ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুভ্রা রানী চন্দ

মিষ্টি আমার মা

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৯ জুন ২০১৭

মিষ্টি আমার মা

ছোট্ট ‘মা’ শব্দটির ব্যাপকতা ও পরিধি বিশাল। অপূর্ব জাদুময়ী সুধাসম ও সুন্দর সে নাম ‘মা’। মায়া, মমতা, স্নেহ, ভালবাসা ও আবদারের নাম ‘মা’। পরম নির্ভরতা ও স্নেহশীতল ছায়া হচ্ছে ‘মা’। জীবনের প্রকৃত ও একমাত্র বন্ধুু ‘মা’। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে, আনন্দ-বেদনায় যাঁর স্নেহশীতল আশীর্বাদ ও নির্ভরতার হাত সর্বদাই মাথার ওপর থাকে-তিনি ‘মা’। জীবনের কঠিনতম বিপদের সময় যে নামটি অন্তর-গভীরে ভেসে ওঠে এবং অজান্তেই মুখনিঃসৃত হয় সেটি শুধুই ‘মা’। সন্তানের মঙ্গল কামনায় মায়ের ত্যাগের তুলনা নেই। শুধুমাত্র মৌলিক চাহিদা পূরণই নয় পরিবার কিংবা বাইরের ঝড় ঝাপটা থেকে সন্তানকে নিরাপদ রাখতে পরম মমতায় তাকে বুকে আগলে রাখেন মা। তাকে সুসন্তান তৈরি করতে নানা বৈরী পরিস্থিতি অতিল্ডম করেন মা। সন্তানের সম্পর্কে কোন অনুযোগ মা সহজে মেনে নেন না বা নিতে পারেন না। তার অর্থ এই নয় যে, মা সন্তানের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন। বরং সন্তানের মুখের হাসি, তার ভাল থাকাই মায়ের একমাত্র কামনা। সন্তানের চাওয়া পূরণ করতে মা তার জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করতেও প্রস্তুত থাকেন। কোন প্রতিদানের জন্য নয়, শুধুমাত্র সন্তানের সুখের জন্য। সন্তান কাছে দূরে যেখানেই থাকুক না কেন মায়ের চিন্তার শেষ থাকে না। অনেক সময় সন্তান খানিকটা বিব্রত হয় মায়ের দুশ্চিন্তায়। সন্তানের সাফল্য কিংবা তার প্রশংসা মাকে দেয় অপার শান্তি ও ভাললাগা। স্রষ্টার কাছে নিয়ত প্রার্থনা তার সন্তানকে যেন তিনি নিরাপদে নির্বিঘেœ রাখেন; তার জীবনের সব চাওয়া-পাওয়া যেন পূরণ হয়; যা কিছু কল্যাণকর তাই দিয়ে স্রষ্টা যেন তার সন্তানকে পরিপূর্ণ করেন, তার চলার পথ নির্বিঘœ করেন, প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে তিনি যেন তাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে সুস্থ ও সুন্দর রাখেন। সন্তানই মায়ের শ্রেষ্ঠ ধন। পরম মমতা ও যতেœ মা তাকে আগলে রাখেন। মায়ের মতো এমন মনোবিজ্ঞানী বুঝি পৃথিবীতে আর কেউ নেই যিনি সন্তানের মুখ দেখেই বুঝে যান তার মনের কথা। দূর থেকে সন্তানের কণ্ঠস্বর শুনেও মা বোঝেন কেমন আছে সে। নিত্যদিনের সমাজ সংসারের টানাপোড়েন দুঃখ হতাশা ব্যর্থতাকে বুকে চেপে তার সব কষ্ট কিংবা কান্নাকে আড়াল করে হাসিমুখে সন্তানের আব্দার পূরণ করেন মা। সন্তান কোন ভুল করলে পরম মমতায় মা তাকে সে ভুল শুধরে দেন। এখনকার মায়ের দায়িত্ব অনেক বেশি। সমাজ বদলেছে। আধুনিক হয়েছে। তাতে মায়ের আদর্শের কোন হেরফের হবে না। হেরফের হবে ধরনের। সুসন্তান হবার সব মন্ত্রই শেখান প্রথমত মা। তাই সৎ পথে চলা, সত্যি কথা বলা, সম্মান-স্নেহ করা, সকলকে ভালবাসা, কাজে ফাঁকি না দেয়া, সময়ের কাজ সময়ে করা, প্রকৃতিকে ভালবাসতে শেখা, আর্তমানবতার সেবা করা, অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করতে শেখা, দেশকে ভালবাসা এসব কিছুই খুব সচেতনভাবে শেখাতে হবে মাকেই। বিশ্বের অগ্রগামিতা তবে অবশ্যসম্ভাবী। -শুভ্রারাণী চন্দ। অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
×