ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ পাহারা বসেছে

বাড়ি ছাড়তেই হলো মওদুদকে, দখল নিল রাজউক

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ৮ জুন ২০১৭

বাড়ি ছাড়তেই হলো মওদুদকে, দখল নিল রাজউক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত গুলশানের লোভনীয় দেড় বিঘার বিশাল বাড়িটি দখলে রাখতে পারলেন না প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সুপ্রীমকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে বুধবার ৩৬ বছর দখলে থাকা গুলশান এভিনিউয়ের ১৫৯ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে উচ্ছেদ করে রাজউক। তবে মওদুদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে মালামাল নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। সেখান থেকে মালামাল তার গুলশান-২-এর ৫১ নম্বর সড়কে কনকর্ড প্যানারোমা নামের ৬তলা ভবনের ৫মতলায় ফ্ল্যাটে নেয়াা হয়। তবে বাড়িতে পুলিশ প্রহরা রয়েছে। এদিকে বাড়ি উচ্ছেদের সময় ব্যারিস্টার মওদুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি এখন নিরুপায়। বিরোধী রাজনীতি না করলে এ অবস্থা হতো না। রাজউকের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার অলিউর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, বুধবার বেলা ১২টার দিকে গুলশান এভিনিউয়ের ১৫৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে মওদুদ আহমদের বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। এ সময় বাড়ির গ্যাস, বিদ্যুত ও পানি সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। উচ্ছেদের পর বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রতিটি কক্ষ তালাবদ্ধ করা হয়। এটা রাজউকের সম্পত্তি। দীর্ঘদিন ধরে মওদুদ আহমদ বাড়িটি দখল করে রেখেছিলেন। সুপ্রীমকোর্টের রায়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ হেরে যান। আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেয়ায় আমরা ১ একর ১৩ কাঠা ১৪ ছটাকের এ বাড়িটি দখলমুক্ত করেছি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমরা বাড়িটি দখলমুক্ত করার অভিযান শেষ করি। মওদুদ আহমদ দীর্ঘ ৩৬ বছর দশক ধরে গুলশানের এ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। আদালতের রায়ে বুধবার দুপুর ১২টায় বাড়িটি দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজউকের আইন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পুলিশও অভিযানে অংশ নেয়। উচ্ছেদ অভিযানের সময় ওই বাড়ির সামনে বুলডোজারও রাখা হয়। সন্ধ্যার আগেই বাড়িটির উচ্ছেদ অভিযান শেষ করে। গুলশান-২ নম্বরের ১৫৯ নম্বর বাড়িতে মওদুদ আহমেদ বসবাস করে আসছিলেন ১৯৭২ সাল থেকে। কিন্তু ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে মওদুদের ভাইয়ের নামে ওই বাড়ির দখল নেয়া হয়েছে অভিযোগ করে দুদক মামলা করলে চার বছর আগে আইনী লড়াই শুরু হয়। ওই মামলায় মওদুদ সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গেলেও রায় তার বিপক্ষে যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আপীলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও গত রবিবার তা খারিজ হয়ে য়ায়। তবে চূড়ান্ত রায় বিপক্ষে গেলেও সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মওদুদ আহমদ দম্ভ করেই বলেছিলেন তিনি বাড়ি ছাড়বেন না এবং এ বাড়িতেই থাকবেন। অবশ্য বুধবার বাড়ি উচ্ছেদের সময় তাকে মানসিকভাবে বিমর্ষ মনে হয়েছে। দুদকের দাবি, বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানী নাগরিক মোঃ এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির (রাজউক) কাছ থেকে এক বিঘা ১৩ কাঠার এ বাড়ির মালিকানা পান এহসান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তার স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন এহসান। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে থাকা একটি আমমোক্তারনামার ভিত্তিতে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন। কিন্তু বাড়িটির নামজারি কার্যক্রম নিয়ে জটিলতা ছিল। মনজুর আহমেদ তার অনুকূলে নামজারি করার জন্য হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সালের ১২ আগস্ট হাইকোর্ট এক মাসের মধ্যে মওদুদ আহমদের ভাইয়ের অনুকূলে নামজারি সম্পন্নের জন্য নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজউক আপীল করে। অন্যদিকে আমমোক্তারনামা সঠিক নয় এই অভিযোগে দুদক একটি মামলা দায়ের করে। ২০১৪ সালের ১৪ জুন এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেন বিচারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে তাদের আবেদন ২০১৬ সালের ২৩ জুন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল করেন মওদুদ আহমদ। আদালতের রায়ের ভিত্তিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের গুলশানে-২-এর ১৫৯ নম্বর বাড়ি দখলমুক্ত করতে বুধবার দুপুর থেকে অভিযান শুরু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় মওদুদ আহমদ বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন সাংবাদিকরা। বেলা ৩টার দিকে ব্যারিস্টার মওদুদও গুলশানের বাড়িতে আসেন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ বাড়ি উচ্ছেদ বেআইনী মন্তব্য করে বলেন, ৩৬ বছর ধরে আমি এই বাড়িতে আছি। আমি এখন নিরুপায়, রাজনীতি না করলে এ অবস্থা হতো না। ব্যারিস্টার মওদুদ আরও বলেন, বিনা নোটিসে বাড়ি উচ্ছেদ আইনের অপব্যবহার এবং বেআইনী। এভাবে বাড়ি উচ্ছেদ প্রতিহিংসার চরম দৃষ্টান্ত। নিশ্চয়ই আমি আইনের আশ্রয় নেব। তিনি বলেন, মূল কথা হলো আমি রাজনীতি করি। বর্তমানে বিরোধী দলে আছি বলে এই অবস্থা। বিরোধী দলে না থাকলে এমন হতো না। সরকারী দলের কেউ হলে আজকে এরকম হতো? এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের কাছে মওদুদ আহমদ পাল্টা প্রশ্ন করেন দেশে কি আইন নেই? বাড়ি উচ্ছেদ করলে কি আর করব, রাতে ফুটপাথে শুয়ে থাকবো। আমি কী করবÑ কী করার আছে? জোরের বিরুদ্ধে, বেআইনী শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের মতো নাগরিকদের করার আর কী থাকে? তিন দশক ধরে যে বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন, সেই বাড়ির ফটকের সামনে দাঁড়িয়েই তিনি এসব কথা বলেন। মওদুদ বলেন, সুপ্রীমকোর্টে যে মামলা ছিল সেটার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। তবে কোন আইন নেই যে এত দিনের মধ্যে আপনাকে বাড়ি ছাড়তে হবে? রাজউকের কাছে আদালতের কোন অর্ডার আছে? অথচ তারা একটা বাড়িতে ঢুকে গেল! আমাদের দেশে কি আইন নেই? আদালতে একটি মামলা করেছেন জানিয়ে মওদুদ বলেন, দেওয়ানি মামলা নাম্বার ৫৬১-২০২৬। সেই মামলা রাজউকের বিরুদ্ধে এবং সরকারের বিরুদ্ধে। তারা যেন কোনভাবে আমাকে ডিস্টার্ব না করে। আমার যে দখলের স্বত্ত্ব এতে যেন তারা কোন বিঘœ না করে। তাদের ওপরে সমন জারি হয়েছে, ১৯ জুলাই শুনানির তারিখ দেয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কী করে বলবেন এটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি? এটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি নয়। সুপ্রীমকোর্ট বলে দিয়েছে যে এটা সরকারী সম্পদ নয়। তিনি বলেন, তাকে বাড়ি ছাড়া করে সরকার এটাই প্রমাণ করেছে যে, দেশে আইনের শাসন নাই, দেশে কোন সভ্যতা নেই। উল্লেখ্য, গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ১৫৯ নম্বর বাড়িতে মওদুদ আহমদ বসবাস করে আসছিলেন ১৯৭২ সাল থেকে। কিন্তু বিদেশী এক নাগরিকের ফেলে যাওয়া এ বাড়ির ‘ভুয়া’ আমমোক্তারনামা তৈরি করে মওদুদের ভাইয়ের নামে ওই বাড়ির দখল নেয়া হয়েছে অভিযোগ করে দুদক মামলা করলে চার বছর আগে আইনী লড়াই শুরু হয়। ওই মামলায় মওদুদ আহমদ সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গেলেও রায় তার বিপক্ষে যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আপীলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও গত রবিবার তা খারিজ হয়ে গেলে মওদুদের বাড়ি ছাড়া অনিবার্য হয়ে পড়ে। এরপর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বুধবার দুপুরে ওই বাড়ির দখল বুঝে নিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। যদিও আপীল বিভাগের সেই রায়ের পরও মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, তিনি এই বাড়িতেই থাকবেন। উল্লেখ্য, গুলশানের বাড়ি নিয়ে করা মামলায় আপীল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) দুদকের ও মওদুদের ভাই মনজুরের পৃথক দুটি আবেদন কিছু পযবেক্ষণ দিয়ে রবিবার খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপীল বিভাগের বেঞ্চ। ৩১ মে শুনানি শেষ রায়ের জন্য রবিবার দিন ধার্য ছিল। নির্ধারিত দিনে এই রায় ঘোষণা করেন আদলত। আদালতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ নিজেই, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দীন মাহমুদ ও কামরুল হক সিদ্দিকী। অপরদিকে রাজউক ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন, এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ও এ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রায় ঘোষণার পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, দুদক ও মওদুদের ভাই এর পক্ষে করা রিভিউ খারিজ করে দিয়েছেন আপীল বিভাগ। বাড়িটি রাজউকের নামে বরাদ্দ রয়েছে। এখন আর মওদুদের বাড়িতে থাকার কোন অধিকার নেই। অন্যদিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এটা সরকারের বাড়ি নয়। আমি বাড়ি ছাড়বো না। বাড়ি ছাড়ার বিষয়টি মালিক ও আমি বুঝবো।’ দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জানান, মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে করা দুদক ও তার ভাই মনজুরের দুটি রিভিউ খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এখন বাড়ি ছাড়া না ছাড়ার বিষয়টি রাজউক ঠিক করবেন। আদালতের চূড়ান্ত রায়ের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাড়িটা বর্তমানে নিয়ে নেয়া সরকারের দায়িত্ব। মওদুদ আহমদ তার ভাইয়ের নামে বাড়িটির মূল মালিকের সঙ্গে যে চুক্তি দেখিয়েছিল সেটার মামলা আপীল বিভাগে খারিজ হয়ে গিয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছিল পাওয়ার অব এ্যাটর্নি এবং চুক্তিটা জাল-জালিয়াতির মধ্যে হয়েছে। সেটাই মওদুদ আহমদ সাহেব বলতে চান তার ভাইয়ের আইনজীবী হিসেবে, মহসিন দরবার নামে এক লোকের সঙ্গে বাড়িটি নিয়ে চুক্তি হয়েছিল, যিনি বাংলাদেশে ছিল। আমরা বলেছি মালিক ইনজে প্লাজ অস্ট্রিয়ান নাগরিক ১৯৮৫ সালের ৩০ মার্চ মারা যান। কথিত মহসিন দরবার ইনজের পক্ষে চুক্তি দেখিয়েছিল, যেটা হয়েছে একই সালের আগস্ট মাসে। তার মানে মালিক মরার ৫ মাস পরে। আর বাড়ি পাওয়ার জন্য ওনারা মামলা করেছিল ১৯৯৩ সালে। বিচারিক আদালত এবং আপীল বিভাগ রাইটলি বলেছেন, তাদের নামে নামজারি হবে না। মাহবুবে আলম বলেন, এ মামলায় মওদুদ একটি পাওয়ার অব এ্যাটর্নি দেখিয়েছিলেন যেখানে তার ভাই তাকে বাড়িটি দেখাশুনা করতে নিয়োগ দিয়েছেন। সুতরাং যেখানে তার ভাইয়েরও কোন টাইটেল নাই, অধিকার নাই তার মামলা ডিসমিস হয়ে গেছে উচ্চ আদালতে। এ বাড়িতে যে তিনি থাকবেন একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এ কথা বলা তো আমি মনে করি এর চেয়ে বড় ধৃষ্টতা আর হতে পারে না। মূল মালিকের সঙ্গে মওদুদ আহমদের বোঝাপড়ার বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, মালিক তো বিদেশী। স্বাধীনতার পরে আসেনি কোন সময়েই। এখানে ছিলই না। ওনার এ সমস্ত কথা দুঃখজনক। মূল মালিকের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে মামলায় হেরে গিয়ে এ কথা বলাও দুঃখজনক। রবিবার সুপ্রীমকোর্টের রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই বাড়িটির সঙ্গে আমার জীবন জড়িত। এই বাড়িতে বিশ্ববরেণ্য অনেক রাজনৈতিক নেতারা এসেছেন। আমার সন্তানেরা এখানে বড় হয়েছে। তাই এ বাড়িটি ছাড়ব না। সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরও কেন বাড়িটি ছাড়বেন নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিরোধী দলে থাকার কারণে সরকার এই বাড়ি ছাড়ার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। আদালতে রিভিউ খারিজ হয়েছে কিন্তু বাড়ি ছাড়ার কোন অর্ডার তো আমাকে কেউ দেয়নি। তবে অর্ডার দিলে তখন আমি আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করব। আইনের তো অনেক দিক আছে। মওদুদ আহমদ বলেন, আমি বিরোধী দলে আছি বলে আজকে এ মামলায় সাত বছর পরে আপীল করেছে সরকার। বাড়ি ছাড়তে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে তো সরকারকে স্বত্ব দেয়া হয়নি। অধিকার দেয়া হয়নি। আমরা মূল মালিকের সঙ্গে বোঝাপড়া করব। ওনার ছেলে করিম সুলায়মান আছে। আর আদালতও কিছু পর্যবেক্ষণ দেবেন। গত বছর ২ আগস্ট মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমদের নামে ওই বাড়ির নামজারির নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের আপীল গ্রহণ করেন আপীল বিভাগ। তার আগে ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট বাড়ি নিয়ে ৮০ পৃষ্ঠার আপীলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপীল বিভাগ। নিয়ম অনুযায়ী, রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করতে হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে প্রথমে মওদুদ রিভিউ করেন, পরে দুদক একটি রিভিউ করে। ২০১০ সালের ১২ আগস্ট এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গুলশানের ওই বাড়িটি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন করার জন্য রায় দেন হাইকোর্ট। রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল দায়ের করে ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ আপীল বিভাগ রাজউককে আপীলের অনুমতি দেন।
×