স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহেশখাল বাঁধ কোন কাজে আসেনি। বরং এর ফলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল বৃষ্টিতে জমে যাওয়া পানি নিষ্কাশন। বাঁধটির বিরুদ্ধে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার মানুষের ক্ষোভও রয়েছে। অবশেষে সিটি কর্পোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ একমত হয়েছে যে, এ বাঁধ অপসারণ করা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই বাঁধটি ভেঙ্গে ফেলা হবে।
চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর রিপাবলিক ক্লাবসংলগ্ন এলাকার মহেশখালে এ বাঁধ নির্মাণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ, যা চালু করা হয় ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে। খালের একপাশে ১০ ফুট চওড়া একটি ডাইভারশন নির্মাণ করে বাঁধের মধ্যে ১০টি পাইপ বসানো হয় ভাটার সময় পানি নামার জন্য। জোয়ারের সময় যেন ভেতরে পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য পাইপের মুখে লাগানো হয় গেট বাল্ব। এছাড়া খালের পাড়ে সংযোজিত হয়েছে ৫টি পাম্প। উজানে পানি আকড়ে গেলে তা অপসারণের জন্যই এ ব্যবস্থা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রবল বর্ষণে নগরীতে এতটাই পানি জমেছে যে, তা নিষ্কাশনের জন্য ওই বাঁধের পাশে রাখা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয় বলে প্রতীয়মান। এলাকাবাসীরও দাবি, বাঁধটি অপসারণ করার।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মহেশখাল বাঁধ অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ওই সভায় বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষকে আমরাই বলেছিলাম একটি ব্যবস্থা হিসেবে এ বাঁধ নির্মাণ করতে। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে তারা তা করেছেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে বাঁধ নির্মাণের ফলে ওই এলাকার একপাশ উপকৃত হলেও অপর পাশ প্লাবিত থাকছে। সে কারণে এ বাঁধ অপসারণ করা হবে। এরপর সেখানে নির্মিত হবে স্লুইসগেট।
এদিকে, পরিকল্পনায় মহেশখালের মুখে স্লুইসগেটের কথা থাকলেও এ গেটকে নির্মাণ করবে তা এখনও অনিশ্চিত। বন্দর কর্তৃপক্ষ এটি নির্মাণ করবে এমনটি চসিক মেয়র জানালেও বন্দর এ কাজে জড়াতে চায় না বলে জানা গেছে। বন্দরের দায়িত্বশীল শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, আইনগতভাবে খালের ওপর বাঁধ বা স্লুইসগেট করার কাজ বন্দরের নয়। নির্মিত বাঁধটি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ড সভায়। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।