ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্ষোভের আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত, কোন দেশই খবরটি নিশ্চিত করেনি

ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর স্থগিত

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৩ জুন ২০১৭

ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর স্থগিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’কে ফোন করে বলেছেন, ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি সেদেশ সফরে যাবেন না। ট্রাম্প বলেছেন, ব্রিটেনে বড় ধরনের বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলতে থাকা অবস্থায় তিনি দেশটি সফরে যেতে চান না। তার এ কথা থেকে ধারণা পাওয়া যাওয়া যায় ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর বিলম্বিত হতে পারে। সম্ভবত চলতি বছর তার এ সফর নাও হতে পারে। গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমস। বর্তমান সময়ে ব্রিটেন সফরে গেলে বিক্ষোভে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে সফর পেছালেন ট্রাম্প। এ কথাই তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন। ডাউনিং স্ট্রিট সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয় মে’র নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। সফরকালে ব্যাপক বিক্ষোভ হতে পারে এই আশঙ্কায় ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন না ট্রাম্প। সফরকালে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হলেও তিনি যুক্তরাজ্য সফর করবেন না। সম্প্রতি ট্রাম্প ও মে’র মধ্যে এই ফোনালাপ হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডাউনিং স্ট্রিটের এক উপদেষ্টা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন। ফোনালাপের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন। ট্রাম্পের এ বক্তব্যে বেশ বিস্মিত হয়েছেন মে। ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহ পর ওয়াশিংটন সফর করেন মে। মে হলেন ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আমেরিকা সফরকারী প্রথম বিদেশী নেতা। ওই সফরকালে তিনি ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়াকে ব্রিটেন সফরের আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্প সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, ট্রাম্প ব্রিটেনে একজন অত্যন্ত অজনপ্রিয় ব্যক্তি তার সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ হতে পারে। ব্রিটেনের অর্ধেকেরও বেশি লোক মনে করে ট্রাম্প বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ। ব্রিটেনের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা লর্ড রিকেটসসহ অনেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ সে সময়ে বলেছিলেন, এ আমন্ত্রণ আগাম জানানো হয়েছে। তবে একবার আমন্ত্রণ জানানো পর তা বাতিল করার নিয়ম নেই। লেবার নেতা জেরেমি করবিন টুইটারে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘লন্ডন মেয়রকে লক্ষ্য করে তীব্র সমালোচনা এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে তার দেশকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর এ সিদ্ধান্তের জন্য তাকে স্বাগতম।’ লন্ডনের মেয়র সাদেক খানকে নিশানা করে আক্রমণ করায় খান ট্রাম্পের সফর বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি লন্ডন ব্রিজ ও বোরো মার্কেট এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি মেয়র হিসেবে খান যেভাবে সামাল দিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত অস্থায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত লুইস লুকেন্স তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে লুইস খানের প্রশংসা করতে গিয়ে ট্রাম্পের বিরাগভাজন হন। ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র অবশ্য ফোনালাপের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি। তিনি একে ব্যক্তিগত ফোনালাপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। হোয়াইট হাউস অবশ্য গার্ডিয়ানের এ খবরকে অসত্য বলে দাবি করেছে। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র প্রতি প্রেসিডেন্টের অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। বিষয়টি কখনই ফোনালাপে আসেনি।’ ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টার জেনা জনসন বলছেন, হোয়াইট হাউস গার্ডিয়ানের খবর অস্বীকার করলেও ট্রাম্প কবে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন সে সম্পর্কে কোন আভাস দেয়নি। এদিকে নিউইয়র্ক টাইমসও খবর দিয়েছে ট্রাম্প সফর বাতিল বা মূলতবি করার চেষ্টা করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস এ খবর দিয়েছে। ওই কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্প যুক্তরাজ্য সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও বিষয়টি তার আশু পরিকল্পনায় রাখেননি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ ও পররাষ্ট্র দফতর ট্রাম্পের এই সফরের সময়সূচী ঠিক করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি মাসে আরও আগের দিকে ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করা নেন। এই ঘটনায় ব্রিটেন হতাশ হয়েছে। ব্রিটিশ ফরেন অফিস এ ঘটনায় অত্যন্ত হতাশ হয়।
×