ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মে ও করবিনের মধ্যে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা

ব্রিটেনে নির্বাচন আজ

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ৮ জুন ২০১৭

ব্রিটেনে নির্বাচন আজ

ব্রিটেনে বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে বুধবার শেষদিনের মতো প্রচারাভিযান চলে। নির্বাচনের আগের কয়েকটি সপ্তাহ ছিল টালমাটাল। সন্ত্রাসী হামলার হুমকি সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের এজেন্ডা নতুন করে ঠিক করতে হয়েছে।- এএফপি। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ১৮ এপ্রিল আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে কিছুটা রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছিলেন। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন পরই তিনি মধ্যবর্তী নির্বাচনের ডাক দেন। প্রতিপক্ষ লেবার পার্টির সঙ্গে জনপ্রিয়তার পাল্লায় তিনি এ সময়ে দুই ডিজিট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু কনজারভেটিভ প্রধান মে’র জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অনেক পড়ে গেছে। তবে নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়েছে, ইস্যুগুলো ততই ইইউ থেকে ঘরমুখো হয়েছে। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা মে’র নিরাপত্তা রেকর্ড প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ব্রেক্সিট নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ১৯ জুন থেকে শুরু হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টির সবটুকু এবং লেবার পার্টির একটি বড় অংশের সমর্থন ব্রেক্সিট আলোচনাকারীদের পক্ষে থাকবে। এবারের নির্বাচনে কনজারভেটিভরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের প্রচার চালিয়েছে। মে কে একজন শক্তিমান নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা ছিল লক্ষ্যণীয়। মে এমন একজন নেতা যিনি ব্রাসেলসের সঙ্গে আলোচনায় ব্রিটেনের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবেন, লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এ কাজের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নন। করবিন এমন একজন নেতা যিনি এক সময় নিজ দলের মধ্যেই প্রবল বিরোধিতার মুুখোমুখি হন। তবে নির্বাচনের আগে তার দলের কর্মী সমর্থকদের কাছে তিনি বেশ ভালভাবেই ফিরে আসতে পেরেছেন। তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে প্রচুর জনসমাগম হয়। ১৮ মে কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী মেনিফেস্টো প্রকাশের পর সেটিকে পুঁজি করে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা আরও এক দফা বাড়ে। ওই ইশতেহারে প্রবীণদের কল্যাণ খাতে ব্যয় কমিয়ে দেয়ায় কনজারভেটিভ পার্টিরই অনেক সমর্থক হতাশ হন। ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলো একে ব্যঙ্গ করে ‘স্মৃতিভ্রষ্টতা কর‘ নামে অভিহিত করে। লেবার পার্টি একে মে’র বিপক্ষে নিজেদের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলার পক্ষে কাজে লাগায়। তারা এটি বলার চেষ্টা করে যে, মে মোটেই নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি নন। এ সময় মে’কে ব্যঙ্গ করে গান পর্যন্ত তৈরি হয়ে যায়। নির্বাচনী প্রচারাভিযান এতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবে সেটি মে আশা করেননি। তবে লেবার পার্টির অবস্থান যতই জোরালো হোক জনমত জরিপে শেষ সময় পর্যন্ত কনজারভেটিভ পার্টি এগিয়ে থাকে। মঙ্গলবার জরিপ পরিচালনাকারী গ্রুপ সারভেশন পরিচালিত জনমত সমীক্ষায় মে’র নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি লেবার পার্টির তুলনায় ৪১.৬ - ৪০.২ শতাংশে এগিয়ে থাকে। দুই দলের মধ্যে ব্যবধান এখন ১.২ শতাংশ। মাস খানেক আগেও ব্যবধান ছিল ২০ শতাংশ। এদিকে ব্রাসেলসে ইইউর শীর্ষ কর্মকর্তারা আশা করছেন, মে পুনর্নির্বাচিত হয়ে ফিরে আসুন। কারণ ইইউর আশঙ্কা ব্রিটেনে যিনিই নির্বাচিত হয়ে আসুন ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু হলে ওয়াকআউট করে চলে যেতে পারেন। ইইউর ব্রেক্সিট বিষয়ক প্রধান আলোচক মাইকেল বার্নিয়ার বলেছেন তিনি ব্রেক্সিট নিয়ে এখনই আলোচনা শুরু করতে রাজি আছেন। তবে তিনি সতর্ক করে দেন যে, ব্রিটেনের নতুন সরকার ইইউর সঙ্গে কোন সমঝোতা চূড়ান্ত না করেই জোট ছাড়তে পারে। অন্যদিকে মে এবং তার ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস একথার ওপর বারংবার জোর দিচ্ছেন যে খারাপ চুক্তি করার চেয়ে চুক্তি না করা বরং ভাল।
×