ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ৬শ’ পরিবার ভিজিডির চাল বঞ্চিত

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৪ জুন ২০১৭

কলাপাড়ায় ৬শ’ পরিবার ভিজিডির চাল বঞ্চিত

নজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৩ জুন ॥ দুস্থ নারীনির্ভর পরিবারের জন্য সরকারের দেয়া ধুলাসার এবং লতাচাপলী ইউনিয়নের ৫৯৫ পরিবারের পাঁচ মাসের ৮৯টন ২৫০ কেজি চাল এখনও খাদ্যগুদামে পড়ে আছে। এসব চাল জানুয়ারি মাস থেকে পাওয়ার কথা। চাল না পেয়ে অতিদরিদ্র নারী নির্ভরশীল এ পরিবারে চলছে চরম খাদ্য সঙ্কট। ধারদেনায় কাহিল পরিবারগুলোর অনেকে রোজা রাখছে কষ্ট করে। আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনা আর স্বেচ্ছাচারিতায় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী উদ্যোগ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর খাদ্য সহায়তার এ কর্মসূচী দরিদ্র পরিবারগুলোর সময়কালে কাজে আসছে না। অপরদিকে সরকার তথা আওয়ামী লীগের প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে এসব মানুষের। সংসদ, উপজেলা, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান সবাই আওয়ামী লীগের নেতা হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর জনস্বার্থে নেয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে কেন বেহাল দশা তা খতিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তৃণমূলের আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকদের। এমনকি খাদ্য সহায়তার এ চাল বিতরণ না করায় চালের দামও বেড়ে গেছে বলে এসব কর্মীর দাবি। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের। সূত্রমতে, ২০১৭-২০১৮ চক্রের দুই বছরের জন্য মাসে পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রদানের সরকারী নির্দেশনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে তিন হাজার ছয় শ’ ৮৯ দুস্থ পরিবারের জন্য চাল বরাদ্দ দেয়া রয়েছে। বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এ চাল বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। অধিকাংশ ইউনিয়নে এ চাল বিতরণে ব্যাপক গাফিলতি হয়েছে। মে মাস থেকে ১০ ইউনিয়নে (তাও কেউ তিন মাস কেউ চার মাসের) চাল বিতরণ শুরু করেছে। কিন্তু পাঁচ মাস গড়িয়ে যাচ্ছে তবুও ওই দুই ইউনিয়নে সরকার প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা মিলছে না দরিদ্র মানুষের। এখন মোটা চালের দাম অনেক বেশি। এমনকি বাজারে রয়েছে সঙ্কট। ফলে দরিদ্র মানুষগুলোর মধ্যে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা। উপজেলা খাদ্য কর্মকতা আবুল হোসেন জানান ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভিজিডির চালের ছাড়পত্র দেয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার কিংবা সচিব চাল উত্তোলন করেননি বলে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানালেন। এমনকি দুস্থ পরিবারের তালিকা ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে দাখিল করার কথা। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও ওই দুই ইউনিয়নের তালিকা এখনও তৈরি হয়নি বলে জানা গেছে। ফলে সরকারের খাদ্য সহায়তার চাল দেয়া সত্ত্বেও পরিবারগুলো এখন পর্যন্ত পায়নি। ওই দুটি ইউনিয়নে ১৬ এপ্রিল সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ অজুহাতে চাল উত্তোলন করা হয়নি বলে দায়িত্বরতদের যুক্তি। কিন্তু এর আগের কিংবা পরের চাল কেন আজ পর্যন্ত তদারকি অফিসার কিংবা ইউপি সচিবরা বিতরণ করেননি তার কোন জবাব মেলেনি। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার জানান, তালিকা যথাযথ সময় না পাওয়া প্রধান সমস্যা। এছাড়া তালিকা তৈরিতে অর্থ আদায়সহ কোন অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, যারা সরকারের এ কর্মকা- বাস্তবায়নে গড়িমসি করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×