ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ ও যানজট বন্ধ দাবি

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৩ জুন ২০১৭

ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ ও যানজট বন্ধ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে পরিবহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, যানজট, ফিটনেসবিহীন বাস ও লঞ্চ বন্ধকরা না গেলে ঈদ আনন্দ যাত্রা বিষাদে পরিণত হবে মনে করছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। সোমবার সকালে রাজধানীর মুক্তি ভবনে প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সংগঠন আয়োজিত ‘ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ মতামত তুলে ধরা হয়। এছাড়া সড়ক-নৌ ও রেলপথে নিরাপদ ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে ১১ দফা দাবি দাওয়া তুলে ধরা হয়। সভায় এক লিখিত বক্তব্য বলেন, সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাঙাচোরা সড়ক, দীর্ঘ যানজট, দুর্ঘটনা মধ্যে বাসের ট্রিপ-সংখ্যা ঠিক রাখতে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো হয়। বর্ষায় বেহাল রাস্তার কারণে এবারের ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সরকারী হিসেবে এখনও ৩৭ শতাংশ সড়ক-মহাসড়ক ভাঙাচোরা। এ ঈদে ঢাকা থেকে ৮০ লাখ, চট্টগ্রাম থেকে ২২ লাখ, সিলেট থেকে ৬ লাখ, খুলনা থেকে ১২ লাখ, রাজশাহী থেকে ৮ লাখ, রংপুর থেকে ৪ লাখ, বরিশাল থেকে ৪ লাখ লোক দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাবে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় যাতায়াত করবে আরও প্রায় সোয়া ২ কোটি যাত্রী। যাত্রী পরিবহনে সড়ক পথে মাত্র ৩৯ হাজার ৯৪৫টি বাস, ২৭ হাজার ১১৮টি মিনিবাস, ৩ লাখ ১০ হাজার ৮২১টি প্রাইভেটকার, ৩ লাখ অটোরিক্সা , ৪৩ লাখ প্যাডেলচালিত রিক্সা, ১৫ লাখ ব্যাটারিচালিত রিক্সা, ৫৫ হাজার মাইক্রোবাস, ২ হাজার টেক্সিক্যাব, ৭৫ হাজার হিউম্যান হলার রয়েছে। নৌপথে ২৫ শত ছোট-বড় লঞ্চ, ৪০ হাজার ট্রলার, ৮২ হাজার নৌকা, ২ হাজার স্পিডবোড। রেলপথে পূর্বাঞ্চলে ৪৮টি পশ্চিমাঞ্চলে ৪৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের পাশাপাশি ১২ জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন, ৭৩টি লোকাল ও কমিউনিটার ট্রেন যাতায়াতের বহরে রয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ কম। বাড়তি যা যোগান দেয়া হয় তা হলো সড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় কিছু বাস-মিনিবাস মেরামত করে বহরে সংযুক্ত করা, সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাস দূরপাল্লার বহরে সংযুক্ত করা, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাক পিকআপে যাত্রী বহন করা। রেলপথে প্রতিবছরের মতো কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ বগি মেরামত করে বহরে সংযুক্ত করার পাশাপাশি বেশ কয়েক জোড়া ট্রেন বাড়তি সার্ভিস হিসেবে যুক্ত করা হয়। নৌপথে গত কয়েক বছরে বেশ কটি নতুন যাত্রীবাহী লঞ্চ বহরে সংযুক্ত হলেও তা চাহিদার তুলনায় নগন্য বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। মহাসড়কের যানজট প্রবণ এলাকাগুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা ও বাজার উচ্ছেদ না হওয়ায় যানজটের কারণে যাত্রীবাহী বাসগুলো কাক্সিক্ষত সংখ্যক ট্রিপ দিতে না পেরে তা পুষিয়ে নিতে বেপরোয়া গতিতে চালানো হয় বলেই প্রতিবছর ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ে। গত বছর বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান মতে ঈদুল ফিতরে দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে ১৬৮টি দুর্ঘটনায় ২১২ জন নিহত ৮৯৬ জন আহত হয়েছিল। ঈদুল আজহায় ২১০টি দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন নিহত ও ১ হাজার ১৫৩ জন আহত হয়েছিল। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। এ কারণে গতবারের ঈদেও এ সড়কে দীর্ঘ যানজট হয়েছিল। উত্তরের ১৬ জেলার যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। এবারও একই শঙ্কা রয়েছে। ২০১৫ সালে এ মহাসড়কের কাজ শুরু হলেও এখনও শেষ হয়নি। রাস্তা প্রশস্ত করতে মহাসড়কের একপাশে মাটি কাটার কাজ চলছে। এতে একটু বৃষ্টি হলেই পুরো মহাসড়ক কর্দমাক্ত হয়ে পড়ছে। নিয়মিত যাত্রায়ও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে রাস্তায় ইট ফেলে গর্ত ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে।
×