স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হারের পর যারপরনাই হতাশ পাকিস্তান গ্রেট ইমরান খান। প্রশাসনিক থেকে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম, দেশের ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। আর বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে ১২৪ রানের হারের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বর্তমান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ নিজেদের বোলিং দুর্বলাতাকেই দায়ী করেছেন, বিশেষ করে প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ের শেষ দিকটাতে। পরশু এজবাস্টনে বহুল আলোচিত ম্যাচে ৪৮ ওভারে ৩ উইকেটে ৩১৯ রানের পাহাড়সম স্কোর গড়ে ভারত। চার বার বৃষ্টির বাগড়ার পর জয়ের জন্য পাকিস্তানের সামনে ৪১ ওভারে ২৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা পুনঃনির্ধারিত হয়। কিন্তু ব্যাটিং ভরাডুবির মুখে ৩৩.৪ ওভারে সরফরাজের দল অলআউট মাত্র ১৬৪ রানে।
ইমরান খান বলেন, ‘একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমি খুব ভাল করেই জানি হার-জিত খেলারই অংশ। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে সামান্যতম লড়াই ছাড়া পাকিস্তানের এমন আত্মসমর্পণ খুবই বেদনাদায়ক।’ দুর্বার ভারত হট-ফেবারিট, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা জিততেই পারে, তাই বলে উত্তরসূরিদের হারের ধরনটাই ইমরানকে বেশি করে কষ্ট দিচ্ছে। নিজে যখন অধিনায়ক ছিলেন, এমনকি তৎপরবর্তী সময়েও তুমুল লড়াই হতো, পাকিস্তান যে এখনও ওয়ানডের হেড টু হেডে এগিয়ে, সেটি সেই সময়ের ইমরান-ওয়াসিম আকরামদের দাপটের কারণেই। অথচ এখন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দিনকে দিন একতরফা হয়ে যাচ্ছে। কষ্ট পেলেও ইমরান এটিকে দেখেন ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। তাঁর মতে যত দিন যাচ্ছে ক্রিকেট প্রতিভায় দু-দেশের মধ্যকার সমতাটা আর থাকছে না। কেবল সুষ্ঠু ক্রিকেট অবকাঠামোর অভাবেই পাকিস্তান প্রতিনিয়ত এভাবে পিছিয়ে পড়ছে।
ইমরান আরও বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেটকে পুরোপুরি ঢেলে সাজানো না হচ্ছে, তত দিন তৃণমূলে প্রতিভার প্রাচুর্য থাকলেও ভারতের সঙ্গে শক্তির ব্যবধান বাড়তেই থাকবে। আর আমরা আজকের মতো এমন হার দেখতেই থাকব। বোর্ড (পিসিবি) সভাপতিকে যদি পেশাদারির ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া না যায়, তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব নয়।’ টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তান কখনওই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখতে পারেনি। প্রথম দিকে একটু সেøা ব্যাট করলেও পরের দিকে কিন্তু দ্রুত রান তুলতে থাকেন রোহিত শর্মা- শিখর ধাওয়ানরা। ম্যাচের আগে পিচ রিপোর্ট করতে গিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছিলেন, ‘এই পিচে ঘাস নেই। বরং দেখে মনে হচ্ছে, উইকেটে রান আছে।’ সাবেক ভারত অধিনায়কের ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হয়নি। কিন্তু এমন উইকেটেও পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরাও যে সুবিধা করতে পারেননি।
ওপেনার আজহার আলী শুধু ৫০ রান করেন। বাকিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে। তাও মাত্র ৩৩। পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ খান ম্যাচ শেষে টিভিতে স্বীকার করেই নিলেন, ‘ফিল্ডিং আমাদের খুব খারাপ হয়েছে। ৪০ ওভার পর্যন্ত সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল। কিন্তু তার পরই সব গোলমাল হয়ে যায়। ওরা শেষ আট ওভারে ১ শ’র ওপর রান তুলে ম্যাচ আমাদের হাত থেকে বের করে নেয়।’ এই শেষ আট ওভারে ভারত ১০৬ রান তোলে। পাক অধিনায়ক বলেন, ‘শেষ আট ওভারে ওদের ব্যাটিংয়ের কারণেই আমরা ছন্দ হারিয়ে ফেলি।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: