ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চাই সবুজায়ন

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৮ জুন ২০১৭

চাই সবুজায়ন

বনানী রেল ক্রসিং হতে এয়ারপোর্ট মোড় পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে, প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতিও দৃশ্যমান হচ্ছে। সড়কের দু’ধারে সাড়ে পাঁচ লাখ গাছের চারা লাগানোর যে উদ্যোগ আয়োজন চলছে তাতে এ সড়কের রূপ বৈশিষ্ট্যই পাল্টে যাবে। বিচিত্র বৃক্ষের সবুজ সতেজ পত্র-পল্লবে ছেয়ে যাবে সড়কের দু’ধার। পথচারীরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখবে নবীন বৃক্ষের বৈচিত্র্য-বৈভব। ঢাকার হৃৎপি- বলে পরিচিত রমণীয় রমনা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও চন্দ্রিমা উদ্যানের অপরূপ সবুজ শোভা দেখতে মন যেমন আনন্দে নেচে ওঠে তেমনি বিমানবন্দর সড়কের বৃক্ষ শোভিত সবুজ বনানী দেখতেও অচিরেই নগরবাসীর মন প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে। মানুষ একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে বার বার এ জায়গায় ফিরে আসবে। বিমানবন্দর সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা প্রণয়নে সড়কের দু’পাশে ‘বনসাই’ লাগানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যে বাস্তবসম্মত এবং এর সুফল যে সুদূরপ্রসারী ও নানামাত্রিক তা বলাই বাহুল্য। বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ লাগানো হলে শুধু সড়কের শোভাই বাড়বে না, তা যেমন ছায়া দিবে তেমনি স্বস্তি এবং শান্তির জন্যও সহায়ক হবে। ব্যস্ত জীবনে এই সড়ক এবং এর প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের মনে যে আনন্দের সঞ্চার করবে তার অমূল্য বলেই ধরে নেয়া যায়। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম এই সড়কটির দেখভালের কাজ যেমন সুচারু ও সুন্দরভাবে করতে হবে, তেমনি নির্বিঘেœ ও নিরাপদে যাতে মানুষ এ মহাসড়কটি ব্যবহার করতে পারে সেদিকেই বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। সৌন্দর্যবর্ধন করা যত সহজ তার সংরক্ষণ নিশ্চিত করা তত কঠিন। এই কঠিন দায়িত্বটি সওজ যতেœর ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে তাদের প্রতি মানুষের আস্থা ও নির্ভরতা বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব এবং কর্তব্যজ্ঞান ও সচেতনতাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজনীয়। এমনিতেই ঢাকায় ব্যানার পোস্টারের ছড়াছড়ি। তাছাড়া যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার কুঅভ্যাস তো রয়েছেই। উত্তর এবং দক্ষিণের দুই উদ্যমী মেয়র ঢাকাকে একটি পরিচ্ছন্ন নগরীতে রূপ দিতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেড় কোটি মানুষের নগরী এই ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নাগরিকরা সচেতন ও দায়িত্বশীল হলে ঢাকাকে সৌন্দর্যের তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তোলা কঠিন কিছু নয়। সরকারের সহযোগিতা বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত প্রয়াস এক্ষেত্রে জরুরী। ইতোমধ্যে ধানম-ি, গুলশান, বারিধারাসহ আরও কিছু এলাকায় সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও শৃঙ্খলার দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। নিয়ম শৃঙ্খলাও ফিরে এসেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিক সুবিধা সমন্বিত যানবাহনও নামানো হয়েছে। গুলশান হাতিরঝিল এলাকায় বিশেষ বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। হাতিরঝিলের আধুনিকায়ন চোখে লাগার মতো। ছুটির দিনে তো বটেই, সকাল বিকেল ভ্রমণকারীদের প্রধান আকর্ষণ হাতিরঝিল, যা এক সময় নাগরবাসীর কল্পনার বাইরে ছিল। ঢাকাকে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর করে তুলতে হবে। সে জন্য সর্বত্র চাই সবুজায়ন। শুধু বিমানবন্দর সড়কই নয়, অন্য যে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে সে সব সড়কের ব্যাপারেও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প প্রণয়ন জরুরী। রাজধানী ঢাকাকে মানুষের বসবাস উপযোগী একটি স্বস্তি ও শান্তিদায়ক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এর প্রাকৃতিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে হবে। নিতে হবে সবুজায়নের নানামুখী কল্যাণকর উদ্যোগ। পরিবেশ সুন্দর হলে জীবন সুন্দর হবে। সুন্দর হবে আমাদের সমৃদ্ধ ভবিষ্যত।
×