ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হিসাব পাল্টে দিল পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৯ জুন ২০১৭

হিসাব পাল্টে দিল পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত ৮ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোন ঘরোয়া পরিবেশ পায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ঘরোয়া সিরিজগুলো আয়োজন করতে হয়েছে আরব আমিরাতে। কিন্তু এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে ইংল্যান্ডে এসে একেবারে নিজেদের মনমতো পরিবেশ পেয়েছে তারা। দুই ম্যাচেই পেয়েছে বিপুল সমর্থন। আর সে কারণেই বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছে পাকরা। সেই প্রেরণাতেই বুধবার রাতে এজবাস্টনে বিশ্বের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েছে। আগে ব্যাট করে অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ৮ উইকেটে তুলেছিল মাত্র ২১৯ রান। জবাবে ২৭ ওভারে ৩ উইকেটে ১১৯ রান তোলার পর বৃষ্টির কারণে আর খেলা হয়নি। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ১৯ রানে জয় পায় পাকরা। এ জয়ে সেমিতে ওঠার সম্ভাবনা ভালভাবেই বাঁচিয়ে রেখেছে সরফরাজ আহমেদের দল। পাক অধিনায়ক তাই দারুণ সন্তুষ্ট ইংল্যান্ডের মাটিতে বিপুল দর্শক সমর্থন পেয়ে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে শুরুটাই হয়েছে বাজেভাবে হেরে। কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি সরফরাজ আহমেদের দল। তবে মাঠে ঠিকই পাক ক্রিকেটারদের সমর্থন দিতে কয়েক হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। বুধবার রাতে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে বাঁচা-মরার লড়াই ছিল পাকিস্তানের। হারলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে আগাম বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত। মাঠে প্রায় ১৬ হাজার দর্শক এসেছিলেন এদিন যার সিংহভাগই ছিল পাক সমর্থক। আর এতেই উজ্জীবিত ছিল পাক ক্রিকেটাররা। সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে বোলিংয়ে নামার পর। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্ত ব্যাটিং লাইনআপকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছেন পাক পেসাররা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৮ উইকেটে ২১৯ রান তুলতে পেরেছে প্রোটিয়ারা ডেভিড মিলারের অপরাজিত ৭৫ রানের সুবাদে। বার্মিংহামে অবশ্য এমনিতেই এশিয়ারই অধিবাসী অনেক। সে কারণেই পাকিস্তান দল একটু বেশিই সমর্থন পেয়েছে। জবাব দিতে নেমে শুরুর দিকে কিছুটা ঝামেলায় পড়লেও বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজের দৃঢ়তায় ভালভাবেই এগোচ্ছিল পাকরা। ২৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রানও তুলেছিল। কিন্তু বৃষ্টির দাপটে আর খেলাই হয়নি। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি ১৯ রানের জয় পাইয়ে দেয় পাকদের। এরপর সরফরাজ বলেন, ‘এই অনুভূতিটাই আমরা দীর্ঘদিন মিস করে যাচ্ছি। কারণ পাকিস্তানে খেলতে পারছি না। অনেক বৈচিত্র্য থাকতে পারতো। এখানে দর্শকরা আমাদের অনেক সমর্থন দিচ্ছে। আর সে কারণেই খেলোয়াড়রা অনেক উজ্জীবিত হয়েছে।’ লাহোরে ২০০৯ সালে সফররত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ পাকিস্তানের মাটিতে। কিন্তু সুদূর ইংল্যান্ডের মাটিতে বিপুল দর্শকদের চিৎকার ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ শুনে রীতিমতো পাক ক্রিকেটারদের মধ্যে উত্তেজনা এবং বাড়তি প্রেরণা কাজ করেছে। এ বিষয়ে সরফরাজ বলেন, ‘আমার মনে হয় এদিন পার্থক্যটা ছিল আমাদের বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। হাফিজ ও ওয়াসিম দারুণ বোলিং করেছেন। তারা আমাদের ভেতর যে চাপটা ছিল সেটাকে কাটিয়ে দিয়েছেন। আমরা দ্রুত কিছু উইকেট নিতে পেরেছি এবং যদি আগাম উইকেট পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে যে কোন দলকেই চাপে রাখা যায়।’ কোচ মিকি আর্থারসহ স্টাফ হিসেবে যারা দলের সঙ্গে কাজ করছেন তাদেরও কৃতিত্ব রয়েছে বলে মনে করেন সরফরাজ। ব্যাটসম্যানরাও এদিন বেশ ধৈর্যের প্রমাণ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সরফরাজ বলেন, ‘আমরা পরাজিত হওয়ার পরও তারা পাশে ছিলেন এবং আমাদের ভাল সমর্থন দিয়েছেন। আর তাদের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার কারণেই আমরা একটা ভাল ম্যাচ খেলতে পারলাম।’
×