ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করলেও রসুনের তেজ কমছে না

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১০ জুন ২০১৭

নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করলেও রসুনের তেজ কমছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাজারের তেজিভাব কাটতে শুরু করেছে। একমাত্র রসুন ছাড়া কমতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। রোজার শুরুতে পণ্যমূল্য নিয়ে বাজারে যে তেজিভাব লক্ষ্য করা গেছে তা এখন আর নেই। বাজেট ঘোষণার পর ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাও অনেকাংশে দূর হয়েছে। শুধু নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে আমদানিকৃত বিদেশী রসুনের দাম। প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৬০ টাকায়। দেশী ছোট দানার রসুন ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম কিছুটা কমে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭২-৭৫ টাকায় এবং ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ছোলা। চাল উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। বেগুনসহ শাক-সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। পেঁয়াজ এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। দেশী জাতীয় মাছের দাম চড়া। রাজধানীর কাওরানবাজার, ফকিরাপুল বাজার, ফার্মগেট কাঁচাবাজার এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ফকিরাপুল বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছেন শাজহানপুরের বাসিন্দা ফরিদ হাসান। তিনি জানালেন, রোজার শুরুতে চিনি, ছোলা, ভোজ্যতেল, সবজি ও বেগুনের দাম নিয়ে বিক্রেতার যে ধরনের মাতামাতি ছিল এখন আর সেই অবস্থা নেই। বরং অনেক পণ্যের দামই কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে চিনি, ছোলার দাম কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, সবজির দামও স্থিতিশীল। তবে চাল আগের মতো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের এই দাম সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া মাছ ও মাংসের দামও বেশি। এসব পণ্যের দাম কমে এলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসত। সরকারী সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, প্রতিকেজি সরু চাল ৫২-৫৮, চাল মাঝারি ৫৪-৫৬ এবং মোটা চাল ৪৫-৪৬, আটা খোলা ২৪-৩২, প্যাকেট প্রতিকেজি ৩০-৩২, ভোজ্যতেল সয়াবিন খোলা ৮৪-৮৬, সয়াবিন বোতল ৫ লিটার ৪৯০-৫২০, মসুর ডাল ৭৫-১৩৫, পেঁয়াজ দেশী ২৫-৩৫, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২০-২৫, ছোলা ৮০-৯০, চিনি ৭২-৭৫, খেজুর ১২০-২৫০, ডিম ২৭-২৮, গরু ৪৯০-৫২০, খাসি ৭০০-৭৫০ এবং ব্রয়লার মুরগি ১৪৫-১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ ও দেশী মাছের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। রুই মাছ জাত ও মানভেদে ২৫০-৫০০ এবং চিংড়ি সাইজভেদে ৫৫০-১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি সাইজের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায়। কাওরানবাজারের মাছ বিক্রেতা সুবল দাস বলেন, রোজা আসার আগে থেকেই মাছের বাজার চড়া। আর এখন চাহিদা বাড়ায় কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, রোজার মাসে বাড়তি দামেই মাছ খেতে হবে। এদিকে, সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। প্রতিকেজি গরুর মাংস নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রেতার কাছে ক্রেতা অসহায়। কোন ক্রেতা নির্ধারিত দামে মাংস চাইলে তাকে দু’চার কথা শুনিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতা। ক্রেতার অভিযোগ, নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে বিক্রেতা যে যার মতো দাম নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে পুরান ঢাকার মাংস ব্যবসায়ীরা কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না। টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ ॥ শব-ই-বরাতের পর থেকে টিসিবি ন্যায্যমূল্যে বাজারে চিনি, ছোলা, ভোজ্যতেল, খেজুর ও ডাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা টিসিবির ট্রাকসেল। কারণ টিসিবি ভর্তুকি দিয়ে বাজারের চেয়ে কম দামে এসব পণ্য ভোক্তার হাতে তুলে দিচ্ছে। কিন্তু কার্যক্রম সীমিত থাকায় ভোক্তা পুরোমাত্রায় টিসিবির সুবিধা নিতে পারছে না। ভোক্তারা বলছেন, ঢাকায় ট্রাকসেল কার্যক্রম আরও বাড়ানো উচিত। ঈদের সেমাই বাজারে ॥ ঈদ সামনে রেখে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ব্র্র্যান্ডে নতুন সেমাই এনেছে বাজারে। ভোগ্যপণ্য বাজারজাতকরণ করছে এ রকম সব কোম্পানির সেমাই বাজারে আসতে শুরু করেছে। উন্নত মোড়ক ও আকর্ষণীয় প্যাকেটের সেমাই ইতোমধ্যে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে। ফার্মগেট বাজারের মুদি দোকানদার মেহেদি হাসান জানান, এই ঈদে সেমাই একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। ইতোমধ্যে কোম্পানিগুলো ঈদের জন্য বিশেষ সেমাই তৈরি করে তা বাজারে নিয়ে আসছে। আগামী সপ্তাহনাগাদ পুরোদমে এসব সেমাই বিক্রি শুরু হবে।
×