ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁয়ে ক্ষোভ

উদ্বোধনের আগেই সেতুতে ফাটল

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৮ জুন ২০১৭

উদ্বোধনের আগেই সেতুতে ফাটল

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৭ জুন ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের পল্লীতে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু উদ্বোধনের আগেই ফাটলসহ নানা ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফলে এলাকার লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, ছড়িয়ে পড়ছে উত্তেজনা, শুরু হয়েছে তোলপাড়। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু-কার্লভাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বৈকণ্ঠপুর গ্রামে ভাতগাঁও কান্দর পাড়া হতে পশ্চিম বৈকণ্ঠপুর যাওয়ার রাস্তায় খালের ওপর ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজটি পায় রংপুরের স্টার কন্সট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি মাসেই নবনির্মিত সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা। কিন্তু উদ্বোধনের আগেই সেতুটিতে দেখা দিয়েছে ফাটল, খসে পড়তে শুরু করেছে পলেস্তরা এবং প্রকাশিত হচ্ছে দরপত্র অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণের কাজ না করার নানান অভিযোগ। এলাকাবাসীদের মধ্যে সইদুর, খতিবুর, ওবায়দুর, খলিলুর ও ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সেতুটি নির্মাণের নামে মোটা অঙ্কের মুনাফা লাভের আশায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকাশ্যে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে এবং দরপত্রে বর্ণিত নির্দেশনার কোন ধারধারেননি সেতুটি নির্মাণের সময় ঢালাই ও অন্য কাজে এলাকার লোকজন দরপত্রে বর্ণিত গ্রেড অনুযায়ী নির্ধারিত রড না দিয়ে কম দামী, পুরাতন ও টুকরো টুকরো রড এবং নি¤œমানের খোয়া-পাথর, বালু ব্যবহারসহ রাতের আঁধারে সেতুর ঢালাই কাজ করতে দেখেছেন। এছাড়া সেতুর বাইরের অংশে সিমেন্টের পলেস্তারের কাজ না করেই রং দিয়ে অনেক ফাটল ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে এখনই সেতুর খুঁটির একাংশে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং অনেক অংশে খসে পড়তে শুরু করেছে ঢালাই। এছাড়া সেতুর ওপর থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য যেসব পাইপ লাইন দেয়া হয়েছে তাও সঠিকভাবে স্থাপন হয়নি। অপরদিকে সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগস্থলে পাশের খাল থেকে কাদামাটি দিয়ে ভরাট করায় ইতোমধ্যে তা বসে যাওয়ায় সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্টার কন্সট্রাকশনের প্রোপাইটা শাহজাহান আলীকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জোর দিয়ে বলেন, দরপত্র অনুয়ায়ী সেতুটি নির্মাণ হয়েছে তবে নির্মাণকালে বৃষ্টি হওয়ায় সামান্য ত্রুটি হয়েছিল। এছাড়া সেতুটি ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই এলাকার লোকজন সেতুর ওপর দিয়ে পাওয়ারট্রলি নিয়ে চলাচল করেছিল। এ জন্য সেতুর একাংশে সামান্য ফাটল দেখা দিলেও তা সেতুর জন্য ক্ষতির কারণ হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন নবনির্মিত সেতটিু পরিদর্শন শেষে ফাটলসহ কিছু ত্রুটির কথা স্বীকার করে জানান, অভিজ্ঞ প্রকৌশলীর মাধ্যমে দরপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সেতুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেতু হস্তান্তর হবে। এর আগে কোন বিল পাস হবে না।
×