ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের বুকিং প্রক্রিয়া শুরু

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৭ জুন ২০১৭

প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের বুকিং প্রক্রিয়া শুরু

বিভাষ বাড়ৈ ॥ কলেজে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীর নিশ্চয়ন বা বুকিং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে আজ ও আগামীকাল স্ব স্ব কলেজ নিশ্চয়ন করতে পারবে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৮ শিক্ষার্থী। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তার ভর্তি নিশ্চিত করতে হলে নিশ্চয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই হবে। এক্ষেত্রে টেলিটক, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রকেট ও শিওর ক্যাশের মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৮৫ টাকা দিয়ে ভর্তি নিশ্চয়ন বা নিশ্চিত করতে হবে। আবেদনের সকল প্রক্রিয়া ও নির্দেশনা স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ড ও ভর্তির ওয়েবসাইটে () প্রকাশ করা হয়েছে। কলেজ ভর্তির কার্যক্রম তদারকি করছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীন। তিনি বলছিলেন, প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়ন শুরু হয়েছে। আগে কলেজ করতে পারলেও এবার শিক্ষার্থীকেই এ কাজ করতে হবে। এর ফলে আগের মতো শিক্ষার্থীকে জোর করে কেউ ভর্তি করিয়ে হয়রানি করতে পারবে না। তিনি জানান, ৮ জুন নিশ্চয়ন শেষ হলে ৯ ও ১০ জুন মাইগ্রেশনের জন্য আবেদন চলবে। এ সময় যারা পছন্দমতো কলেজ পাননি তারা ছাড়াও যারা কোন কলেজ পাননি তারাও আবেদন করতে পারবেন। একজন শিক্ষার্থী একটি কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হওয়ার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (প্রথম মেধাতালিকার জন্য ৮ জুন) বোর্ডের ফি বাবদ ১৮৫ টাকা প্রদান করে ভর্তি নিশ্চয়ন করতে ব্যর্থ হলে তার মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে। পাশাপাশি তার আবেদনটিও বাতিল হয়ে যাবে। তাই মনোনীত হওয়ার পর ভর্তি নিশ্চয়নের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এটি কেবল প্রথম মেধাতালিকায় স্থান পাওয়াদের ক্ষেত্রেই নয়, সকল মেধাতালিকায় স্থান পাওয়াদের এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন ফি প্রদানের প্রক্রিয়া টেলিটক : টেলিটক মোবাইলের (প্রি-পেইড) এসএমএসের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষার বোর্ড, পাসের সন (২০১৭), রোল নম্বর ও আবেদনের সময় পাওয়া সিকিউরিটি কোড প্রয়োজন হবে। টেলিটক থেকে ফি পরিশোধকালে অন্তত ২০০ টাকা ব্যালান্স থাকতে হবে। প্রথম ধাপের ফি প্রদানের জন্য মেসেজ অপশনে গিয়ে ঈঅউ (ংঢ়ধপব) ইড়ধৎফ (ংঢ়ধপব) জড়ষষ (ংঢ়ধপব) ণবধৎ (ংঢ়ধপব) ঝবপঁৎরঃু ঈড়ফব লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে হবে। বোর্ডের স্থলে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর (ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ক্ষেত্রে উঐঅ) লিখতে হবে। পাসের সনে ২০১৭ এবং সিকিউরিটি কোডের ক্ষেত্রে আবেদনের সময় মোবাইলে পাওয়া সিকিউরিটি কোডটি দিতে হবে। দ্বিতীয় ধাপ : প্রথম মেসেজটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে ফিরতি এসএমএসে আবেদনকারীর নাম, শিক্ষা বোর্ড, পাসের সন এবং রোল নম্বরসহ রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৯৯.৮০ টাকা কেটে নেয়া হবে জানিয়ে একটি পিন কোড প্রদান করা হবে। ফি প্রদানে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে পুনরায় ঈঅউ (ংঢ়ধপব) ণঊঝ (ংঢ়ধপব) চওঘ (ংঢ়ধপব) ঈড়হঃধপঃ ঘঁসনবৎ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরটি অবশ্যই আবেদনের সময় প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটি হতে হবে। ফি সঠিকভাবে জমা হলে প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে একটি ট্রানজেকশন আইডিসহ একটি এসএমএস যাবে। ট্রানজেকশন আইডিসহ এসএমএসটি পাওয়া গেলেই ফি পরিশোধ হয়েছে মর্মে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক এর রকেট এর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ায় মোবাইলে অবশ্যই কমপক্ষে ১৮৯ টাকা ব্যালান্স থাকতে হবে। প্রথমে ৩২২ ডায়াল করতে হবে। এটি ডায়ালের পর মোবাইল স্ক্রিনে ১,২,৩ সিরিয়ালে পেমেন্ট, সেন্ড মানি, টপআপসহ বেশ কয়টি মেন্যু দেখা যাবে। সেখান থেকে পেমেন্ট অপশনের সিরিয়াল নম্বরটি (যেমন-১) সিলেক্ট করতে হবে। পেমেন্ট সিলেক্ট করলে পরবর্তী স্ক্রিনে বিল পেসহ আরেকটি অপশন দেখা যাবে। তবে সেখান থেকে বিল পে’র সিরিয়াল নম্বরটি (১ হতে পারে) সিলেক্ট করতে হবে। এরপর পরের স্ক্রিনে একটি বিলার আইডি চাওয়া হবে। সেখানে বিলার আইডি হিসেবে ৫১৫ এন্ট্রি দিতে হবে। বিলার আইডি দেয়ার পর বিল নম্বর চাওয়া হবে। বিল নম্বরের জায়গায় শিক্ষা বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর, পাসের সন হিসেবে শেষের দুই ডিজিট (১৭), রোল নম্বর ও সিকিউরিটি কোড এন্ট্রি দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্পেস দেয়ার প্রয়োজন নেই। পরবর্তী ধাপে টাকার পরিমাণ এন্ট্রি দিতে বলা হবে। যেখানে ১৮৫ এন্ট্রি দিতে হবে। টাকার পরিমাণ এন্ট্রি দেয়ার পর পরবর্তী স্ক্রিনে পিন নম্বর চাইবে। পিন নম্বরের স্থলে ওই মোবাইলের (রকেট) ডাচ-বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টের পিন নম্বরটি দিতে হবে। পিন নম্বরটি দিলে স্ক্রিনে পেমেন্ট সাকসেসফুল এসএমএস দেখা যাবে। আর পেমেন্ট সফল হলেই আবেদনের সময় শিক্ষার্থীর প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস যাবে। এই এসএমএসটি পেলেই ফি পরিশোধ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। শিওর ক্যাশসহ ফি পরিশোধের সবকটি প্রক্রিয়া ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। এদিকে প্রথম দফায় মনোনীতদের নিশ্চয়নের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে মাইগ্রেশনের আবেদন ও নতুন আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। প্রথম পর্যায়ে ভর্তি নিশ্চয়নকারীরাই কেবল অন্য কলেজে মাইগ্রেশনের জন্য আবেদন করতে পারবে। আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে দ্বিতীয় মেধা তালিকায় কাক্সিক্ষত কলেজে (মাইগ্রেশনের জন্য আবেদন করা) মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে আসন শূন্য না থাকলে মাইগ্রেশন আবেদনকারীর প্রথম মেধা তালিকায় সুযোগ পাওয়া কলেজে মনোনয়ন বহাল থাকবে। আগে আবেদন না করা বা কোন কলেজে সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা নতুন করে আবেদন করতে পারবে। ৯ ও ১০ জুন তারা এ সুযোগ পাবে। ১৩ জুন প্রকাশ করা হবে দ্বিতীয় মেধা তালিকা। ১৪ ও ১৫ জুনের মধ্যে দ্বিতীয় মেধা তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চয়ন সম্পন্ন করতে হবে। দ্বিতীয় তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চয়নের পর তৃতীয় পর্যায়ে আবেদনের সুযোগ থাকছে ১৬ ও ১৭ জুন। ১৮ জুন সর্বশেষ বা তৃতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চয়ন সম্পন্ন করতে হবে ১৯ জুনের মধ্যে। আর ২০ থেকে ২২ জুন প্রথম দফায় এবং ২৮ থেকে ২৯ জুন দ্বিতীয় দফায় ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করবে কলেজগুলো। ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই। এর আগে গত ৯ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত চলে অনলাইন ও মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া। ৩০ মে পুনঃনিরীক্ষণে ফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীরা ৩০ ও ৩১ তারিখ ভর্তির আবেদন করার সুযোগ পান। ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন মোট ১৩ লাখ ৯ হাজার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থী। সারাদেশের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে অনলাইনে ৯ লাখ ৮০ হাজার ও এসএমএস করেছেন বাকি ৩ লাখ ৫০ হাজারের কিছু বেশি। মোট আবেদনের সংখ্যা ৬২ লাখ ১৩ হাজার। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ৪ লাখ ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী। তারা আবেদন করেছেন ২২ লাখ ১০ হাজারটি। একেকজন শিক্ষার্থী সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজের অনুকূলে আবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন বলে আবেদনের সংখ্যা শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এদিকে, আসন্ন ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে ভর্তির তারিখ নির্ধারণ করায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আপত্তি তুলেছেন। তারা দ্রুত নতুন তারিখ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরির্দশক ড. আশফাকুস সালেহীন এ বিষয়ে বলেছেন, দেখা যাক এখনও সময় আছে। তবে ঈদের আগেই যে কেবল ভর্তি তা তো নয়। ঈদের পরেও ভর্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।
×