ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাকিব-মুস্তাফিজ ঝলকের অপেক্ষা!

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ৮ জুন ২০১৭

সাকিব-মুস্তাফিজ ঝলকের অপেক্ষা!

বাংলাদেশ দলের সেরা অলরাউন্ডার হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। আর দলের সেরা পেসার হচ্ছেন মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু দুইজনই যেন নিষ্প্রভ হয়ে আছেন। এ দুইজন যদি নৈপুণ্য দেখাতে পারেন তাহলে কী বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানো থেকে কেউ রুখতে পারবে? তাইতো এখন সাকিব-মুস্তাফিজের ঝলকানির অপেক্ষাতেই আছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচে সাকিব ব্যাট হাতে ঝলক দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ২৯ রান করতেই এলবিডাবলিউ হয়ে যান। যদিও এ এলবিডাবলিউ নিয়ে সবার ভেতরই দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। তারপরও সাকিব ২৯ রানের বেশি যে করতে পারেননি এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে গেছেন, সেটিই সবাই মনে রাখছে। কারণ তিনি যে এখন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। একটা সময় ছিল যখন সাকিবকে বল না করালে যেন অপূর্ণতাই থেকে যেত। বাধ্যতামূলকভাবেই সাকিবকে বল করাতে হত। তিনি যে ভরসার পাত্র ছিলেন। এমনও হয়েছে প্রথম ওভারটিই সাকিবকে দিয়েই করানো হয়েছে। এখন এমন একটা সময় হয়েছে সাকিবকে দিয়ে বল করানো হয় না। ১০ ওভার পুরো বল করার সুযোগই দেয়া হয় না সাকিবকে। কিভাবে সেই সুযোগটি দেয়া হবে। সাকিব যে এখন আর সেই রকম কার্যকর বোলিং করতে পারছেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটিতে সাকিব তো বোলিংই করতে পারেননি। যদিও দলের পরিকল্পনাই ছিল যত বেশি পেসারদের দিয়ে বল করানো যায়, ততই ভাল। তাতে করে সময় যাবে। বৃষ্টি আসলে আর খেলা না হলেই তো তখন হয়ে গেল। ২০ ওভারের আগ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে ঠেকিয়ে রাখা গেলেই হলো। তাহলেই বাজিমাত হয়ে যাবে। তাই অস্ট্রেলিয়া যে ১৬ ওভার খেলেছে, ১৫ ওভারই পেসারদের দিয়ে করানো হয়েছে। একটি ওভার করেছে স্পিনাররা। তাও সাকিবকে দিয়ে করানো হয়নি। মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে একটি ওভার করানো হয়েছে। সাকিব বল করারই সুযোগ পাননি। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচসহ গত আটটি ম্যাচে তো সাকিবকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি সিরিজ থেকে সাকিব ব্যর্থই হয়ে চলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে ২৯ রান করেছেন সেটিই গত আট ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোর। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনজাতি সিরিজে জেতা ম্যাচে যে ২ উইকেট নিয়েছেন সেটিই গত আট ম্যাচে সাকিবের সেরা বোলিং। এমনই করুণ অবস্থা হয়েছে সাকিবের। এই আট ম্যাচের মধ্যে আবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনজাতি সিরিজে হারা ম্যাচটিতেই শুধু ১০ ওভার বল করানো হয়েছে সাকিবকে। আর কোন ম্যাচেই সাকিবকে দিয়ে পুরো ১০ ওভারও করানো হয়নি। সাকিবের বোলিংয়ে যে সেই ধার এখন আর নেই। সাকিব হয় ব্যাট হাতে কিছু করে দেখাতে পারবেন। নয়ত বল হাতে। যে কোন সময় যে কোন এক সাইডে সাকিব ঝলক দেখাবেন। এ বিশ্বাস সবারই আছে। কিন্তু মুস্তাফিজকে তো শুধু বোলিংয়েই নিজেকে মেলে ধরতে হবে। তাকে নিয়েও বিশ্বাস আছে। কিন্তু সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন তো এখন আর আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। তিনজাতি সিরিজে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা ম্যাচে মুস্তাফিজ ৪ উইকেট শিকার করেন। মনে হয়েছিল, আবার মুস্তাফিজ বিশ্ব কাঁপানো শুরু করবেন। কিন্তু এরপর আবার মুস্তাফিজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রান দিচ্ছেন বেশি। উইকেটও শিকার করতে পারছেন না। আসলে প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা মুস্তাফিজকে যেন বুঝে ফেলেছেন। তার ‘কাটার’গুলো বুঝে ফেলেছেন। তার বলগুলো এখন ভালভাবেই খেলতে পারেন ব্যাটসম্যানরা। মাঝে মধ্যে ভড়কে যান। তবে তাতে উইকেট মিলছে না। মুস্তাফিজের বোলিংয়েও যেন সেই ধার আর নেই। এ বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের আগে মুশফিকুর রহীম বলেছিলেন, ‘দলে মুস্তাফিজ, সাকিব থাকা মানে আমাদের বোলিং লাইনআপ আরও শক্ত হওয়া। তাদের ভাল করার সামর্থ্য রয়েছে। তাদের মোকাবিলা করা যে কোন ব্যাটসম্যানের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং।’ কিন্তু সাকিব-মুস্তাফিজ এখন যেন কিছুই করতে পারছেন না। আর তাই সাকিব-মুস্তাফিজের ঝলকানির অপেক্ষাতেই আছে সবাই।
×