ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আবাহনীর দশম শিরোপা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৭ জুন ২০১৭

ঢাকা আবাহনীর দশম শিরোপা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবল ফাইনালের আগে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়নি দল। আগের দিন এমন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এমন অভিযোগ করেছিলেন দ্রাগো মামিচ। অথচ পরের দিন ফাইনালে কিনা তার দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেডই অনায়াসে জিতে নিল ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ’-এর শিরোপা! চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে তারা বীরদর্পে হারালো ৩-১ গোলে। বিজয়ী দলের হয়ে একটি করে গোল করেন নাবিব নেওয়াজ জীবন, ইমন মাহমুদ এবং এমেকা ডার্লিংটন। বিজিত দলের একমাত্র গোলটি এ্যালিসন উদুকার। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রাতের ‘অল-আবাহনী’ ফাইনালে (এটা ছিল আসরের ২৯তম ফাইনাল) বিজয়ী দল ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। আবাহনীকে এই প্রথম কোন শিরোপা জেতালেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ মামিচ। পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন গতবার এই আসরে আবাহনীকে শিরোপা জেতানো কোচ অস্ট্রিয়ার জর্জ কোটানকে। মঙ্গলবারের জয়ে গত আসরের শিরোপা ধরে রাখলো ঢাকা আবাহনী। এটা তাদের দশম শিরোপা (অষ্টাদশ ফাইনাল, রানার্সআপ ছয় বার, ১৯৮৪ সালের ফাইনাল পরিত্যক্ত, প্রতিপক্ষ মোহামেডান)। যা সর্বাধিক শিরোপাধারী মোহামেডানের সমান। গত মৌসুমের লিগ, ফেডারেশন কাপ এবং সদ্যসমাপ্ত ফেডারেশন কাপ মিলে টানা ৩১ ম্যাচে অপরাজিত আছে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’রা। পক্ষান্তরে চট্টগ্রাম আবাহনী তাদের ক্লাব ইতিহাসে এবারই প্রথম এ আসরের ফাইনালে খেলছে। সেক্ষেত্রে ফাইনালে জিতলে তারা প্রথমবারের মতো এ আসরের শিরোপা জিততে পারতো। এএফসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রিমিয়ার লীগ নয়, এখন থেকে এএফসি কাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রতিটি দেশের ক্লাবকে জিততে হবে নিজ দেশের ফেডারেশন কাপের শিরোপা। সে অনুযায়ী মঙ্গলবারের ফাইনাল জিতে ঢাকা আবাহনী গতবারের মতো এবারও এএফসি কাপে কোয়ালিফাই করলো। বিজয়ী ঢাকা আবাহনী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের অপারেটিভ ডিরেক্টর (হেড অব স্পোর্টস এ্যান্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, সদস্য অমিত খান শুভ্র প্রমুখ। এই আসরে অংশগ্রহণ বাবদ ২ লাখ টাকা করে পায় ক্লাবগুলো। চ্যাম্পিয়ন দল পায় ৬ লাখ টাকা এবং রানার্সআপ দল পায় ৪ লাখ টাকা। ফেয়ার প্লে ট্রফি পায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। এছাড়া ওয়ালটনের পক্ষ থেকে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় (ইমন মাহমুদ, ঢাকা আবাহনী), ম্যান অব দ্য ফাইনাল (নাবিব নেওয়াজ জীবন, ঢাকা আবাহনী) এবং সর্বোচ্চ গোলদাতাকে (এমেকা ডার্লিংটন, ৩টি, ঢাকা আবাহনী) বড় এবং ভালোমানের ১টি করে রেফ্রিজারেটর দেয়া হয়। ফুটবলপ্রেমীরা ধারণা করেছিলেন ক্লান্ত ঢাকা আবাহনীকে বাগে পেয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে নেবে বন্দরনগরীর দলটি। কিন্তু মাঠে নেমে ঢাকার দলটি এমন আক্রমণাতœক খেলা উপহার দেয়, মনে হয়েছে ক্লান্তি নয়, বরং বাড়তি শক্তিতে উজ্জীবিত হয়েই খেলেছে তারা। চট্টগ্রামের দলটি মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণ করে খেললেও তাদের ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতা এবং ঢাকা আবাহনীর রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় একটির বেশি গোল করতে পারেনি। প্রথমার্ধে প্রায় সমানতালে খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে তাদের খেলা ছিল ছণœছাড়া এবং হতাশা জাগানিয়া। গত ফেডারেশন কাপে দুই আবাহনী মুখোমুখি না হলেও হয়েছিল স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে। সে ম্যাচে ২-০ গোলে ঢাকাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল চট্টগ্রাম। এছাড়া গত প্রিমিয়ার লিগের প্রথম সাক্ষাতে দু’দল ড্র করেছিল ১-১ গোলে। ফিরতি মোকাবেলায় অবশ্য ২-১ গোলে জিতেছিল ঢাকা আবাহনীই। আবাহনী হচ্ছে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। গ্রুপে ১-১ গোলে ড্র করে সাইফ স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে। এছাড়া ১-০ গোলে হারায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে। কোয়ার্টারে তারা ২-১ গোলে হারায় ব্রাদার্সকে। সেমিতে শেখ জামালকে হারায় ১-০ গোলে। চট্টগ্রাম আবাহনী শেষ চারে এসেছে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে। নিজেদের গ্রুপ ম্যাচে তারা হারায় ২-১ গোলে মোহামেডান এবং ২-১ গোলে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে। কোয়ার্টারে টাইব্রেকারে ৪-২ (১-১) গোলে হারায় শেখ রাসেলকে। সেমিতে ১-০ গোলে হারায় রহতমতগঞ্জকে।
×