ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি মে

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৪ জুন ২০১৭

কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি মে

ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে থাকতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সরকারী খাতে ব্যয়, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় নিয়ে কনজারভেটিভ চাপের মুখে পড়েছে। বিবিসি ওয়ানের কোশ্চেন টাইম অনুষ্ঠানে এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বেকায়দায় পড়েন মে। গার্ডিয়ান। বিবিসির ওই অনুষ্ঠানে মে অনেক অবাঞ্ছিত প্রশ্নের সম্মুখীন হন। সরকারী সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশ্নগুলো আসে। এনএইচএসে কর্মরত একজন নার্স প্রশ্ন তোলেন অনেক পরিশ্রম করার পরও তার বেতন মাত্র ১ শতাংশ বেড়েছে। তার এই প্রশ্নে বিব্রত হন মে। তিনি স্বীকার করেন স্বাস্থ্য সেবাখাতে লোকজন অনেক পরিশ্রম করছে কিন্তু তার সরকার তাদের আর্থিক সুবিধা না বাড়িয়ে বরং সঙ্কুচিত করেছে। মে দাবি করেন আর্থিক সমস্যা সমাধানের কোন জাদুর গাছ সরকারের কাছে নেই। এনএইচএসে এ মজুরি বাড়ানো হয়েছে দাবি করলে উপস্থিত এক ব্যক্তি চিৎকার করে বলেন প্রকৃত প্রস্তাবে মজুরি ২০১০ সালে যা ছিল তার তুলনায় ১৪ শতাংশ পড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘বেতন বাড়ানো হয়েছে একথা বলা চেষ্টা করবেন না’। দর্শক সারিতে উপস্থিত আরেকজন নারী বলেন, কাজের জন্য ফিটনেস পরীক্ষায় তিনি পাস করতে করতে পারেননি কারণ তাকে তার আত্মহত্যার চেষ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা। একথা বলে তিনি কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তার এই মন্তব্যের পর মে বলেন, ‘আপনার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার জন্য আমি কোন অজুহাত দিতে যাব না।’ গত সপ্তাতে এই অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর অনেক চাপের মুখে চলতি সপ্তাহে তিনি এতে অংশ নেন। মে’র বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়েন। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে দর্শকরা তাকে নাজেহাল করেন। হুমকির মুখে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে চান কি না এরকম প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি মনে করি ইচ্ছা হলেই বিশ্বের যে কেউ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার ধারণাটি বিপজ্জনক ও ভয়ঙ্কর। সে রকম কিছু হলে লাখ লাখ মানুষ, জীবজন্তু ও বসতি ধ্বংস হবে। কেউ যেন এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ না পায় সেটি আমি নিশ্চিত করতে চাই। দর্শকদের মুখে করবিন স্বীকার করতে বাধ্য হন যে প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না। কূটনৈতিক সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে শেষ পদক্ষেপ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটিই গ্রহ। এখানে সবাইকে নিয়ে আমাদের বাস করতে হবে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে গ্রহটি ধ্বংস করে ফেলা উচিত হবে না।’ মাত্র একজন নারী দর্শক করবিনের অবস্থান সমর্থন করেন। ওই নারী বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে লাখ লাখ মানুষ মেরে ফেলার ধারণাটি কোনমতেই সমর্থন করা যায় না। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে, এ ধারণা মেনে না নিলে পরমাণু অস্ত্র রাখার কোন মানে হয় না। জেরেমি করবিনের মনস্তত্ব, তার রাজনীতি ও অনভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে আমি চিন্তিত। এ রকম মানুষ কেবল পরমাণু অস্ত্রই নয় ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনায়ও সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। সবশেষে করবিন ঘোষণা দেন তিনি প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিতে চান। তার এই ঘোষণার পর দর্শকরা করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। অনুষ্ঠানে মে মূলত ব্রেক্সিট ইস্যু এবং বিরোধিতা লেবার পার্টির নেতৃত্বের দিকেই বেশি মনোযোগ দেন।
×