ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য

শিক্ষা খাতে আশানুরূপ বরাদ্দ হয়নি বলে দুঃখ নেই

প্রকাশিত: ০৬:১২, ৪ জুন ২০১৭

শিক্ষা খাতে আশানুরূপ বরাদ্দ হয়নি বলে দুঃখ নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষাক্ষেত্রের জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাওয়া যায় না-এমন মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বাজেটের আকার বড় হওয়ায় অর্থ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বাজেটের শতাংশ হিসাবে বরাদ্দ কমেছে। তবে আশানুরূপ বরাদ্দ হয়নি বলে দুঃখ নেই। কারণ আমাদের দেশে আরও অনেক দরকারি খাত আছে যেখানে অর্থ বরাদ্দ দরকার। অনেক বড় প্রজেক্ট আছে যেখানে জনগণের স্বার্থেই অর্থ দরকার। আছে পদ্ম সেতুর মতো বড় খাত। শনিবার বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অফিস ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা খাতে বাজেট নিয়ে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রশিক্ষণে উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশনের (ইউআইটিআরসিই) জন্য নবনিযুক্ত ৯০ জন প্রোগ্রামার ও কম্পিউটার অপারেটর অংশ নিচ্ছেন। ব্যানবেইসের পরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন এবং কোর্সের পরিচালক এসএম মোর্শেদ বিপুল বক্তব্য রাখেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার জন্য মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ কিংবা জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ বাজেট দরকার। এটি আন্তর্জাতিক একটি স্বীকৃত দাবি। তবে আমাদের দেশের বাস্তবতাও আমাদের মানতে হবে। আমাদের অনেক প্রাধিকার খাত আছে। সররকারকে সেগুলোর জন্য বিপুর অর্থ বরাদ্দ করতে হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, গত বছর শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ১১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এ বছর তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও টাকার অঙ্কে বাজেটের আকার বড় হওয়ায় অর্থ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অর্থ দিয়েই পরিকল্পিতভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে যে শিক্ষা ব্যবস্থা দেয়া হচ্ছে তা দিয়ে আধুনিক উন্নতমানের দেশ গড়া সম্ভব নয়, দরকার বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেছেন, দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতা দেশের কাজে লাগাতে হবে। সঠিকভাবে সততার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য সবাইকে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে হবে। আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। এসডিজি, রূপকল্প-২০২১ এবং উন্নত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। ১০ দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কোর্স আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত চলবে। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দের ১৫.৬ শতাংশ রাখা হয়েছিল। শুধু শিক্ষা খাতে এ বরাদ্দ ছিল প্রায় ১১ শতাংশ, যা প্রত্যাশার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। কিন্তু এক বছর পরই আবার সে প্রত্যাশার ছন্দপতন ঘটল। আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ঠিকই সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১৬.৪ শতাংশ রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মনে হতে পারে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে। তবে শিক্ষায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটের ১০ শতাংশের মতো। চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে ১.৭৫ শতাংশ। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সামাগ্রিক শিক্ষা খাতে ৫০ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে এ বরাদ্দ চলতি বাজেটের তুলনায় এক হাজার ৪২২ কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে ৪৯ হাজার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনকূলে বরাদ্দ করা হয়েছে ২২ হাজার ২৩ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে বরাদ্দ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ২৩ হাজার ১৪১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বরাদ্দ পাঁচ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। চলতি বছরের বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৬ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা ও প্রাথমিক স্তরের জন্য ২২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
×