ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে ৪শ’ অস্ত্রের লাইসেন্স জালিয়াত চক্রের প্রধান সামসুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৬ জুন ২০১৭

রংপুরে ৪শ’ অস্ত্রের লাইসেন্স জালিয়াত চক্রের প্রধান সামসুল

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ৫ জুন ॥ ডিসির স্বাক্ষর জাল করে যে ৪শ’ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের ঘটনায় গঠিত কমিটির তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলাটি আদালতের নির্দেশে দুদক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করায় তা গত রবিবার স্থগিত করা হয়। ওই জালিয়াত চক্রের প্রধান জেলা প্রশাসকের দফতরের লাইসেন্স শাখার অফিস সহকারী সামসুল আলম। সে দীর্ঘ দিন ধরে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার নামে সরকারী রাজস্ব আদায় করে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। দুদক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তা চেয়েছে। দুদক এ ঘটনায় জেলা প্রশসকের দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করলেও তা এখনও দুদকের হাতে পৌঁছেনি। কবেনাগাদ তা পাওয়া যাবে এ বিষয়ে দুদকের কোন কর্মকর্তা নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। দুদুক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, তিনি তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে জেলা প্রশাসকের দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়েছে এখনও পাওয়া যায়নি। জালিয়াত চক্রের প্রধান সামসুল আলমের কোন খোঁজ এখনও পায়নি দুদক। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ মামলার দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাকারিয়া। তিনি বলেন, সামসুল আলমকে গ্রেফতার করা জরুরী। তাকে পাওয়া গেলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বিষয়টি যেহেতু এখন আদালতে বিচারাধীন ও দুদক আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে তাই এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কারণ আদালতে বিচারাধীন ঘটনা নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে তদন্ত করা যায় না। এটি ‘সাব জুডিস ম্যাটার’। তিনি আরও জানান, যেহেতু প্রশাসনের নজরের বাইরে জালিয়াতি করে প্রায় ৪শ’ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে সে কারণে ওই অস্ত্রের বিপরীতে সরকারের রাজস্ব খাতে কোন টাকা জমা হয়নি। এ নিয়ে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, জালিয়াত চক্রের প্রধান রংপুর জেলা প্রশাসকের দফতরের অফিস সহকরী সামসুল আলম প্রতিটি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের সময় সরকারের রাজস্ব খাতে যে ‘লাইসেন্স ফি’ প্রদান করতে হয় তা আদায় করেছেন। এতে দেখা যায় ওই লাইসেন্স ফির নামে রাজস্ব খাতে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসকের দফতরে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের বিপরীতে যে রাজস্ব খাতে ফি নেয়া হয় তার তালিকায় দেখা যায়, রাইফেল, বন্দুক, শর্টগানের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং রিভলবার ও পিস্তলের জন্য ৩০ হাজার টাকা নেয়া হয়। ওই টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে নেয়া হয়। কিন্তু নথিপত্রে দেখা গেছে তা নেয়া হলেও ওই টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয়নি। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা সামসুল আলম নিজেই আত্মসাত করেছেন।
×