ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিল পরিশোধ করেও বিপাকে কৃষক

বরেন্দ্রর ৪শ’ সেচ পাম্পে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ৫ জুন ২০১৭

বরেন্দ্রর ৪শ’ সেচ পাম্পে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বিদ্যুত বিল না দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ৪০০ গভীর নলকূপে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুত সমিতি। এ নিয়ে বিএমডিএ ও পল্লী বিদ্যুত সমিতির দ্বন্দ্বে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। কৃষকদের অভিযোগ তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করলেও বিএমডিএ’র গাফিলতির কারণে ফেঁসেছেন তারা। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়ার নলকূপের অপারেটর কৃষক আবুল কাশেম জানান, তিনি আউশ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বীজতলার কাজ চলছে এই সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এই এলাকার পানি যেসব নলকূপ থেকে সরবরাহ করা হয় সেগুলোর কয়েকটির বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কাঁকনহাট এলাকার চাষী সাজ্জাদ জানান, তার এলাকায় সেচ বন্ধ রয়েছে। এতে চাষের পাশাপাশি পানিয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, পল্লী বিদ্যুত সমিতির বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের কোন বিল বাকি নেই। তবে তারা ‘পাওয়ার ফ্যাক্টর’ মাশুল জারি করেছে। এই মাশুল বা জরিমানা পরিশোধ না করায় সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুত সমিতি প্রতিটির পক্ষে প্রতিটি সেচ পাম্পে ক্যাপাসিটার লাগানোর নির্দেশনা ছিল। বিএমডিএ ক্যাপাসিটার লাগিয়েছে। তারপরও জরিমানা করেছে। এই বিষয়টি বিএমডিএর পর্যবেক্ষণে রয়েছে উল্লেখ করে নির্বাহী পরিচালক জানান, এরই মধ্যে পল্লী বিদ্যুত সমিতি বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছে। নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, লাইনের যে সমস্যা তা শুধু বিএমডিএর সমস্যা নয়। উভয় প্রতিষ্ঠানকেই এর সমাধান করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কৃষক সমস্যায় পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন কৃষক তেমন সমস্যায় পড়বে না। এখন সেচের তেমন প্রয়োজন নেই। এই সমস্যা সমাধানে পল্লী বিদ্যুত সমিতির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তারা আশাবাদী অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে। রাজশাহী পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এস এম মোজাম্মেল হক জানান, এই অঞ্চলের ৪০০ পাম্পের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। সরকারী সিদ্ধান্তে এটা করা হচ্ছে। কৃষক বিদ্যুত বিল আগেই পরিশোধ করেছেন। তবে বিএমডিএ’র গাফিলতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, বিল এবং জরিমানা এক সঙ্গে পরিশোধের নিয়ম থাকলেও তা মানছে না বিএমডিএ। ফলে সমস্যায় পড়ছেন কৃষকরা। বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহার দাবি এদিকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অধীনে নির্মাণাধীন দারুচিনি প্লাজা, স্বপ্নচূড়া ও সিটি সেন্টার অবিলম্বে মূল নকশায় সম্পন্ন করে ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর ও বার্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাাহারের দাবিতে নগর ভবন ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। রবিবার সকালে নগরীর গোরহাঙ্গা নিউমার্কেট মোড় এলাকা বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে নগর ভবন ঘেরাও করে সেখানেই অবস্থান কর্মসূচী ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ ঘেরাও কর্মসূচিতে নগরীর বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী ও মার্কেটে অর্থ লগ্নিকারী ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ ঘেরাও কর্মসূচী থেকে অবিলম্বে নির্মাণাধীন তিনটি বাণিজ্যিক ভবন সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের গৃহীত নকসা অনুযায়ী সম্পন্ন করে তা অর্থ লগ্নীকারী ব্যবসায়ীদের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে নগরীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদীঘির অস্তিত্ব রক্ষা, অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে ভূবন মোহনপার্ক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মুক্ত করে সৌন্দর্যবর্ধন ও বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে রাজশাহীবাসী আরো কঠোর কর্মসূচী পালন করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে নগর ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি হারুনার রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডাঃ আবদুল মান্নান, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অনীল কুমার সরকার, সাংবাদিক হাসান মিল্লাত, রিয়াজ আহমেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান প্রমুখ।
×