ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ি থেকে উচ্ছেদ নিয়ে মওদুদের রিট, শুনানি ২ জুলাই

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৯ জুন ২০১৭

বাড়ি থেকে উচ্ছেদ নিয়ে মওদুদের রিট, শুনানি ২ জুলাই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ‘বিনা নোটিসে’ গুলশানের বাসা থেকে উচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের করা রিটের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২ জুলাই। বৃহস্পতিবার শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে আদালত পরবর্তী শুনানির এ দিন নির্ধারণ করে। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। শুনানি শুরুর পর আদালত জানতে চায়, আপনারা অর্ডার চান না রুল চান? যদি অর্ডার চান তবে উভয়পক্ষকে শুনতে হবে। এ্যাটর্নি জেনারেল এর বিরোধিতা করলে আদালত শুনানি মুলতবি করে। নোটিস ছাড়াই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সকালে ওই রিট আবেদন করেন মওদুদ। সেই সঙ্গে গুলশান এভিনিউয়ের ১৫৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে ওই বাড়ির নক্সায় কোন ধরনের পরিবর্তন না করা এবং পজিশন ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দুটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশও চেয়েছেন তিনি। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও এ রিটে বিবাদী করা হয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী, এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। শুনানি শুরু হলে এ জে মোহাম্মাদ আলী কোন ধরনের নোটিস ছাড়া উচ্ছেদ অভিযানকে ‘আইনের লঙ্ঘন’ হিসেবে বর্ণনা করে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনাসহ রুলের আর্জি জানান। এ সময় নির্দেশ ও রুল জারির বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ মামলায় একটি লম্বা কাহিনী আছে। শুনানি করতে সময় প্রয়োজন। তাছাড়া এ বিষয়ে নিম্ন আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন। বিচারক এ সময় বলেন, ‘আজ আর এক ঘণ্টা সময় আছে। কাল থেকে অবকাশ শুরু হবে। এ মামলায় উভয়পক্ষকে শুনতে হবে। এজন্য সময় প্রয়োজন। আপনারা হয় অবকাশের পর আসেন, না হয় অবকাশকালীন বেঞ্চে যান।’ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন পরে সাংবাদিকদের বলেন, রিটের শুনানি অবকাশের পর অর্থাৎ ২ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। গুলশানের বাসা থেকে উচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মওদুদ আহমদ নিজেই রিট দায়ের করেন। তার আগে বুধবার গুলশান-২-এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাসায় অভিযান চালিয়ে বাসার দখল নেয় রাজউক। মওদুদ আহমদের নাটক ভালভাবে প্রচার হচ্ছে ‘বাড়ি ছাড়া নিয়ে গণমাধ্যমে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের নাটক ভালভাবে প্রচার হচ্ছে। অথচ আমার বিস্তারিত বক্তব্য প্রচার হচ্ছে না’- এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যেসব বিষয় বলেছি, কিছু কিছু মিডিয়া ছাড়া তা সম্পূর্ণ প্রচার হয়নি। কিন্তু অন্য সবাই যা বলেছে তার সবই প্রচার হয়েছে। মাহবুবে আলম বলেন, মওদুদের বাড়ির প্রকৃত মালিক একজন প্রবাসী নারী। তিনি মারা যাওয়ার পর বাড়িটি রাষ্ট্রের হয়ে যায়। এ বাড়ি নিয়ে মওদুদ আহমদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পাঁচ মাস আগেই মারা যান তিনি। তার কোন উত্তরসূরি ছিল না। অথচ মৃত মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করে তা নিজের নামে করে নিয়েছেন। তিনি কখনই বলেননি যে, তিনি এ বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ঢুকেছেন। মাহবুবে আলম আরও বলেন, বাড়িটি যে ওনার ভাইয়ের নয় তা মামলায় উঠে এসেছে। সেহেতু ভাইয়ের পক্ষে কী করে তিনি এ বাড়ি দখলে রাখেন? পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্ট্রে কোন আইনজীবী এমন করলে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে বাড়ি ছেড়ে দিতেন বলেও মন্তব্য করেন এ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি আরও বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদের বিরুদ্ধে বাড়ি নিয়ে প্রতারণার মামলা করা হবে কি-না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে রিভিউয়ের রায় প্রকাশের পর। পুলিশ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে পুলিশ দিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাড়ি দখল করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আদালতের আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মওদুদ আহমদকে সংবিধান অনুযায়ী নয়, বেআইনীভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। কাউকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার পূর্বে ৩০ দিনের নোটিস প্রদানের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে মওদুদ আহমদকে বিনা নোটিসেই উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাড়িটি ব্যক্তিমালিকানাধীন। তাই এটি দখল করা সরকার বা রাজউকের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।
×