ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদ সভায় আহ্বান

হেফাজতকেও রুখতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৯ জুন ২০১৭

হেফাজতকেও রুখতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হেফাজতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বামপন্থীদের মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিজ্ঞান লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী অজয় রায়। তিনি বলেন, হেফাজতের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ সকল বাম সংগঠনকে একত্রে রাজপথে নামতে হবে। হেফাজতের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সুলতানা কামালসহ প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা-হামলাও হুমকির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ’ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অজয় রায় বলেন, কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দেয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি ভুল সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের পর হেফাজত ইসলাম আস্কারা পেয়েছে। কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি বাতিল করতে হবে। তাদের নির্দেশ অনুযায়ী পাঠ্য পুস্তকে সংশোধন করা হয়েছে। যা ভবিষ্যত প্রজন্মের বিকাশকে রীতিমত বাধাগ্রস্ত করছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, আমরা এখন অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছি। সরকার ২০১৩ সালেও বলেছিল হেফাজত মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আজ তাদের সঙ্গে হেফাজতের সখ্যতা। তিনি বলেন, এখন বিএনপি সরকার হলে আমাদের ভাষার পরিবর্তন হতো। আজ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা হুমকির মুখে। বৈষম্যমুক্ত অসা¤প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়তে আমাদের দৌড় প্রেসক্লাব পর্যন্ত। এ সময় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, হেফাজত দেশ বিরোধী এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের ১৩ দফা ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা ভাংচুর শুরু হয়েছে। তারা ২০১৩ সালে যে তা-ব করেছে তার বিচার এখনও শুরু হয়নি। শাহরিয়ার কবির প্রশ্ন রেখে বলেন, হেফাজতের তা-বের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো কোথায় গেল? সুপ্রীমকোর্টকে হুমকিদাতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নারায়ণগঞ্জের ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেন, দেশে এখন দুর্বৃত্ত রক্ষার রাজনীতি চলছে। ভোটের রাজনীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে গিলে খাচ্ছে। সা¤প্রদায়িক শক্তিকে রাষ্ট্র ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। জামাত হেফাজতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এ সময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, জাতীয় মসজিদকে অপরাজনীতির কেন্দ্রে পরিণত করেছে হেফাজত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিপন্ন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কোন ভুলের কারণে দেশে সা¤প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সেটা খুঁজে বের করতে হবে। জামাতের মতো হেফাজতকেও প্রতিহত করতে হবে। শাসক গোষ্ঠী হেফাজতকে ভাড়াটিয়া সংগঠন হিসেবে ব্যবহার করছে। বক্তারা আরও বলেন, আজ হেফাজত ঠিক করে দিচ্ছে আমাদের মেয়েদের বিয়ের বয়স কত হবে। আমরা কোথায় ভাস্কর্য বসাবো। হেফাজত একটি অন্ধকার দল। যেসব টকশোতে হেফাজত নেতাদের আনা হবে তাদের বর্জন করারও আহ্বান জানান তারা। তারা বলেন, বিএনপি-জামাত সরকারের মতো আগামীতে আওয়ামী হেফাজত সরকার বলা হবে। লুটপাটের অর্থনীতির মধ্যে উন্নয়ন দেখাচ্ছে সরকার। অজয় রায়ের সভাপতিত্বে ‘সুলতানা কামালসহ প্রগতিশীল নাগরিকদের হত্যা-হামলাও হুমকির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ’ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ, নাট্যব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, সারা জাকেরসহ মানবাধিকার ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
×