ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রিংলা-কাদের বৈঠক

বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি

প্রকাশিত: ০৫:০১, ৮ জুন ২০১৭

বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবারও তিস্তা চুক্তি নিয়ে আশার কথা শোনা গেল। যদিও কবে কখন চুক্তি হবে দিনক্ষণ জানা যায়নি, চূড়ান্তও হয়নি। তবুও সরকারের আশা চুক্তি হবে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভারতের সঙ্গে আলোচিত তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন হবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার দুপুরে মহাখালীর সেতুভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের আমলেই তিস্তা চুক্তি হবে। ভারত এ ব্যাপারে অনড় রয়েছে। আমরাও আশাবাদী।’ তিনি বলেন, ‘ফেনী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৮ জুলাই ঢাকায় আসবেন। তখন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভারত সরকার কাজ করছে। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আপত্তির মুখে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তির বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ চুক্তি নিয়ে আবারও আশাবাদের কথা জানান তারা। তিস্তা চুক্তি সময়মতো নাও হতে পারে গত সোমবার ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই সাক্ষাতে বাংলাদেশের সড়ক, রেল ও নদীপথের অবকাঠামো উন্নয়নসহ দ্বিপক্ষীয় নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও মমতার আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। এরপর ক্ষমতার পালাবদলে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে এলেও এখনও তিস্তার জট খুলতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় মোদি বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং অব্যাহত প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমি আপনাকে (শেখ হাসিনা) এবং বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমার ও আপনার সরকারই তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে পারবে। তিস্তা চুক্তি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও স্বীকার করে নেন মোদি। পশ্চিমবঙ্গ নিজেই পানি পাচ্ছে না দাবি করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে আপত্তি মমতার। কোন পক্ষের ক্ষতি না করে তিস্তার সমাধানের উপায় খুঁজতে দিল্লীতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। শেখ হাসিনার সফরের আগে এই ধরনের উদ্যোগ মোদির তৎপরতার ইঙ্গিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। যদিও শেষ পর্যন্ত তিস্তা চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। হায়দ্রাবাদ হাউসে শীর্ষ বৈঠকের পর খুলনা-কলকাতা ট্রেন উদ্বোধনে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক শেষে শেখ হাসিনা বলেন, তিস্তা চুক্তিসহ পানি ব্যবস্থাপনার নানা বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়েছে। পদ্মা-গঙ্গা ব্যারাজ এবং অববাহিকা ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেন হাসিনা। আমার ঐকান্তিক বিশ্বাস, এই সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানে আমরা ভারতের সমর্থন পাব,” বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
×