ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফ্রেঞ্চ ওপেনের নতুন রানী জেলেনা

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১২ জুন ২০১৭

 ফ্রেঞ্চ ওপেনের নতুন রানী  জেলেনা

গোলাম মোস্তফা ॥ নতুন ইতিহাস গড়লেন জেলেনা ওস্টাপেঙ্কো। রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপকে পরাজিত করে ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। লাটভিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফ্রেঞ্চ ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়লেন তরুণ প্রতিভাবান এই টেনিস তারকা। শুধু পারফর্মেন্স দিয়েই যে বিশ্বকে জয় করা যায় তাই প্রমাণ করে দেখালেন জেলেনা ওস্টাপেঙ্কো। শনিবার রোলাঁ গ্যারোর ফাইনালে লাটভিয়ার এই টেনিস তারকা ৪-৬, ৬-৪ এবং ৬-৩ গেমে হারান সিমোনা হ্যালেপকে। তবে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের চার নাম্বার তারকা হ্যালেপ কিন্তু শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন। প্রথম সেট জিতে নেন ৬-৪ গেমে। শুধু তাই নয়, প্রথম সেট জয়ের পর দ্বিতীয় সেটেও ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরই ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জেতেন ওস্টাপেঙ্কো। লাটভিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ডসøাম শিরোপা জিতলেন। আর আট গ্রান্ডসøাম আসরে অংশ নেয়া ওস্টাপেঙ্কোর এটিই ট্যুর পর্যায়ের প্রথম শিরোপা। ঠিক ২০ বছর আগে গ্রান্ডসøাম দিয়ে ট্যুর পর্যায়ে প্রথম শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন গুস্তাভো কুয়ের্তেন। সেই ৮ জুন ১৯৯৭ ছিল ওস্টাপেঙ্কোর জন্মদিন। ১৯৩৩ সালের পর প্রথম অবাছাই হিসেবে ফরাসী ওপেনের শিরোপা জেতার ইতিহাস গড়লেন তিনি। প্যারিসের এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত ওস্টাপেঙ্কো। ম্যাচ শেষে নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বলার কোন ভাষা নেই। দারুণ খুশি আমি। এটা আমার স্বপ্নের জয়। আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না ২০ বছর বয়সে আমি গ্র্যান্ডসøাম জিততে যাচ্ছি। এটা সত্যিই দারুণ ব্যাপার এবং আনন্দেরও। আমি জানতাম হ্যালেপ অনেক বড় মাপের একজন খেলোয়াড়। কিন্তু আমি চেষ্টা করে গেছি আক্রমণাত্মক খেলতে। আমি প্রতিটি পয়েন্টের জন্য খেলেছি। আর সবকিছুই আমার পক্ষে চলে আসে। যেভাবে শেষ করতে পেরেছি তাতে আমি খুশি।’ ১৯৯০ দশকে জন্মগ্রহণকারী তৃতীয় মহিলা হিসেবে গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেলেন ওস্টাপেঙ্কো। ম্যাচ শেষে জানতে চাওয়া হয় তার আদর্শ কে? উত্তরে লাটভিয়ার এই টেনিস তারকা বলেন সেরেনা উইলিয়ামসের নাম। প্যারিসের এই টুর্নামেন্টে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে এবারের আসরে খেলতে পারেননি তিনি। সেরেনার অনুপস্থিতিতে এবারের ফ্রেঞ্চ ওপেন যে নতুন রানী পেতে যাচ্ছে তা ধারণা করা হয়েছিল টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই। শেষ পর্যন্ত টেনিস বোদ্ধাদের সেই ধারণাই বাস্তবতার মুখ দেখল। ওস্টাপেঙ্কো জানান, তার খেলার ধরন অনেকটাই সেরেনার মতো। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সে অসাধারণ চ্যাম্পিয়ন। আমি মনে করি সে আমার স্টাইলের মতোই খেলে। যে কারণেই সে আমার আদর্শ।’ টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ওস্টাপেঙ্কোর নাম জানা মানুষের সংখ্যা যে খুব কম ছিল তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে প্যারিসের এই টুর্নামেন্টই বদলে দিল তার ভাগ্য। তাই তো ওস্টাপেঙ্কো এখন উইম্বলডনেও ফেবারিট হিসেবে কোর্টে নামবেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, ঘাসের কোর্টে যে টেনিস খেলা যায় তা নাকি জানতেন না ওস্টাপেঙ্কো। ১৫ বছর বয়সে প্রথম যখন উইম্বলডনে খেলতে গিয়েছিলেন সেই স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘ঘাসের কোর্টে যখন প্রথম খেলি তখন এটা আমার ভাল লাগেনি। সত্যি বলতে, আমি বুঝতেই পারতাম না। এখানে কিভাবে অন্যরা খেলে তাও বুঝতে পারতাম না। ভাবতাম ঘাসের কোর্ট তো ফুটবলারদের জন্যই।’ এদিকে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন সিমোনা হ্যালেপ। কিন্তু সেবার তিনি হার মানেন রাশিয়ান টেনিসের গ্ল্যামারগার্ল মারিয়া শারাপোভার কাছে। এবার শারাপোভা খেলারই সুযোগ পাননি রোলাঁ গ্যারোয়। তাই সুযোগ ছিল রোমানিয়ান তারকার। কিন্তু এবারও ব্যর্থ তিনি। হারলেন অখ্যাত জেলেনা ওস্টাপেঙ্কোর কাছে। ম্যাচ শেষে হতাশ হ্যালেপ বললেন, ‘আমি দুঃখিত, আরও একবার জিততে পারলাম না। তবে এটা বিরাট এক অভিজ্ঞতা। এখন আমি ওস্টাপেঙ্কোকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এটা দারুণ ব্যাপার। তুমি চালিয়ে যাও কারণ তোমার বয়স তো বেশি নয়। আমি আমার দলের সবাইকে এবং বাবা-মাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এটা একটা কঠিন দিন ছিল। আমি খেলার সময় পেটে ব্যথা অনুভব করছিলাম। হয়তো আমি জয়ের জন্য তৈরি ছিলাম না। দেখা যাক সামনে পারি কিনা।’
×