ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নৃত্য নন্দনের আয়োজনে ওড়িশি নৃত্যের কর্মশালা

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৩ জুন ২০১৭

নৃত্য নন্দনের আয়োজনে ওড়িশি নৃত্যের কর্মশালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পূর্ব ভারতের উড়িষ্যা রাজ্য থেকে ওড়িশি নৃত্যের জন্ম। শাস্ত্রীয় এই নৃত্যশৈলী বাংলাদেশের নৃত্যপ্রেমীদের কাছে দারুণ সমাদৃত ও জনপ্রিয়। এ কারণেই ক্রমশই বাড়ছে বিশেষ আঙ্গিকের নৃত্যধারাটির চর্চা। সেই সুবাদে নৃত্য সংগঠন নৃত্য নন্দনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ওড়িশি নৃত্যের কর্মশালায়। কর্মশালাটি পরিচালনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান ওড়িশি নৃত্যশিল্পী শাশ্বতী গড়াই ঘোষ। নির্বাচিত ৫০ শিক্ষার্থী শিল্পী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। ওড়িশি নাচের প্রাথমিক পর্বসহ নানা কৌশল শেখানো হয় শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে সেসব কৌশল রপ্ত করে নবীন নৃত্যশিল্পীরা। ৬ জুন থেকে শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের মহড়া কক্ষে শুরু হওয়া কর্মশালার সমাপনী দিন ছিল সোমবার। কর্মশালায় আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল শিল্পকলা একাডেমি। সমাপনী দিনের দুপুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে। প্রদীপ প্রজ্বলন করেন শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন, ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) পরিচালক জয়শ্রী কু-ু, নৃত্য নন্দনের কর্ণধার শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীণ নৃত্যশিল্পী আমানুল হক ও বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান। সমাপনী পর্বের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিক্ষার্থীরা উপস্থাপন করে কর্মশালায় শিক্ষাপ্রাপ্ত ওড়িশি নাচের নানা কৌশল। পঞ্চাশ শিল্পীর নাচের মুদ্রার সঙ্গে নূপুরের নিক্কনে আলোড়িত হয়ে ওঠে মহড়া কক্ষ। উপস্থাপিত হয় ওড়িশি নাচের মূল ভিত্তিভূমির চারটি ভঙ্গিমা চৌকা, শামা, ত্রিভঙ্গি ও আভাঙ্গা। উঠে আসে পায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখার কৌশল। শিক্ষার্থীদের নাচ শেষে নিজের পরিবেশনা উপস্থাপন করেন নৃত্যশিল্পী শাশ্বতী গড়াই ঘোষ। তাঁর অনবদ্য পরিবেশনায় ভিন্ন মাত্রায় পায় সমাপনী আয়োজনটি। প্রথমেই উপস্থাপন করে হাতের ভারসাম্য বজায় রেখে ওড়িশি নাচে পায়ের কারুকার্য ও শক্তিমত্তা মেলে ধরা পরিবেশনা। এরপর একে উপস্থাপন করেন মঙ্গলাচরণ, বাট্টু ও পল্লবী শিরোনামের ওড়িশি নাচের তিনটি পৃথক ভঙ্গিমা। সব শেষে পরিবেশন নাচের সঙ্গে অভিনয়ের মেলবন্ধনে গড়া কৃষ্ণের জন্মকথা নামের ভঙ্গিমা। শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালবাসা জানিয়ে শাশ্বতী গড়াই ঘোষ বলেন, ছয়টি দিন তারা কঠোর অনুশীলন করেছে। শেখার প্রতি তাদের একাগ্রতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আশা করি, ভবিষ্যতে আবার আসবা ঢাকায় এবং এই শিক্ষার্থীদের ওড়িশি নাচের আরও কলাকৌশল জানতে সাহায্য করব। অনুভূতি প্রকাশ করে অহনা নামে কর্মশালার এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকদিন ধরেই ওড়িশি নাচের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই প্রস্তুতি পর্বটি অনেকখানি এগিয়ে গেল এই কর্মশালার মাধ্যমে। ছয়টি দিন কঠিন পরিশ্রম করলেও এখন ভাল লাগছে। কারণ, এই নৃত্যধারার কৌশলগত অনেক বিষয় আমরা রপ্ত করেছি। সমাপনী বক্তব্যে শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে দারুণ এক অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত হলো এ কর্মশালার মাধ্যমে। পরবর্তীতে এই শিক্ষার্থীদের আরও পরিপক্ক করে গড়ে তুলতে শাশ্বতী গড়াই ঘোষের পরিচালনায় আরেকটি কর্মশালার আয়োজন করব।
×