ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোন দলেরই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই

সমঝোতা সরকার গঠনে প্রথম সুযোগ পাবেন টেরেসা মে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১০ জুন ২০১৭

সমঝোতা সরকার গঠনে প্রথম সুযোগ পাবেন টেরেসা মে

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের প্রাপ্ত ফলাফলে কোন দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাহলে সরকার গঠিত হবে কীভাবে। যে দল থেকে সবচেয়ে বেশি এমপি জয়ী হবেন সেই দলই কি সরকার গঠন করবে? সেটা নাও হতে পারে। সংসদের ৬৫০টি আসনে যে দল থেকে সবচেয়ে বেশি এমপি নির্বাচিত হন সাধারণত সেই দলকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সেই দলের নেতাই প্রায় সবসময়ই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু কোন দলই স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে যে দল দ্বিতীয় স্থান পাবে সে দলেরও অন্য দলের সহযোগিতায় সরকার গঠন করার সম্ভাবনা আছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সবচেয়ে সহজ পথ হলো হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল তারাই যাদের দল থেকে সর্বাধিক সংখ্যক এমপি নির্বাচিত হয়Ñ অর্থাৎ অন্য সব দল থেকে নির্বাচিত মোট এমপির থেকে বেশি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে মোট ৩২৬টি আসনে জিততে হবে। ৩২৬টি আসন পেলে সংসদে সেই দল নতুন আইন প্রণয়নের ক্ষমতা অর্জন করে। কোন দল যদি এককভাবে ৩২৬টি আসন না পায়, তাহলে সেটা হবে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট অর্থাৎ একাধিক দলকে জোটবদ্ধভাবে ৩২৬টি আসন পেতে হবে। যেটা হয়েছিল ২০১০ এর সাধারণ নির্বাচনে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবেন এবং ডাউনিং স্ট্রিটেই বসবাস করবেন যতক্ষণ না কারা নতুন সরকার গঠন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ ক্ষেত্রে দলের নেতাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক চলবে। তারা চেষ্টা করবে জোট গঠন করে একটা সরকার গঠন করতে অথবা কনজারভেটিভ দলের নেতা টেরেসা মে অথবা লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে প্রধানমন্ত্রী করে হয়ত কোন একটা সমঝোতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করতে। অথবা দুই দলের মধ্যে কোন একটি দলের নেতা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে তারা সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবেন এ ভিত্তিতে যে যখন সংসদে আইন পাস করতে হবে, তখন ছোট দলগুলোর সমর্থন তারা নিশ্চিতভাবে পাবেন। সমঝোতাভিত্তিক সরকার গঠনে টেরেসা মেকে প্রথম সুযোগ দেয়া হবে এবং দেন-দরবার চলাকালীন তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় থাকবেন। এটা যদি স্পষ্ট হয় তিনি এ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন এবং জেরেমি করবিন সফল হয়েছে তাহলে টেরেসা মেকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে টেরেসা মে তার প্রয়াস চালানোর পাশাপাশি জেরেমি করবিনও এ চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবেন। মের সামনে যত বিকল্প আছে সব তিনি চেষ্টা করার পরই যে করবিন আলোচনা শুরু করতে পারবেন, তা নয়। তারা একইসঙ্গে অন্য দলগুলোর সঙ্গে দর-কষাকষি, দেন-দরবার চালিয়ে যেতে পারবেন। প্রথম দফায় চূড়ান্ত সময়সীমা দেয়া হবে ১৩ জুন পর্যন্ত। নতুন সংসদ শুরু হবে সেইদিন। মেকে ক্ষমতায় থাকতে হলে ১৩ জুনের মধ্যে একটা সমঝোতা সম্পন্ন করতে হবে। দুই দলের জন্য একমাত্র পরীক্ষা হলো সংসদে কোন নতুন আইন পাস করানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভোট তাদের আছে সেটা প্রমাণ করা। ১৯ জুন রানী তার ভাষণের মাধ্যমে সংসদের অধিবেশন শুরু করবেন। কনজারভেটিভ ও লেবার সংখ্যালঘু সরকার গড়তে পারে যেখানে তাদের এমপিরাই সব মন্ত্রী পদে থাকবে। তবে অন্য দলের এমপিদের ভোট ছাড়া তারা সংসদে নতুন কোন আইন পাস করতে পারবে না। ব্রিটেনে অতীতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে সরকার গঠনের নজির আছে। তবে এ ধরনের সরকার তেমন স্থায়ী বা সফল হয় না। ২০০৭ এবং ২০১১ সালে স্কটল্যান্ডে সংখ্যালঘু সরকার ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু এ ধরনের সরকার কার্যকরভাবে পরিচালনা কঠিন। কারণ সবরকম আইন পাসের জন্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে অনবরত দেন-দরবার করতে হয়, যেটা খুব সহজ নয়।-বিবিসি
×