ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইতালির বড়, স্পেনের ঘাম ঝরানো জয়

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৩ জুন ২০১৭

ইতালির বড়, স্পেনের ঘাম ঝরানো জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে ইউরোপিয়ান অঞ্চলের ম্যাচে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে সাবেক দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি ও স্পেন। রবিবার রাতে ‘জি’ গ্রুপের নিজ নিজ ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে দল দুটি। তবে আজ্জুরিরা সহজ জয় পেলেও ঘাম ঝরাতে হয়েছে স্প্যানিশদের। ঘরের মাঠে ইতালি ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে লিচেনস্টেইনকে। আর এ্যাওয়ে ম্যাচে মেসিডোনিয়ার মাঠ থেকে ২-১ গোলের স্বস্তির জয় নিয়ে ফিরেছে স্পেন। ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে গ্যারেথ বেলহীন ওয়েলস ১-১ গোলে ড্র করেছে সার্বিয়ার সঙ্গে। গ্রুপের অপর দুই ম্যাচও ড্র হয়। মলদোভা-জর্জিয়া ম্যাচ ২-২ ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড-অস্ট্রিয়া ম্যাচ ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকে। ‘জি’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইসরাইলকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আলবেনিয়া। ‘আই’ গ্রুপের ম্যাচে আইসল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ক্রোয়েশিয়া। আর কসোভোকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক। ফিনল্যান্ডকে ২-১ গোলে ইউক্রেন। ইতালির উদিনেতে শুরু থেকেই দুর্বল লিচেনস্টেইনের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি। প্রথমার্ধে লরেঞ্জো ইনসিগনের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে গোলোৎসবে মাতে স্বাগতিকরা। একে একে লক্ষ্যভেদ করেন আন্দ্রেয়া বেলোট্টি, এডের, ফেডেরিকো ও মানোলো গাব্বিয়াডিনি। গত নবেম্বরে এই দলের মাঠে ৪-০ গোলে জিতেছিল ২০০৬ সালে সবশেষ বিশ্বকাপ জেতা ইতালি। এবারের বাছাইপর্বে আজ্জুরিদের এটা টানা চতুর্থ ও সবমিলিয়ে পঞ্চম জয়। এই গ্রুপে মেসিডোনিয়াকে হারিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে স্পেন। ছয় ম্যাচে ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জয়ীদের পয়েন্ট ১৬। সমান ম্যাচে ইতালির পয়েন্টও ১৬। তবে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে তারা। ৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আলবেনিয়া। সমান পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে ইসরাইল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৮৬ নম্বর দলের বিপক্ষে অধিকাংশ সময় বল দখলে রাখা ইতালির প্রথমার্ধের পারফর্মেন্স ছিল সাদামাটা। তাদের গোলের অপেক্ষা শেষ হয় ৩৫ মিনিটে। ডান দিক থেকে মিডফিল্ডার লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো শটে দলকে এগিয়ে দেন নেপোলির ফরোয়ার্ড ইনসিগনে। বিরতি পর ৫২ মিনিটে ইনসিগনের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন টোরিনোর ফরোয়ার্ড বেলোট্টি। ৭৪ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন এডের। ৮২ মিনিটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন ফেডেরিকো। ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বদলি নামা ফিওরেন্টিনোর এই খেলোয়াড়। যোগ করা সময়ে ১০ গজ দূর থেকে দলের শেষ গোলটি করেন গাব্বিয়াডিনি। মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে স্পেন। তবে গোল মিসের মহড়ার কারণে ব্যবধান বেশি করতে পারেনি তারা। এরপরও ডেভিড সিলভা ও দিয়াগো কোস্তার গোলে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে মেসিডোনিয়ার মাঠে প্রথমার্ধে দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্পেন। ১৫ মিনিটে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পাসে গোল করেন সিলভা। ২৭ মিনিটে দারুণ শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চেলসি ফরোয়ার্ড কোস্তা। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুর্দান্ত খেলা ইস্কোর বাড়ানো বল থেকে গোলটি করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে স্পেনের আক্রমণের ধার কিছুটা কমে। ৬৬ মিনিটে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচ ফেরে মেসিডোনিয়া। ডানদিক দিয়ে দ্রুত আক্রমণে ঢোকা স্টেফান রিস্টোভস্কিকে আটকাতে পারেননি ডিফেন্ডাররা। জোরালো শটে গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে পরাস্ত করেন মেসিডোনিয়ার এই ডিফেন্ডার। শেষ দিকে মরিয়া চেষ্টা করলেও সমতায় ফেরা গোল পায়নি মেসিডোনিয়া। এ কারণে বাছাইয়ে পঞ্চম হারের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। জাতীয় দল ও ক্লাব চেলসির হয়ে দারুণ ফর্মে থাকলেও ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় আছে কোস্তা। হয়ত তাকে চেলসি ছাড়তে হতে পারে। মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে চেলসি কোচ এ্যান্টোনিও কন্টে কোস্তাকে জানিয়েছেন স্টামফোর্ড ব্রিজের সঙ্গে তার আর ভবিষ্যত কোন সম্পর্ক নেই। এই তথ্য কোস্তা নিজেই স্বীকার করেছেন। এ কারণে গুজব আছে চাইনিজ সুপার লীগে তিনি খেলতে যাচ্ছেন। কিন্তু গত মাসে কোস্তা জানিয়েছিলেন বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন নিয়ে তিনি বর্তমানে নিজেকে প্রস্তুত করছেন। এই মুহূর্তে চীনে যাওয়ার কোন ইচ্ছা তার নেই। কোস্তা বলেন, আমার ক্লাব কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা জানতে আমি অপেক্ষায় আছি। আমি আমার ভবিষ্যত সম্পর্কে জানি না। চেলসির সঙ্গে আমার একটা চুক্তি আছে। একমাত্র তারাই বলতে পারবে আমার সঙ্গে কী করবে।
×