আজম এবং মোহাম্মদ হাফিজও। এর ফলে ১৩১ রানেই প্রথম সারির পাঁচ উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের। দল তখন বিপর্যয়ে! কেউ কেউ আবার ধরেই নেন যে, সেমিফাইনালে আর উঠা হলো না পাকিস্তানের! তবে এমন কঠিন পরিস্থিতিতেই দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক এবং অভিষিক্ত ফাহিম শাহরিয়ার যখন সমর্থকদের হতাশ করে সাজঘরে ফিরে যান তখন মোহাম্মদ আমীরকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। অষ্টম উইকেটে ৭৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন সরফরাজ আহম্মেদ এবং মোহাম্মদ আমির। সরফরাজ ৭৯ বলে ৬১ এবং ৪৩ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে রোমাঞ্চকর এক জয় এনে দেন মোহাম্মদ আমির। শ্রীলঙ্কার নুয়ান প্রদীপ একাই ৩ উইকেট লাভ করেন। এছাড়া লাসিথ মালিঙ্গা, সুরঙ্গা লাকমাল এবং থিসেরা পেরেরা প্রত্যেকেই পাকিস্তানের ১টি করে উইকেট লাভ করেন। অথচ এর আগে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করে শ্রীলঙ্কা। দলীয় ২৬ রানে ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকাকে হারালেও লঙ্কানদের পথ হারাতে দেননি আরেক ওপেনার নিরোশান ডিকভেলা ও কুশল মেন্ডিস। এই দুই ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৫৬ রান। কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। ২৭ রান করে বিদায় নেন মেন্ডিস। রানের খাতা খোলার আগে ফিরে যান দিনেশ চান্দিমালও। এতে অবশ্য সমস্যা হয়নি। অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালান ডিকভেলা। এই জুটি থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৮ রান। কিন্তু ৩৯ রান করে ম্যাথুস ফিরতেই এলোমেলো হয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। সর্বোচ্চ ৭৩ রান করে থামেন ডিকভেলাও। এরপর কেউই আর দলের হাল ধরতে পারেননি। আসেলা গুনারতেœ ২৭ এবং সুরঙ্গ লাকমল ২৬ রান করলে ২৩৬ রানে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের জুনায়েদ খান ও হাসান আলী তিনটি এবং মোহাম্মদ আমির ও ফাহিম আশরাফ শ্রীলঙ্কার দুটি করে উইকেট লাভ করেন। তবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ।
×