ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আইরিশ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভারাদকার

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৪ জুন ২০১৭

আইরিশ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভারাদকার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ নিজেদের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সমকামী প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সবচেয়ে বড় অংশীদার দল ফিনে গোয়েল পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এই ইতিহাসের খুব কাছাকাছি আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৩৮ বছর বয়সী লিও ভারাদকার। খবর বিবিসির। দলীয় নির্বাচনে তিনি আবাসন মন্ত্রী সিমন কোভেনেকে হারিয়েছেন। মধ্য ডানপন্থী এ দলের নেতা কর্মীদের প্রায় ৬০ শতাংশের ভোট লিওর বাক্সে পড়েছে। সমকামী এই রাজনীতিক দায়িত্ব নিলে তিনি আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রীও হবেন। লিও দলের সাবেক প্রধান এন্ডা কেনির স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। ১৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর চলতি বছরের মে-তে কেনি দলীয় প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও সরে দাঁড়ান তিনি। ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের তিসাহ বা প্রধানমন্ত্রী হন কেনি। তার বিদায়ের পর দলের নতুন প্রধান ঠিক করতে চলতি সপ্তাহে দেশজুড়ে ভোট করে ফিনে গোয়েল পার্টি যার ফল শুক্রবার ঘোষিত হয়। ইলেকটোরাল কলেজ সিস্টেমের এই নির্বাচনে ৬৫ শতাংশ ভোট থাকে দলটির ৭৩ জন সিনেটর ও এমইপি-র হাতে। দেশজুড়ে থাকা ২১ হাজার নিবন্ধিত সদস্যের হাতে থাকে ভোটের ২৫ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ নির্ধারিত হয় ২৩৫ জন স্থানীয় প্রতিনিধির ভোটে। ২০১৫ সালে আয়ারল্যান্ডে সমকামী বিয়ে নিয়ে গণভোটের পর লিওর সমকামী জীবনের কথা প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমানে দেশটির সামাজিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফিনে গোয়েলের নতুন এ প্রধানকে চিঠি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার আর্লেন ফস্টার। তবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার আগে লিওকে জোটের অন্যান্য শরিক দল ও স্বতন্ত্র সদস্যদের সমর্থন পেতে হবে। সমর্থন পেলে এই মাসের শেষ দিকে লিও আনুষ্ঠানিকভাবে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় লিও বলেন, দলীয় প্রধানের এই ’অসাধারণ দায়িত্ব’ পেয়ে তিনি সম্মানিত বোধ করছেন। “যখন আমার বাবা পাঁচ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আয়ারল্যান্ডে এসে নতুন ঘর বেঁধেছিলেন, তখন তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি যে একদিন তার ছেল এখানকার নেতা হয়ে বেড়ে উঠবে। আমার জয় এটাই প্রমাণ করে যে, আইরিশ রিপাবলিকে কুসংস্কারের স্থান নেই”, বলেন তিনি। একসময় চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা লিও আইরিশ নার্স ও ভারতীয় এক চিকিৎসকের সন্তান। যৌন জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রগতিশীল ইস্যু ও শ্রমিক অধিকার বিষয়ে লিওর অবস্থান নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা আছে। আয়ারল্যান্ডকে একসময় ইউরোপের সবচেয়ে রক্ষণশীল সমাজের দেশ বিবেচনা করা হতো; ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সেখানে সমকামিতা ছিল আইনত অবৈধ।
×