ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিজয়ী তিন বাঙালী কন্যাকে সংসদে অভিনন্দন

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৩ জুন ২০১৭

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিজয়ী তিন বাঙালী কন্যাকে সংসদে অভিনন্দন

সংসদ রিপোর্টার ॥ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিজয়ী তিন বাঙালী কন্যাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বলেন, বাঙালী তিন কন্যার এই বিজয় আমাদের ও বাঙালী জাতির জন্য গর্বের বিষয়। নারী উন্নয়ন ও নারী অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বাঙালী নারীরা নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। সত্যি আজ আমাদের গর্বের দিন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার সংসদ অধিবেশনের শুরুতেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, শেখ রেহেনার সুযোগ্য কন্যা ও বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকী অসাধারণ সাহস ও যোগ্যতা দিয়েই দুই দফা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বিজয়ী হয়েছেন। তার সঙ্গে আরও দুজন রুশনারা ও রূপা হক বিজয়ী হয়েছেন। এটা আমাদের ও বাঙালী জাতির জন্য গর্বের বিষয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ছাড়াও পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত আলোচনায় বিজয়ী তিন বাঙালী নারীকে অভিনন্দন জানান মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যে ব্রিটিশরা আমাদের প্রায় ২শ’ বছর শাসন করেছিল, সেই ব্রিটেনে আমাদের বাঙালী কন্যারা নির্বাচিত হয়ে আমাদের গৌরবান্বিত করেছেন। তিনজন নেত্রী (বাঙালী কন্যা) যারা পার্লামেন্টে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের অভিনন্দন জানাই। টিউলিপ রেজওয়ান সিদ্দিকী, রুশনারা আলী ও রূপা হক। এরা আমাদের জাতির গর্ব, দেশের গর্ব। তারা আমাদের সম্মানিত করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী টিউলিপ সিদ্দিকী মাত্র ৩৫ বছর বয়সে একজন সুবক্তা ও উচ্চ শিক্ষিত পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। অত্যন্ত সাহসী পার্লামেন্ট মেম্বার হিসেবে ব্রেক্সিট প্রশ্নে স্বেচ্ছায় লেবার পার্টির ছায়ামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নাতনি ও আমাদের শেখ রেহেনার সুযোগ্য কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকী। আমরা তার এই সাহসী নেতৃত্ব দেখে বিস্মিত হই। ব্রিটেনে কিভাবে একজন যোগ্য ও যুক্তিবাদী প্রার্থীকে বেছে নেয় তা আমরা জানি। টিউলিপ সিদ্দিকী তার কাজের মধ্য দিয়ে ব্রিটেনের মানুষের মন জয় করতে পেরেছেন। মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকী সাহস, অধ্যাবসায় নিয়ে ব্রিটিশ জনগণের মন জয় করেছে। ব্রিটিশ ভোটারদের মন জয় করেছে। একবার নয় একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছে। সে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করে কাউন্সিলর থেকে আজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা আজ বাংলাদেশের জনগণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবার আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, ব্রিটেনের জনগণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। টিউলিপ একদিন ব্রিটেনে মন্ত্রী হিসেবে নেতৃত্ব দেবে বলে আমরা আশা করি। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৬ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে টিউলিপ রেজোয়ান সিদ্দিকীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বেশিরভাগ বিট্রিশ ও ইউরোপিয়ান ভোটারদের মন জয় করে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। টিউলিপসহ যে তিন কন্যা বিজয়ী হয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে লন্ডনে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম আগামী ১৫ জুন সেমিফাইনালে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশার কথাও ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী পলক। আলোচনায় অংশ নিয়ে আরেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আজ আমাদের তিন নারী বিজয়ী হয়েছেন। নারী উন্নয়ন ও নারী অগ্রগযাত্রায় বাংলাদেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তারা নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। সত্যি আজ আমাদের গর্বের দিন। বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে আমাদের নারীরা জানিয়েছে যে, তারা পারে। ব্রিটেনে আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদেরই মাটির কন্যারা। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ। একবার নয় দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়ে সে প্রমাণ করেছে রক্ত কথা বলে। টিউলিপের বিজয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিলেন তারপরও তারা তাদের সন্তানদের সুযোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, আমাদের একজন মারা গেলে আমরা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ি। আর তারা কি নির্মমতার শিকার হয়েও নিজেদের জীবনকে পরিচালিত করছেন দেশ গড়ার কাজে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিস্টিক শিশুদের জন্য অবদান রেখেছেন। এই তিন বাঙালী কন্যার বিজয়ের মধ্যে অনেক কিছু শিক্ষনীয় আছে। আমাদের সন্তানরাও পারবে, তারা কেন পথভ্রষ্ট হবে?
×