ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট পরবর্তী পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাবনা

বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দকে আলাদা দেয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১০ জুন ২০১৭

বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দকে আলাদা দেয়ার আহ্বান

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দকে অন্যান্য খাত থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্রভাবে ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর বাজেট এ্যান্ড পলিসির গবেষকরা বলেছেন, প্রতিবছরই শিক্ষা খাতের বাজেট দেয়া হয় ধর্ম কল্যাণ, পরিবার কল্যাণ বা তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাতকে সংযুক্ত রেখে। এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। শিক্ষার সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয় জড়িয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষা খাতে বাজেটের পরিমাণ অস্পষ্ট রয়ে যায়। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন মিলনায়তনে বাজেট পরবর্তী পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও প্রস্তাবনায় তারা এ মত দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দীন, সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক তৈয়বুর রহমান প্রমুখ। বাজেটের সার্বিক দিক তুলে ধরে অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাবে লেনদেন, হিসাব স্থিতি ও স্থায়ী আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক হার বৃদ্ধি পেয়েছে যা ক্ষুদ্র আমানতকারীদের জন্য হতাশার। এটা অনৈতিক। এর পুরোটাই তুলে দেয়া উচিত। এই শুল্ক হার নিম্নবিত্তদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে। এর ফলে বিকল্প লেনদেন ও বিকল্প মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়ের প্রবৃত্তি বাড়বে, ছায়া অর্থনীতি সৃষ্টি হবে এবং অর্থনীতির বৈধ কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাজেট ব্যয়কে কার্যকর করতে বর্তমান অর্থবছর জুলাই-জুন পরিবর্তন করে এপ্রিল-মার্চ করার আহ্বান জানান পরিচালক বলেন, অর্থবছরের শেষের দিকে উন্নয়ন প্রকল্প সমূহের পর্যায়ক্রমিক সমাপ্তি করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। শেষ দুই মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় দেখানো হয়। অথচ আমাদের আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রকৃতি অনুসারে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সময় অপেক্ষাকৃত বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ থাকে যা উন্নয়ন কাজে বাধাস্বরূপ। আর্থিক বাস্তবতার বিবেচনায় এবং বাংলা দিনপঞ্জির ঐতিহ্য অনুসরণ করে অর্থবছর এর সময়সীমা এপ্রিল-মার্চ করলে সার্বিকভাবে বাজেট আরও সফল বাস্তবায়ন হবে। উচ্চশিক্ষা খাতে বাজেটের পরিমাণ স্বল্প বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে কী পরিমাণ অর্থায়ন করে তা তার উৎকর্ষের পরিচয় বহন করে। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের যে র‌্যাংকিং করা হয় সেখানে সবচেয়ে বড় বিবেচ্য বিষয় থাকে গবেষণা, সেমিনার, প্রকাশনা ও শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি। কিন্তু দুভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের জন্য এ সকল খাতে বরাদ্দ অত্যন্ত স্বল্প। এবারের বাজেটে নারীর জন্য উৎসাহমূলক কোন কিছু নেই বলে মনে করেন তিনি। সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারীদের বিশেষ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের জন্য কোন কর ছাড় নেই, কর মুক্ত আয়সীমার বৃদ্ধিও ঘটেনি, সেই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কোন বিশেষ পরিকল্পনা রাখা হয়নি। নারীর উন্নয়নে পৃথক নারী উন্নয়ন ব্যাংক চালু করা, নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ভ্যাট অব্যাহতি প্রাপ্তির সুযোগ, নারীদের ব্যাংক হিসাবে বিশেষ শুল্ক রেয়াত ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুদের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭-৮ শতাংশ করার পরামর্শ দেয়া হয়। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা এক বছর পর নিজেদের কোথায় দেখতে চাই সেটাই বাজেটে পরিকল্পনা করা হয়। উচ্চশিক্ষার যথাযথ ব্যবস্থাপনা আমাদের এদেশে হচ্ছে না।
×