ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টানা ছয় জয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১২ জুন ২০১৭

টানা ছয় জয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপের মূলপর্বের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইউরোপীয় অঞ্চলের ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে টানা ষষ্ঠ জয় পেয়েছে ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা। শনিবার রাতে নুরেমবার্গে দুর্বল সান ম্যারিনোর জালে গোলোৎসব করেছে তারা। জয় পেয়েছে ৭-০ গোলের বড় ব্যবধানে। জার্মানির হয়ে চোখ ধাঁধানো হ্যাটট্রিক করেন প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে অভিষেক হওয়া হোফেনহেইম স্ট্রাইকার সান্ড্রো ওয়াগনার। জার্মানদের হয়ে বাকি গোলগুলো করেন জুলিয়ান ড্রাক্সলার, আমিন ইউনেস, স্কোড্রান মুস্টাফি ও জুলিয়ান ব্রান্ট। গত নবম্বরে সান ম্যারিনোর মাঠ থেকে ৮-০ গোলে জিতে ফিরেছিল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এবারের বাছাইপর্বে এই নিয়ে ছয় ম্যাচে মোট ২৭ গোল করল জার্মানি। বিপরীতে গোল হজম করেছে মাত্র একটি। পরশু রাতের অন্য ম্যাচে হ্যারি কেনের অতিরিক্ত সময়ের গোলে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোনরকমে ড্র নিয়ে ফিরেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচের ফলাফল ২-২। অন্যান্য ম্যাচে কাজাখস্তানকে ৩-১ গোলে ডেনমার্ক ও রোমানিয়াকে একই ব্যবধানে হারিয়েছে পোল্যান্ড। জার্মানির সামনে পুঁচকে এক প্রতিপক্ষই সান ম্যারিনো। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের হিসেব কষলে বাংলাদেশের চেয়েও দুর্বল। কেননা তাদের র‌্যাঙ্কিং ২০৪তম। এ কারণেই প্রায় এক নতুন দল মাঠে নামিয়ে দেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। দ্বিতীয় সারির দল খেলিয়েও গোলোৎসব করতে সমস্যা হয়নি বিশ্বচ্যাম্পিয়দের। ঘরের মাঠে খেলতে নামা জার্মান দলে ছিলেন না টমাস মুলার, মারিও গোয়েটজে, সামি খেদিরা, ম্যানুয়েল নিউয়েরের মতো তারকারা। তারপরও গোল পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। ম্যাচের ১১ মিনিটে মিডফিল্ডার ড্রাক্সলারের গোলে শুরু। এরপর স্যান ম্যারিনোর জালে একের পর এক বল জালে জড়িয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম গোলের পর প্রথমার্ধে গোল হয়েছে আরও তিনটি। ১৬ মিনিটে দলের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ওয়াগনার। এরপর ২৯ মিনিট পরে আবারও ওয়াগনার জাদু। ডি বক্সের বাইরে থেকে দলের হয়ে তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই ফরোয়ার্ড। আর ৩৮ মিনিটে জুলিয়ান ব্রান্টের গোলে ব্যবধান ৪-০ করে বিরতিতে যায় জার্মানি।বিরতির পর খেলা শুরু হতে না হতেই স্কোর শিটে নাম লেখান স্বাগতিকদের ডিফেন্ডার মুস্টাফি। আর ৭২ মিনিটে দলের হয়ে ষষ্ঠ এবং নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন ব্রান্ট। জার্মানির শেষ গোলটি ওয়াগনারের। ৮৫ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। এই ম্যাচ জিতে ‘সি’ গ্রুপে সবার ওপরে জার্মানি। ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ ১৮। আর ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। স্কটল্যান্ড-ইংল্যান্ড ম্যাচ দ্বিতীয়ার্ধে জমজমাট হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডের এগিয়ে যাওয়ার পর শেষ তিন মিনিটে দুই গোল করে এগিয়ে যায় স্বাগতিক স্কটিশরা। এরপর অতিরিক্ত সময়ে গোল করে সমতা ফেরায় ইংলিশরা। এই ড্রয়ে ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইয়ে ‘এফ’ গ্রুপের শীর্ষে আছে ইংল্যান্ড। মাল্টাকে ২-০ গোলে হারানো সেøাভেনিয়া ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথমার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে থাকলেও গোলের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড। গোলে চারটি শট নেয়া হ্যারি কেন, এ্যাডাম লালানারা জালের দেখা পাননি। ২৯ মিনিটে ইংল্যান্ডের এগিয়ে যাওয়ার সেরা সুযোগটি নষ্ট হয়। এরিক ডিয়েরের প্রচেষ্টা রুখে দিতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গোলরক্ষক ক্রেইগ গর্ডন। কিন্তু ডিয়েরের হেড থেকে পাওয়া বলে কেনের নেয়া শট পোস্টে ঢোকার আগ মুহূর্তে গোললাইন থেকে ফেরান কিয়েরান টিয়েরনে। বিরতির পর ৭০ মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ডের বদলি নামা এ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইনের দারুণ গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। বদলি নামার পাঁচ মিনিটের মধ্যে ডানদিকে দারুণ গোলটি করেন তিনি। ইংল্যান্ডের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ ৮৭ মিনিটে মাটি করে দেয় স্কটল্যান্ড। জো হার্টকে প্রতিরোধের কোন সুযোগ না দিয়ে ফ্রিকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করেন লি গ্রিফিথস। ৯০ মিনিটে আরও একটি ফ্রিকিক থেকে গোল করে স্কটিশদের ২-১ গোলে এগিয়ে নেন গ্রিফিথস। ম্যাচের যোগ করা সময়ে (৯৩ মিনিট) দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। রাহিম স্টার্লিংয়ের বাড়ানো ক্রস থেকে পাওয়া বল থেকে নিখুঁত ভলিতে জালে জড়িয়ে দেন অধিনায়ক কেন। তাতেই সমতার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ১৯৬৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
×