ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষ আদালতে চরম অব্যবস্থাপনা, হাজিরা দিতে গিয়েছিলাম এসি বন্ধ ছিল ॥ খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৯ জুন ২০১৭

বিশেষ আদালতে চরম অব্যবস্থাপনা, হাজিরা দিতে গিয়েছিলাম এসি বন্ধ ছিল ॥ খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশেষ আদালতে চরম অব্যবস্থাপনা বলে উল্লেখ করে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন হলে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) আয়োজিত ইফতার মহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী বিশেষ আদালতের ব্যবস্থাপনার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, মামলার হাজিরা দিতে আদালতে গিয়েছিলাম। এ সময় আদালত কক্ষের এসি বন্ধ ছিল। সেখানে এত গরম। ওখানে অনেক এসি ছিল কিন্তু তারা এসিগুলো চালায় না। তারপর চিল্লাচিল্লি শুরু হলে এসি চালু করে। এসির রিমোট লুকিয়ে রাখে কত কি যে করে। কত নাটক ওখানেও হতে থাকে। আমি তো গরমের মধ্যে অস্থির। গরমে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম আমরা। অনেক চিল্লাচিল্লি করার পর শেষের দিকে একটু এসি দিয়েছে। এখনও কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে। এই বলে তিনি বিএনপি মহাসচিবকে বক্তব্য রাখার আহ্বান জানান। পরে মির্জা ফখরুল সরকারের প্রতি বিষোদগার করে বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার সকালে জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার হাজিরা দিতে পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী বিশেষ আদালতে যান। সে সময়ের আদালতে অব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে এই রোজার মাসেও আমরা শান্তিতে নেই। আমরা আশা করেছিলাম, এই রোজার মাসে সরকার নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে কিছুটা বিরত থাকবে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাড়ির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। আজকেও আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলায় কোর্টে যেতে হয়েছিল। আবারও ৭ দিন পরে তাকে কোর্টে যেতে হুকুম হয়। এ থেকে বোঝা যায় কি ধরনের নির্যাতন তারা করছে। উদ্দেশ্য একটাই বিরোধীদল বিশেষ করে খালেদা জিয়াকে দূরে সরিয়ে রেখে তারা একতরফা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু একতরফা নির্বাচন দেশের জনগণ হতে দেবে না। বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পাশে বসে মাগরিবের আজানের ৫ মিনিট আগেই ইফতার করেছেন ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন শীর্ষ নেতা। তারা সবাই মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ডান পাশে বসেছিলেন। ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচলায় খালেদা জিয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন। এরপর হয় মোনাজাত। মোনাজাত শেষ হতেই জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপা চেয়ারম্যান রেহানা প্রধানসহ কয়েকজন নেতা ইফতার করা শুরু করেন। ইফতারের ৫ মিনিট বাকি থাকায় পেছন ও সামনে থেকে কয়েকজন বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এ সময় মঞ্চের সামনে বসা অনেকের মধ্যে হাসির রোল পড়ে। পরে ২০ দলীয় জোটের এক সাংবাদিকদের কাছে বলেন, হঠাৎ ১টি মোবাইল থেকে আজানের শব্দ শোনা গেলে এ বিভ্রাট ঘটে। এ সময় এক নেতা হাস্যরস করতে গিয়ে বলেন, তারা ঢাকায় বসে বরিশালের সময়ে ইফতার সারলেন। এনডিপি সভাপতি খোন্দকার গোলাম মূর্তজার সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সাহাদত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান, জাগপা সভাপতি রেহানা প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোন্তাফিজুর রহমান ইরানম ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গনি, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, রুহুল আলম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
×